নিজের ইট ভাটার পাশ থেকেই ১২ মাস পর ব্যবসায়ী মিরাজের লাশ উদ্ধার

 

আসামীর স্বীকারোক্তীতে কুমারখালী থানা পুলিশের অভিযান

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: নিখোঁজ হওয়ার দীর্ঘ এক বছর পর ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা মিরাজুল ইসলাম মিরাজের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবী করেছে পুলিশ। কুমারখালী থানা পুলিশ গতকাল রাতে মাসউদ রুমী সেতু সংলগ্ন মিরাজের ভাটার পাশ থেকেই তার লাশ উদ্ধার করেছে। এক আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভাটার পাশ থেকে মাটি খুঁড়ে তার কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। নিখোঁজ হওয়ার কয়েকদিন পর মিরাজের ভাই বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মিরাজের কয়েকজন পার্টনারকে আসামী করা হয়। গত বছরের ৪ জুন রাতে মিরাজ নিখোঁজ হন। এরপর পুলিশ কয়েক দফায় চেষ্টা চালিয়েও কুল কিনারা করতে ব্যার্থ হন।

কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়াউর রহমান জানান, একজন আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাতে মিরাজের ভাটার পাশে অভিযান চালানো হয়েছে। এ সময় একটি গর্ত খুঁড়ে কিছু হাড় পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে এসব হাঁড় নিখোঁজ মিরাজের। প্রয়োজনে এগুলো ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। ডিএনএ টেষ্ট করলেই সব জানা যাবে।

গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে কুমারখালী থানা পুলিশের একটি দল মামলার এক আসামীকে নিয়ে অভিযানে নামে। ওই আসামী মিরাজকে হত্যা করে যেখানে পুঁতে রাখা হয় সেই স্থানটি পুলিশকে দেখিয়ে দেয়। এ সময় গর্ত খুঁড়ে কিছু হাড় উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর সেগুলো পোষ্ট মোর্টেমের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সময় মিরাজের পরিবারের লোকজনও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ, গত বছরের ৪ জুন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার জয়নাবাদ এলাকা থেকে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শহরের বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়েছেন এক বিএনপি নেতা। তার নাম মিরাজুল হক ওরফে মিরাজ (৪৬)। তিনি কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়া এলাকার মৃত আবদুল গণির ছেলে। এ ব্যাপারে মিরাজের স্ত্রী সখি খাতুন কুমারখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছেন। জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, মিরাজ লাহিনীপাড়া গ্রামের ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও চাপড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।

মিরাজের জয়নাবাদ এলাকায় গড়াই নদীর পাশে গড়াই নামে একটি ইটের ভাটা আছে। মিরাজের পরিবারের সদস্যরা জানান, মিরাজ রাতে ইটভাটার ব্যবসায়ীক পাটনার কহিনুর তার মোটরসাইকেল করে কুষ্টিয়া শহরের একটি ফলের দোকানের সামনে নামিয়ে দিয়েছে বলে সে সময় সখি খাতুনকে কহিনুর জানায়।

মিরাজ এক ছেলে এক মেয়ের জনক। ছেলে জিলা স্কুল ও মেয়ে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। এদিকে মিরাজের লাশ উদ্ধারের খবরে তার পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মিরাজ ছোট বেলা থেকে পরিশ্রমী। নৌকার মাঝি ছিল প্রথম দিকে। পরে পৌরসভার ড্রেন ক্লিনারের কাজ নেয়। এছাড়া গড়াই বালু ঘাটে শ্রমিকের কাজ করে। পরে কয়েকজন মিলে ঘাট ডাকে। পরে কয়েকজন মিলে একটি ইট ভাটা গড়ে তোলে।