নিজামীর ফাঁসির বিষয়টি জাতিসংঘে তুলবে পাকিস্তা

স্টাফ রিপোর্টার: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে ও অন্যান্য দেশের কাছে তুলে ধরবে পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ এ কথা জানিয়েছেন। এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। গতকাল শুক্রবার সিনেটে বক্তব্য দেওয়ার সময় সারতাজ আজিজ বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিরোধী নেতাদের ফাঁসি কার্যকরের ঘটনায় তিনি দুঃখ পেয়েছেন।’ তিনি বলেন, মুসলিম বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আজিজ এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি দাবি করেন, এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ১৯৭৪ সালে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার ত্রিপক্ষীয় চুক্তিরও লঙ্ঘন।
সিনেটের প্রধান রাজা জাফারুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশে যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আর কাউকে ফাঁসি দিতে না পারে, সে জন্য মুসলিম দেশগুলোকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।’ এর আগে সিনেট সদস্যরা নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের ঘটনায় তুরস্ক ঢাকায় নিযুক্ত তাদের রাষ্ট্রদূতকে সরিয়ে নেওয়ার খবরকে স্বাগত জানান। এমনকি এ বিষয়ে পাকিস্তানেরও এমন শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে উল্লেখ করেন তারা। যদিও তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহারের তথ্যটি সঠিক নয়। তুরস্কের রাষ্ট্রদূত দেউরিম ওজতুর্ক কয়েক দিন আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া চিঠিতে জানান, ১২ মে তিনি ঢাকার বাইরে যাচ্ছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে কে দায়িত্ব পালন করবেন, সেটিও তিনি উল্লেখ করেছেন। তা ছাড়া কোনো দেশ তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর কথা। তুরস্ক তেমন কিছু বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। একাত্তরে আলবদর বাহিনীর প্রধান ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নেতা নিজামীর ফাঁসিতে উদ্বেগ জানিয়ে আগেও পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে প্রস্তাব পাস হয়েছে ও দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিজামীর ‘একমাত্র অপরাধ’ ছিল পাকিস্তানের সংবিধান সুরক্ষা করা। এ ছাড়াও পাকিস্তানে বিভিন্ন মহল থেকে শোক ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন স্থানে গায়েবানা জানাজা ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিভিন্ন সংগঠন।