নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি দুই ইসলামী দলের

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রে কেন্দ্রে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে নিবন্ধিত দুইটি ইসলামী দল। গতকাল রোববার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাথে সংলাপে ইসলামি ফ্রন্ট ও ইসলামী আন্দোলন এই দাবি জানায়। রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরের কমিটিতে ৩৩% নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার বিধান বাতিলের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। অন্যদিকে নির্বাচন সবার কাছে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য না হলে নির্বাচন কমিশনকে আইনের আওতায় এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এজন্য প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন করার প্রস্তাব দিয়েছে দলটি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় চারজন নির্বাচন কমিশনার, ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল সকাল ১০টায় বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। দলের চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মান্নানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল ইসির সঙ্গে সংলাপ করে। ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে দলের মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন জানান, একাদশ সংসদ সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের পক্ষ থেকে ১০ দফা সুপারিশ রাখা হয়। এরমধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন, ইসির অধীনে স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে রাখা, নির্বাচনী বিতর্ক, দলের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার বাধ্যবাধকতা বাতিলের সুপারিশ রয়েছে।

তিনি বলেন, মহিলাদেরকে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নির্বাহী কমিটিতে সীমিত কোটায় না রেখে প্রত্যেক দলের অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন করে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া হোক। বিদ্যমান নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে দলের কমিটির প্রত্যেক স্তরে ৩৩% নারী প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে।

বিকাল তিনটায় চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মো. ইউনুছ আহমাদের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেন। সবার কাছে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হলে নির্বাচন কমিশনকে আইনের আওতায় এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো, সেই সঙ্গে নির্বাচনের একদিন আগে কেন্দ্রে কেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে দলটি। সংলাপে দলটি সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় কেউ যদি নির্বাচন করতে না পারে সেজন্য সংসদ ভেঙে নিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার দাবি জানায়। আর সবার সুবিধার্থে অনলাইনের মনোনয়ন দাখিলের দাবি জানায়। এছাড়া নির্বাচনী জামানত ১০ হাজার টাকা, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন পদ্ধতি প্রণয়নের জন্য আইন করা, নির্বাচনী ব্যয় কমানো, সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টিসহ ১৫ দফা দাবি জানান তারা। উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হচ্ছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বাধীন এবং শক্তিশালী করতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা থাকতে হবে। এরপরও যদি সুষ্ঠুনির্বাচনে ব্যর্থ হলে এবং নির্বাচনকালীন পক্ষপাতদুষ্ট প্রমাণিত হলে নির্বাচন কমিশনকে আইনের আওতায় এনে জবাবদিহিতার জন্য আইনি কাঠামো প্রণয়ন করা। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা রাখা। নির্বাচন কমিশনের এমন ক্ষমতা থাকতে হবে; যে কোন দল ও তাদের সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীরা যদি দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি নৈরাজ্যকরে সে দলের নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে। এই মর্মে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা।

কালকে আরো দুই দলের সঙ্গে সংলাপ : আজ সোমবার কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ না হলেও আগামীকাল মঙ্গলবার আরো দুইটি দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে কমিশন। সকাল ১০টায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বিকাল ৩টায় ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।