ন্যায়প্রতিষ্ঠা প্রয়াসী পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান প্রশংসিত

 

স্টাফ রিপোর্টার: নীলফামারী কিশোরগঞ্জের কৃতিসন্তান রশীদুল হাসান চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার পদে যোগদান করেন ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর। তিনি আজ ৫ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গার দায়িত্বভার হস্তান্তর শেষে নতুন কর্মস্থল জয়পুরহাটের উদ্দেশে রওনা হবেন। সেখানে পৌঁছেই তিনি নতুন জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।

পুলিশ সুপার হিসেবে দীর্ঘ ৩ বছর দায়িত্বপালনকালে রশীদুল হাসান চুয়াডাঙ্গাবাসীর আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়ান। সরকারি চাকরির বিধি মেনে বদলি হতেই হয়। বদলির খবর পাওয়ার পর থেকেই তাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় সংবর্ধনায় শুধু নয়, জেলার আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে অনন্য অবদানের জন্য সম্মাননাও প্রদান করা হয়। গতকাল চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিট যৌথভাবে সম্মাননা প্রদান করে। চুয়াডাঙ্গা জেলার আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে অনন্য অবদানের জন্য প্রেসক্লাবের দাতা সদস্য পুলিশ সুপার রশীদুল হাসানকে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে অনেকেই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। শুক্রবার সকাল ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সম্মাননা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাব সভাপতি আজাদ মালিতা। প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব ও শিক্ষা, আইসিটি) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিট সভাপতি প্রবীণ শিক্ষক মাহতাব উদ্দীন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, আদর্শ সরকারি মাহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এসএম ইস্রাফিল। বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের দাতা সদস্য জাসদ নেতা তৌহিদ হোসেন, দৈনিক মাথাভাঙ্গা সম্পাদক প্রেসক্লাবের সাবেক সেক্রেটারি সরদার আল আমিন, প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য সাবেক সেক্রেটারি রাজীব হাসান কচি, অর্থবিষয়ক সম্পাদক অতিয়ার রহমানসহ স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলী।  প্রেসক্লাবের পক্ষে অতিথিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। সংবর্ধিত অতিথিকে ক্রেস্টপ্রদানের পাশাপাশি ও উৎপলি পরিয়ে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির দৃষ্টি আকর্ষণ করে পুলিশ সুপার রশীদুল হাসানের নামকরণে একটি সড়কের নাম রাখার প্রস্তাব করেন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক শেখ সেলিম।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিশেষ অতিথিসহ বক্তাদের সকলেই পুলিশ সুপার রশীদুল হাসানের সততা ও কর্তব্যের প্রতি আন্তরিকতার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, তিনি পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই জেলার আইনশৃঙ্খলার সার্বিক উন্নয়নের সর্বাত্মক চেষ্টাই শুধু করেননি, তিনি ন্যায়প্রতিষ্ঠায় যে অবদান রেখেছেন তা নিশ্চয় চুয়াডাঙ্গাবাসী মনে রাখবে চিরকাল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু বলেন, রশীদুল হাসানকে চুয়াডাঙ্গায় থাকার জন্য স্বয়ং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যন্ত বলেছিলেন। পুলিশ সুপার তার নিজ জেলার পাশের জেলা পছন্দ করে নিয়েছেন শুধুমাত্র নিজের পিতা-মাতাকে একটু কাছে পাওয়ার আশায়। যে সন্তান তার পিতা-মাতার জন্য নিজ জেলার পাশের জেলা পছন্দ করেন তাকে কোন শক্তি দিয়ে আটকে রাখা যায় বলুন?

বিদায়ী পুলিশ সুপার প্রেসক্লাবের সম্মাননা গ্রহণ অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গাবাসীর প্রমিত বাংলা ভাষায় কথা বলার বিষয়টিকেই শুধু ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেননি, তিনি বলেছেন, চুয়াডাঙ্গার মানুষ ন্যায়প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক। আমি চেষ্টা করেছি। পুলিশি সীমাবদ্ধতার মধ্যদিয়ে সকলের সাথে সম্মিলিতভাবে ভালো কাজ করার প্রয়াস আমাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে। যেখানেই থাকি না কেন, চুয়াডাঙ্গার কথা মনে থাকবে। যেখানেই থাকি চুয়াডাঙ্গার কল্যাণে কিছু করতে পারলে যেমন ভালো লাগবে, তেমনই চুয়াডাঙ্গা ভালো আছে শুনলেও স্বস্তি পাবো আমি।

অপরদিকে চুয়াডাঙ্গায় বিদায়ী পুলিশ সুপার রশীদুল হাসানকে বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছে চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত সাংবাদিকদের একাংশের সংগঠন জেলা প্রেসক্লাব ও বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গার একাংশ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর সাংবাদিক সমিতির হলরুমে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জেড আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংবাদিক সমিতির একাংশের সভাপতি মানিক আকবর প্রমুখ।

উল্লেখ্য, পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান আজ চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেনের নিকট দায়িত্বভার হস্তান্তর করছেন। নতুন পুলিশ সুপার আগামী ২০ নভেম্বর নাগাদ দায়িত্বভার গ্রহণ করতে পারেন।