পল্লী বিদ্যুতের আওতাভুক্ত হচ্ছে খবরে ফুঁসছে ওজোপাডিকোর বহু গ্রাহক

 

চুয়াডাঙ্গায় একাধিক মামলার পর বৃহত্তর আন্দোলনের লক্ষ্যে সংগঠিত করার প্রস্তুতি  

কামরুজ্জামান বেল্টু: চুয়াডাঙ্গা সদর ও দামুড়হুদা উপজেলার মোট ১৮টি গ্রামের বিদ্যুত ওজোপাডিকো থেকে পল্লি বিদ্যুতের আওতায় নেয়ার ঘোষণায় ক্ষোভে বারুদের মতো ফুঁসছে সংশ্লিষ্ট গ্রাহক সাধারণ। ইতোমধ্যে কয়েকটি এলাকার একাধিক গ্রাহক পল্লি বিদ্যুতের আওতাভুক্ত যাতে না হয় সে লক্ষ্যে আদেশ চেয়ে আদালতে মামলাও করেছেন। কয়েকটি গ্রামের মানুষ রাস্তায় নেমে আন্দোলনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গায়-মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির আওতায় প্রায় ১৫ হাজার গ্রাহক রয়েছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় সমন্বয় (বিদ্যুত)-২ এর সচিব মো. মফিজুর রহমান এক আদেশ বলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর ও দামুড়হুদা উপজেলার ১৮টি গ্রামের ১১১ কিলোমিটার এলাকার ওজোপাডিকোর গ্রাহক পল্লী বিদ্যুতের আওতায় নেয়ার কথা জানান। বিষয়টি জানাজানি হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিদ্যুত গ্রাহক সাধারণ ক্ষুব্ধ হয়ে তাতে আপত্তি জানান। মৌখিক এ আপত্তি কে শুনলো কে শুনলো না, তা বুঝতে না পেরে কয়েকজন গ্রহক অন্য গ্রাহকদের পক্ষে আদালতে মামলা করেন। আরও কিছু মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট এলাকার অনেকেই জানিয়ে বলেছেন, শুধু মামলা নয়, প্রয়োজনে গণ আন্দোলনও গড়ে তোলা হবে। তবুও আমরা পিডিবি বা ওজোপাডিকোর আওতা থেকে পল্লিবিদ্যুতের আওতায় যাবো না।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের জাফরপুর, গাড়াবাড়িয়া, হায়দরপুর, ডিঙ্গেদহ, মানিকদিহি, জালশুকার একাংশ. সুবদিয়া, সরোজগঞ্জ, মালিপুকুর, শাহপুর, বোয়ালিয়া, পাঁচমাইল, দামুড়হুদার উজিরপুর, উজিরপুর বটতলা, দুধপাথিলাসহ কয়েক হাজার গ্রাহককে ওজোপাডিকো থেকে পল্লিবিদ্যুতের আওতাভুক্ত করা হচ্ছে। এখবর মাস খানেক ধরেই এলাকায় চাওর হয়েছে। একই সাথে বেড়েছে ক্ষোভ। দিন যতোই যাচ্ছে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ ততোই তেতে ওঠা বারুদে রূপান্তর হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট এলাকার সচেতন মহল এরকমই আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, পল্লী বিদ্যুতের আওতায় গেলে বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়ে যায়। কিনে দেয়া বিদ্যুতের দামও কৌশলে আদায় করে বেশি। তাছাড়া ট্রান্সমিটার থেকে শুরু করে নানা ধকল গ্রাহকদেরই সামলাতে হয়। পল্লী বিদ্যুত সমিতির মাঠ পর্যায়ে কর্মরতদের দুর্নীতির বলিও হতে হয় গ্রাহক সাধারণকে। তাছাড়া যেসব এলাকায় তিন মেগাওয়াটের কম বিদ্যুত ব্যবহার হয় সে এলাকা পর্যায়ক্রমে পল্লি বিদ্যুতের আওতায় দেয়া হবে বলেও জানা গেছে। এর প্রেক্ষিতে দামুড়হুদা উজিরপুর ও দুধপাথিলা এলাকার বিদ্যুত গ্রহাকদের অনেকেই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, এ এলাকার কোনো টিউবওয়েলের পানি পানের উপযোগী নেই। মাত্রারিক্ত আর্সেনিক। ২০০৪ সালে ১ কোটি ২৪ রাখ টাকা ব্যায়ে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। ওজোপাডিকোর বিদ্যুত নিয়েই এই নলকূপের পানি তুলে গ্রাম জুড়ে ট্যাপলাইন দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্প সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য ২১ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। এ কমিটি বলেছে, দিব্যি আমাদের ৩ মেগওয়াট বিদ্যুত খরচ হয়। অথচ আমাদের পল্লী বিদ্যুতের আওতায় দেয়া হচ্ছে। আমরা আপত্তি তুলেছি। আপত্তি অগ্রহ্য করলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।

পক্ষান্তরে পল্লী বিদ্যুত সমিতির তরফে বলা হচ্ছে, সব কিছুই বিধি বিধান মেনেই করা হচ্ছে।