নির্বাচন কমিশনে জমাকৃত সম্পদের বিবরণী সংক্রান্ত হলফনামা সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আফম

স্টাফ রিপোর্টার: সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আফম রুহুল হকের ব্যাংক ব্যালেন্স ৫ বছরে বেড়েছে ১০ গুণ। ব্যাংক ব্যালেন্সের অধিকাংশ তার স্ত্রী ইলা হকের নামে। নির্বাচন কমিশনে জমাকৃত সম্পদের বিবরণী সংক্রান্ত হলফনামা থেকে এ তথ্য বেরিয়েছে। ২০০৮ ও ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর প্রদত্ত দুটি হলফনামা যাচাই করার সময় সম্পদ বৃদ্ধির এ চিত্র পাওয়া গেছে।

হলফনামা দুটি বলছে, পাঁচ বছর আগে নির্বাচনী মাঠে নামার সময় রুহুল হক এবং তার স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকা ছিলো মাত্র ৯২ লাখ ৩৬ হাজার ১০৮ টাকা। এখন তাদের ব্যাংক ব্যালেন্সের পরিমাণ ১০ কোটি ১৫ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৩ টাকা।
২০০৮ সালে স্ত্রী ইলা হকের নামে ব্যাংক ব্যালেন্স ছিলো মাত্র ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৩০ টাকা। এখন ৭ কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ২৪০ টাকা। এক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার প্রায় ১৬৫ গুণ। অন্যদিকে রুহুল হকের ব্যাংক ব্যালেন্স ২০০৮ সালে ছিলো প্রায় ৮৮ লাখ টাকা। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

সদ্য বিদায়ী স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. রুহুল হক ২০০৮ সালে ১৪ দলীয় মহাজোটের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন (সাতক্ষীরা-৩)। এরপর তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ২১ নভেম্বর নির্বাচনকালীন সরকার গঠন পর্যায়ে তিনি মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েন। নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, সাতক্ষীরা-৩ আসনে রুহুল হক ছাড়া অন্য কোনো বৈধ প্রার্থী এবার নেই। অর্থাৎ, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন তিনি। মহাজোট সরকারের ৫ বছর সময়কালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ খাত ছিলো নানা কারণে আলোচিত। এ সময়ে স্বাস্থ্য খাতে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রীয়ভাবে কমপক্ষে ৩টি আন্তর্জাতিক পদকে ভূষিত হয় বাংলাদেশ। এসব সাফল্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ বিভিন্ন অধিদফতরে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে একইভাবে সমালোচিতও হয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ অন্যরা। সংশ্লিষ্টদের অভিমত, এ খাতে সাফল্য ও সমালোচনা বয়ে চলেছে সমান্তরাল।
নির্বাচন কমিশনে এবার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. রুহুল হক যে হলফনামা জমা দিয়েছেন তাতে দেখা যায়, সামগ্রিকভাবে ২০০৮ সালের তুলনায় তার অস্থাবর সম্পদ ৪ গুণ বেড়েছে। ২০০৮ সালে তিনি এবং তার স্ত্রীর মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিলো ৪ কোটি টাকার কিছু বেশি। ২০১৩ সালে সম্পদের পরিমাণ ১৬ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ১০ কোটি টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স হিসাবে রাখা আছে। এককভাবে তার স্ত্রী ইলা হকের সম্পদের পরিমাণ বেড়ে গেছে ৮ গুণ। আগে তার নামে অস্থাবর সম্পত্তি ছিলো মোট ৯৫ লাখ টাকা মূল্যের। এখন তা ৮ কোটি ৩৯ লাখ ছাড়িয়েছে।