পুলিশের চোখ ফাঁকি : চুয়াডাঙ্গার কোর্টকাস্টডি থেকে পালিয়েছে আসামি!

 

 

স্টাফ রিপোর্টার:চুয়াডাঙ্গায় জেলা জজ আদালত চত্বরের হাজতখানা থেকে শাহীন (২০) নামের এক আসামি পালিয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে হাজতখানার শৌচাগারের লোহার রড কেটে পালিয়েছে বলে পুলিশ মন্তব্য করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ওইদিন বিষয়টি গোপন রাখা হলেও গতকাল বুধবার সকালে তা জানাজানি হয়। সে একটি চুরি ও হত্যা অপচেষ্টা মামলার আসামি হিসেবে ৯ মাস জেলহাজতে ছিলো।

এদিকে খবর পেয়ে গতকাল বুধবার বেলা ১০টায় জেলা ও দায়রা জজ বিপ্লব গোস্বামী, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ পারভীন, যুগ্মজেলা ও দায়রা জজ- ১ ইয়ারব হোসেন ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

কোর্ট ইন্সপেক্টর ফারুক হোসেন জানান, এটিএসআই ইসাহকের নেতৃত্বে চারজন পুলিশ সদস্য হাজতখানার দায়িত্বে ছিলেন। ওইদিন দুপুর আনুমানিক দেড়টার দিকে হাজতখানার শৌচাগারের রড কেটে আসামি শাহীন পালিয়ে যায়। ওইদিন আদালতে ধার্য দিন ছিলো। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জিআর ৩৪৮/ ১৩ নং মামলায় ৯ মাস ধরে চুরি ও হত্যা অপচেষ্টা মামলায় শাহীন চুয়াডাঙ্গা জেলা হাজতে বন্দিছিলো। যার ধারা নং ৩৮০/৫১১/১০৯দ.বি.। এরপর আসামিকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে মঙ্গলবার রাতে এটিএসআই ইসাহক বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বলা হয়েছে, শাহীন হাজতখানার শৌচাগারে ঢুকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও না বেরোনোই দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকে শাহীনকে আর পাওয়া যায়নি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ আদালতের প্রত্যক্ষদর্শী এক কর্মচারী জানান, দুপুরের দিকে হাজতখানার পেছনে ওই আসামি এমনভাবে দাঁড়িয়েছিলো মনে হচ্ছিলো সে মোবাইলফোনে কথা বলছে। এরপরই সে দৌঁড়ে পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়।

চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সালেহ উদ্দিন জানান, এ ব্যাপারে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।চুয়াডাঙ্গা সদর থানারভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুন্সী আসাদুজ্জামান জানান, গত ১৬ অক্টোবরসন্ধ্যারাতে চুয়াডাঙ্গা শহরস্থ এতিমখানাপাড়ার রেজাউল হকের বাড়িতে সদরউপজেলার ডিঙ্গেদহ ক্যাম্পপাড়ার মৃত আক্তার আলীর ছেলে মোহাম্মদ শাহীন চুরিকরতে ঢোকে।এ সময় রেজাউল হক তাকে হাতেনাতে ধরে ফেললে মোহাম্মদ শাহীন তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রেজাউলকে হত্যা করার চেষ্টা করে।রেজাউলেরচিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে মোহাম্মদ শাহীনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এঘটনায় মোহাম্মদ শাহীনের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা ও চুরির অভিযোগে চুয়াডাঙ্গাসদর থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় দীর্ঘ ৯ মাস জেলহাজতে আটক ছিলো মোহাম্মদশাহীন। মামলাটি সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে বিচারাধীন।গত মঙ্গলবার ওই মামলার ধার্য দিনে জেলা কারাগার থেকে মোহাম্মদ শাহীনকে হাজিরার জন্য আদালতে নেয়া হয়।অন্যআসামিদের সাথে তাকেও আদালতের হাজতকক্ষে রাখা হয়। মোহাম্মদ শাহীনহাজতখানার টয়লেটে ঢুকে দীর্ঘসময় বের হয়ে না এলে পুলিশের সন্দেহ হয়। পরেটয়লেটে ঢুকে দেখা যায় সেখানকার ভেন্টিলেটারের রড কেটে পালিয়ে গেছে সে।