পূর্ব বিরোধের জের : গাংনীর ধলায় ছুরিকাঘাতে খুন

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধলা গ্রামের হাসিবুল ইসলামকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়েছে। গতরাত সাড়ে ৯টার দিকে গ্রামের একটি মুদি দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পুর্ব বিরোধের জের ধরে একই গ্রামের মিনারুল ইসলাম কালু হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে জানায় নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা। নিহত হাসিবুল ইসলাম ধলা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতরাতে গ্রামের আলা উদ্দীনের মুদি দোকানে গ্রামের কয়েকজনের সাথে ক্যারামবোর্ড খেলছিলেন হাসিবুল ইসলাম। খেলাস্থলের চারদিকে তখন বেশ লোকজনও ছিলো। খেলার এক পর্যায়ে একই গ্রামের বরকত আলীর ছেলে কালু মিয়া এসে হাসিবুলের পেছনে দাঁড়ায়। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই একটি ধারালো চাকু দিয়ে হাসিবুলের পিঠে বেশ কয়েকটি আঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হাসিবুলকে দ্রুত নেয়া হয় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলাউদ্দীন আল আজাদ তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আঘাতের বিষয়ে ওই চিকিৎসক জানান, হাসিবুলের পিঠে কয়েটি স্থানে আঘাতের জখম দেখা গেছে। পিঠ ফুঁড়ে ফুঁসফুসে আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলেই বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে। এদিকে খবর পেয়ে গাংনী থানা ও ধলা পুলিশ ক্যাম্পের একাধিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক কালুকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
কালুর স্ত্রীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামের একটি মাদরাসা প্রাঙ্গণে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। কালুসহ গ্রামের অনেকেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। হাসিবুল এ সুযোগে কালুর বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে বলে স্ত্রী কালুকে জানায়। এর প্রতিশোধ নিতে গতরাতে পুর্ব পরিকল্পিতভাবে হাসিবুলকে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন গ্রামের অনেকেই।
এদিকে হাসিবুলের মৃত্যুর খবরে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পিতা-মাতার পাশাপাশি স্ত্রী ও সন্তান যেন বাকরুদ্ধ। নিহতের পরিবারের দাবি, পুর্ব শত্রুতার জেরে কালু তাকে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডে ইন্ধন জুগিয়েছে গ্রামের বেশ কয়েকজন চিহ্নিত ব্যক্তি। ঘটনার পর তাদেরকে লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে। হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানায় নিহতের পরিবার। গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকরাম হোসেন জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালমর্গে রাখা হয়েছে। আজ ময়ানাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি ও তদন্ত চলছে। ঘটনার পর থেকেই কালুকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নিহতের পারিবারিক পরিবার: ধলা গ্রামের কৃষক আব্দুস সাত্তারের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে নিহত হাসিবুল বড়। বছর পাঁচেক আগে তিনি মেহেরপুর শহরে বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তিনি এক পুত্রসন্তানের জনক। একমাত্র ছেলে হারিয়ে মা শাহানারা এখন পাগলপ্রায়। আর স্বামীকে হারিয়ে নির্বাক স্ত্রী।