নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনায় গণশুনানিতে সারা মেলেনি

 

স্টাফ রিপোর্টার: নারায়ণগঞ্জেরকাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ খুনের ঘটনায় হাইকোর্টেরনির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির গণশুনানি চলছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় সার্কিটহাউসে গণশুনানি শুরু হয়। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এ ঘটনায় যে কেউশুনানিতে সাক্ষ্য দিতে পারবে। তবে এ শুনানিতে তেমন কোন সারা মেলেনি।
এপর্যন্ত মাত্র ৩ জন ব্যক্তি সাক্ষ্য দিতে এসেছেন। তদন্তের স্বার্থে তাদেরনাম প্রকাশ করেনি। তবে আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাক্ষ্য দিতে নাম লিখিয়েছেনবলে জানা গেছে।

শুনানিতে সারা না মেলার বিষয়ে অনেকে আতঙ্কের কথা বলেছেন।তারা বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক হত্যাকান্ড। ফলে নিরাপত্তার অভাব বোধ করায়অনেকেই সাক্ষ্য দিতে আসছেন না।এর আগে শনিবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়েতদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য দেন নিহতদের পরিবারের সসদ্যরা। এছাড়া আগামী ১৫মে বৃহস্পতিবার একই সময়ে এ বিষয়ে আবার গণশুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।এদিকেতদন্ত কমিটির সাথে দেখা করে মৌখিকভাবে খুনীদের পক্ষে কোনো সাক্ষ্য গ্রহণনা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা। এছাড়াও জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা আগামী ১৫ মে গণশুনানিতে অংশ নেবেন বলেওতদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন।

৭ হত্যার প্রতিবাদ ও খুনীদের গ্রেফতারের দাবিপূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্তকর্মবিরতি পালন করেছেন আইনজীবীরা। অপরদিকে বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্তবিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা।
নারায়ণগঞ্জজেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন জানান, সকালে আমরাকর্মবিরতি পালন করেছি। এরপর তদন্ত কমিটি সঙ্গে দেখা করে খুনীদের পক্ষেসাফাই সাক্ষ্যগ্রহন না করার মৌখিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছি।

সাত খুনের মামলাতদন্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহজাহান আলী মোল্লারনেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্যের কমিটির সদস্যরা ৮ মে বিকেলে নারায়ণগঞ্জে জেলাপ্রশাসকের কার্যালয়ে আসেন। পরে তারা অপহরণের স্থান ফতুল্লার শিবু মার্কেটএলাকা ও বন্দর উপজেলার শান্তিনগর (লাশ উদ্ধারের স্থান) পরিদর্শন করেন।

গত২৭ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটিকরপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জন।এর ৩ দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা থেকে ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরদিন ১ মে আরো এক জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ছয় কোটি টাকার বিনিময়ে র‌্যাবেরতিন কর্মকর্তা ওই সাতজনকে অপহরণ ও খুন করেছেন বলে নজরুলের শ্বশুর শহীদুলইসলাম ওরফে শহীদ চেয়ারম্যান দাবি করার পর র‌্যাব কর্মকর্তাদের অবসরে পাঠানোহয়। এ ঘটনায় প্রকাশিত প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে গত ৫ মে হাইকোর্টস্বপ্রণোদিত ঘটনা তদন্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবেরনেতৃত্বে ৭ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এছাড়া এ ঘটনায় করা মামলাগোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) পাশাপাশি সিআইডিকে (অপরাধ তদন্ত বিভাগ) তদন্তেরওনির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এদিকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রোববার র‌্যাবেরচাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।