নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণ ॥ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন ইউএনও

 

উপজেলা প্রকৌশলীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য নির্দেশ

জীবননগরের সন্তোষপুর-মানিকপুর রাস্তায়

 

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়নের সন্তোষপুর-মানিকপুর রাস্তায় নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে রাস্তার নির্মাণকাজ চলছিলো। সিডিউল না মেনেই হচ্ছিলো এ কাজ। এ নিয়ে ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করলে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কাজ বন্ধ করে দেন জীবননগর ইউএনও নূরুল হাফিজ। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে কেন নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে এবং প্রকল্পটি কেন তদারকি করা হয়নি এ বিষয়ে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য উপজেলা প্রকৌশলী ওসমান গনির কাছে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মো. নূরুল হাফিজ মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে উপজেলা প্রকৌশলী ওসমান গনির কাছে লিখিতভাবে জবাব দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বৃহত্তর কুষ্টিয়া প্রকল্পের (জিকেপি) অধীন ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সন্তোষপুর-মানিকপুর কাঁচা রাস্তার ১ কিলোমিটার লম্বা এবং ৩ মিটার চওড়া এইচবিবি (হেরিংবন বন্ড) নির্মাণ কাজ করার জন্য টেন্ডার হয়। চুয়াডাঙ্গার একটি কনস্ট্রাকশন ফার্ম কাজ পেয়ে এক সপ্তাহ আগে যথারীতি কাজ শুরু করে। শর্ত অনুযায়ী ৬ ইঞ্চি বালির ওপর ১ নম্বর ইট দিয়ে কাজ করার কথা। কিন্তু কাজের গুণগত মান নিয়ে এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তির কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল ও উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান সোমবার সকালে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ঠিকাদারের লোকজনকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এ নির্দেশ অমান্য করে গতকাল মঙ্গলবার আবারও ৩ নম্বর ইট দিয়ে রাস্তা নির্মাণের কাজ করছিলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নূরুল হাফিজ দুপুরে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদারকির দায়িত্বে থাকা কাউকে পাননি এবং নি¤œমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করায় কাজ বন্ধ করে দেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তা নির্মাণে রীতিমতো পুকুরচুরি হচ্ছিলো। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগসাজশে এ কাজ করছিলো উপজেলা প্রকৌশলী অফিস। অভিযোগের আঙুল উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী ওসমান গনির দিকে। তদারকির কথা থাকলেও ফিরেও তাকায়নি উপজেলা প্রকৌশলী অফিস। ফলে ইচ্ছেমতো কাজ করছিলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

দীর্ঘদিন পর খানাখন্দে ভরপুর রাস্তাটিতে কাজ শুরু হওয়ায় এলাকাবাসীর মনে স্বস্তি এলেও নির্মাণকাজ দেখে তারা হতাশ। রাস্তায় নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন পর এই রাস্তার কাজ শুরু হওয়া ভালো লক্ষণ হলেও নির্মাণকাজের অনিয়মের বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভুল করে ৪ ট্রাক ২ নম্বর ইট এসেছিলো। তা ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী ওসমান গনির সাথে যোগাযোগ করার জন্য কয়েকবার তার অফিসে গিয়েও তার দেখা মেলেনি। এমনকি তার মুঠোফোনে ০১৭১২-১৫৩৭৯৩ একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নূরুল হাফিজ বলেন, নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণের ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর উপজেলা প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।