নির্বাচনমুখি হয়ে উঠেছে দেশের রাজনীতি

স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকার দু সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে প্রধান দু দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে চলছে নানা চিন্তা। বিরোধী জোটের টানা আন্দোলনের মধ্যে আচমকা এ নির্বাচনকে রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতি দিয়ে বিবেচনা করছে দু দলই। এ নির্বাচনের ফল দলীয় ও জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে এমনটি ভেবেই চলছে প্রস্তুতি। বিরোধী জোটের আন্দোলন চলাকালে এই নির্বাচনে অংশ নেয়ার লাভ-ক্ষতির চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে তফসিল ঘোষণার পর থেকে। শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাথে পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের বৈঠকের পর তিনি নির্বাচনের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করায় সম্ভাব্য প্রার্থীরাও নড়েচড়ে বসেছেন। এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশের পর আওয়ামী লীগেও শুরু হয়েছে নতুন চিন্তা। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে- এমনটি ধরে নিয়েই দল সমর্থিত প্রার্থী ঠিক করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে মেয়র হিসেবে যে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে তাদের নিয়েও নতুন করে ভাবা হচ্ছে। এছাড়া কাউন্সিলর পদে একক প্রার্থী দেয়ার ক্ষেত্রে নতুন করে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

২০ দলীয় জোটের অবরোধ-হরতাল অব্যাহত থাকলেও তিন সিটি নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্তের পর নির্বাচনমুখি হয়ে উঠেছে দেশের রাজনীতি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে বদলে যেতে পারে বর্তমান রাজনীতির দৃশ্যপট। কেটে যেতে পারে গুমট আবহাওয়া, ফিরে আসতে পারে স্বস্তি ও শান্তি।

এমনকি সিটি নির্বাচনকে ঘিরে নতুন করে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে বিদেশী কূটনৈতিক মহলেও। স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে না হলেও নির্বাচনী মাঠে বিএনপির অংশগ্রহণের পক্ষে রয়েছেন কূটনীতিকরা। তারা মনে করেন, বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের বড় কারণ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পারস্পরিক আস্থার অভাব। সিটি নির্বাচনে তারা অংশ নিলে এই আস্থাহীনতা অনেকাংশে কমে আসবে- এমন বার্তা কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে অনানুষ্ঠানিকভাবে পৌঁছানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

আরও জানা গেছে, সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছেন কূটনীতিকরা। নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে বিএনপির আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন তারা। এ বৈঠকের মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনে ইসির প্রস্তুতির বিষয়ে অবহিত হবেন কূটনীতিকরা। পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগীদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহায়তা দেয়ার প্রয়োজন আছে কি-না- এমন প্রস্তাবও দেয়া হবে ইসিকে। এই তিন সিটি নির্বাচন জাতীয় রাজনীতিতে কেমন প্রভাব ফেলবে- সে ব্যাপারেও প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছেন তারা। দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে বিদেশি কূটনীতিকরা নানা উদ্যোগ নিয়ে গত প্রায় আড়াই মাস ধরে কাজ করছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি এবং তাদের শরিকরা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিলে বদলে যাবে রাজনীতির দৃশ্যপট। দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে চলতে থাকা হরতাল-অবরোধসহ চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিরও নাটকীয় পরিবর্তন ঘটবে। রাজপথের দমন-পীড়ন-জ্বালাও-পোড়াও-সহিংসতা-নাশকতাসহ আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির পাল্টাপাল্টি অবস্থান ও তাদের চিরচেনা বৈরী রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে তা পরিণত হতে পারে ভোট উৎসবে।

এমন মত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদেরও। তাদের মতে, দু প্রধান দলের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে রাজনীতিতে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে উত্তরণের একটি সুযোগ এনে দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিলে টানা হরতাল-অবরোধ থেকে মুক্তি মিলবে। সাধারণ মানুষসহ সবার দৃষ্টি থাকবে তখন নির্বাচনের দিকে। রাজনীতিও হবে নির্বাচনমুখী। অবসান ঘটবে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার।

এ প্রসঙ্গে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার শনিবার বলেন, সিটি কর্পোরেশনসহ স্থানীয় সরকারের প্রতিটি নির্বাচনই নির্দলীয়। এসব জায়গায় দলীয়ভাবে নির্বাচন করার কোনো সুযোগ নেই। দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেয়ারও কোনো সুযোগ নেই। তারপরেও বাস্তবতা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত এসব নির্বাচনও দলগত নির্বাচনে পরিণত হয়। তিনি আরও বলেন, বর্তমান অবস্থায় সবাই মিলে এই নির্বাচনে অংশ নিলে অবশ্যই তা রাজনীতির জন্য ইতিবাচক হবে। রাজনীতিতে সুবাতাস বয়ে আনবে। জনমনে বিরাজমান উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার অবসান ঘটবে। মাঠের লড়াই ভোটের রাজনীতিতে পরিণত হবে।

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা- জানতে চাইলে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন শনিবার বলেন, বিএনপি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিলে তা চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবেই নেবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্যই আন্দোলন করছে। সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবেই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দল অংশ নিতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য বিএনপি যখন আন্দোলন করছে, ঠিক তখন সবার দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতেই সরকার অনেকটা তড়িঘড়ি করে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছে। আমি মনে করি সরকার যে কৌশলই গ্রহণ করুক না কেন বিএনপি এক্ষেত্রে নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকবে না। সরকারি দলকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেবে না।

অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বিএনপি একটি বড় দল। তাদের জনসমর্থন রয়েছে। দলীয় ফোরামে আলোচনা করে এবং শরিকদের পরামর্শ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে নিশ্চয়ই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সরকারের দমন-পীড়নের কারণে বিএনপিসহ ২০-দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের মনে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে তারা মাঠে নামলে এ আতংক কেটে যাবে।

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, আসন্ন ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ করা উচিত। বিএনপি এ নির্বাচনে এলে আমরা তাদের স্বাগত জানাবো।

প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু এমপি বলেন, ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি যে ভুল করেছে আশা করি তারা আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আর সে ভুল করবে না। তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপির টানা আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের সম্পৃক্ততা নেই। তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই তারা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেবে।

সরকারের উচ্চ পর্যায়ের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে নির্বাচন কমিশন ১৮ মার্চ ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। ২৮ এপ্রিল ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে তিন সিটিতে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৯ মার্চ। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ ও ২ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৯ এপ্রিল। ওই দিনই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হচ্ছে- এমন আভাস পেয়েই এতে অংশ নিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আগ্রহী মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রচারণায় নেমে পড়ে। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি প্রধান বিরোধী দলও এই নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। সে অনুযায়ী তিন সিটিতে মেয়র প্রার্থীর নামও ঘোষণা করে তারা। আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রধান শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলও (জাসদ) নির্বাচনে তাদের দলীয় মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে।

বাম ঘরানার দুই প্রধান দল সিপিবি এবং বাসদও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। তারাও ঢাকার দুই অংশেই মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে। নির্বাচনকে ঘিরে এত সাজ সাজ রবের মধ্যে এতোদিন অনেকটাই নীরব ছিলো বিএনপি। কিন্তু নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসতেই তারাও নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছে।

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল। ২০০৭ সালের ১৪ মে সিটি কর্পোরেশনের মেয়াদ শেষ হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় ৮ বছর পর আবার ভোটগ্রহণ হতে যাচ্ছে ঢাকা সিটিতে। তবে এবার অবিভক্ত নয়, বিভক্ত সিটিতে নির্বাচন হবে। ২০১১ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকা উত্তর এবং ঢাকা দক্ষিণ নামে সিটি কর্পোরেশন ভাগ হয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়াদ শেষ হবে ২৬ জুলাই। আইনানুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে। ওই হিসাবে ২৮ জানুয়ারি থেকে ২৬ জুলাইর মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই চট্টগ্রাম সিটিতে নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলের মহানগর সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির এবং জাতীয় পার্টি দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোর্শেদ মুরাদ ইব্রাহিমকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছে। ঢাকার দুই অংশেই আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে অনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হলেই বিএনপিও তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে।

জানা গেছে, সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা ভাবছে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। তাদের মতে, নির্বাচনে অংশ নিয়ে মেয়র এবং কাউন্সিলরদের জয়ী করার চ্যালেঞ্জকে আন্দোলনের সাফল্য হিসেবে দেখানো যাবে। আর জয়লাভে ব্যর্থ হলে সরকারের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগে আন্দোলন জোরদার করা সহজ হবে। দলটির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও নির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষে। বিষয়টি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দলের শীর্ষ নেতা ও পেশাজীবীদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করছেন।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছর পূর্তির দিন থেকে অর্থাৎ ৫ জানুয়ারি থেকে হরতাল-অবরোধ দিয়ে টানা আন্দোলনে রয়েছে বিএনপি। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ৩ জানুয়ারি রাত থেকে গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছেন। সেখান থেকেই আন্দোলনের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গ্রেফতারি পরোয়ানা উপেক্ষা করেই সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে অনড় খালেদা জিয়া।

এক হিসাবে দেখা গেছে, ১৮ মার্চ পর্যন্ত বিএনপির টানা আন্দোলন, হরতাল ও অবরোধে ১৫৪ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে পেট্রোলবোমায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ৬৬ জন। ক্রসফায়ার, গুলিবিদ্ধ, গণপিটুনি ও ট্রাকচাপায় বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন ৬৩ জন। গুম হয়েছেন ৩৬ জন। নিখোঁজ রয়েছেন ১৮ জন। পঙ্গু হয়েছেন ৫০ জন। মামলা হয়েছে ১৪ হাজার। গ্রেফতার ও আটক হয়েছেন ১৬ হাজার। দিন যতো বাড়ছে নিহত এবং আহতের সংখ্যা আরও বাড়ছে। বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি। টানা হরতাল-অবরোধে সব চাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। কৃষক-শ্রমিক-খেটে খাওয়া দিনমজুরসহ সাধারণ মানুষ পথে বসেছে। শিক্ষা ব্যবস্থা হরতাল-অবরোধে তছনছ হয়ে গেছে।

এরকম পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ, কূটনীতিক ও দাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা দুই শীর্ষ নেত্রীর সঙ্গে বারবার দেখা করে সংলাপে বসার তাগিদ দিয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও বারবার সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন দুই দলকে। খালেদা জিয়া এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চমক হিসেবে তিন সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচনের উদ্যোগ নেয় ক্ষমতাসীনরা। সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তফসিলও ঘোষণা করে। এর পরপরই দ্রুত বদলাতে থাকে রাজনৈতিক দৃশ্যপট। বিএনপি এখনও হরতাল-অবরোধ বহাল রেখেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটা তাদের রাজনৈতিক কৌশল। নির্বাচনে অংশ নিলে তারা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করবে।