নিয়ম ভেঙে গাংনীতে বিনামূল্যে সেচ সংযোগে ট্রান্সফরমার স্থাপন : নেপথ্যে আরিফ 

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার রামনগর গ্রামে সেচ সংযোগের দুটি ট্রান্সফরমার বিনামূল্যে স্থাপন করা হয়েছে। আরইবি চেয়ারম্যানের নাম ভাঙিয়ে আরিফুল ইসলাম নামের এক সেনা সদস্য ট্রান্সফরমার দুটি স্থাপন করিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। শুধু ট্রান্সফরমার স্থাপনই নয় চেয়ারম্যানের নাম ভাঙিয়ে পল্লী বিদ্যুতের দালালিরও অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, রামনগর গ্রামের ইমদাদুল হকের ছেলে আরিফুল ইসলাম সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে কর্মরত। বছর খানেক আগে থেকে তিনি ছুটিতে বাড়ি এসে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ গ্রহণের জন্য মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত কার্যালয়ে ধরনা দেয়া শুরু করেন। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চেয়ারম্যানের (সেনা কর্মকর্তা) সাথে তিনি চাকরি করেছেন দাবি করে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন। রামনগর গ্রামে নিজ নামে দুটি সেচ সংযোগের জন্য আবেদন করেন। চেয়ারম্যানের নাম ভাঙিয়ে তিনি বিনামূল্যে ট্রান্সফরমারও দাবি করেন। পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ তার সংযোগ স্থাপন করতে বাধ্য হয়। এতে দুটি  ৫ কেভিএ ট্রান্সফরমার লাগানো হলেও তার মূল্য পরিশোধ করতে হয়নি আরিফের। যা পল্লী বিদ্যুতের নিয়ম-নীতির চরম লঙ্ঘন। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে স্থাপিত সব ধরনের সেচ সংযোগের ট্রান্সফরমারের মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে গ্রাহকদের। বিনামূল্যে সেচ সংযোগে ট্রান্সফরমার স্থাপনের সুযোগ নেই। কিন্তু আরিফ পেয়েছেন বিনামূল্যে। তবে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে পল্লী বিদ্যুতের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, আরইবি চেয়ারম্যানের ভয় দেখিয়ে আরিফ এ কাজ করতে বাধ্য করেছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দালালীর অভিযোগ করেন তারা। এলাকায় খোঁজ নিয়ে মিলেছে দালালির সত্যতা।

পল্লী বিদ্যুৎ সূত্রে জানা গেছে, আরিফুল ইসলাম এলাকার কয়েকটি আবাসিক সংযোগও স্থাপন করতে বাধ্য করেছেন। তার ভয়ে ওই সময় সব কর্মকর্তা জড়োসড়ো হয়ে থাকতেন। আরিফের কথামতো বেশ কয়েকটি আবাসিক সংযোগের মিটার স্থাপন করা হয়েছে। অথচ ওই সময় সাধারণ গ্রাহকরা আবেদনের এক থেকে দুই বছর পর মিটার পেয়েছিলেন। শুধুমাত্র আরিফের মিটারগুলো দ্রুত স্থাপন করা হয়েছিলো। এতে নতুন আবেদনকৃত গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। পল্লী বিদ্যুত কর্মকর্তাদের ওপর আরইবি চেয়ারম্যানের নাম ভাঙিয়ে সুবিধা আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করেন ওই সময়ে গাংনী জোনাল অফিসে কর্মরত কয়েকজন।

এদিকে বেশ কিছুদিন আরিফ চুপ থাকলেও সম্প্রতি আবারো পল্লী বিদ্যুতের কাজ নিয়ে তিনি সক্রিয়। এলাকার কয়েকটি আবাসিক ও সেচ সংযোগ স্থাপনের জন্য পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের চাপের মধ্যে রেখেছেন আরিফ। তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি নিজের কয়েকটি সংযোগের জন্য এক সময় পল্লী বিদ্যুতে গিয়েছিলাম। আমি দালালি করি না।

মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) রেজাউল করিম বলেন, সেনা সদস্য আরিফ কয়েকদিন আগে ফোন করে কাজ করে দিতে বলেন। চেয়ারম্যান স্যারের সাথে তার সখ্য রয়েছে বলেও জানান। কিন্তু আমি তাকে পাত্তা দেয়নি। পল্লী বিদ্যুত এখন দালালমুক্ত। কোনো দালালকে পাত্তা দেয়া হবে না।