নাতাশার বিরুদ্ধে থানায় গৃহকর্মী আমেনার মামলা দায়ের

আলমডাঙ্গায় আম চুরির অপবাদ দিয়ে ৪ বছরের শিশু আবিরকে বেদম মারপিট ঘটনা
স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গায় গৃহকর্মীর ওপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় জজ নূরুল ইসলামের স্ত্রী নাতাশার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার গৃহপরিচারিকা আমেনা খাতুন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ৫টায় জেলা লোকমোর্চার সহযোগিতায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
আমেনা খাতুন তার আর্জিতে উল্লেখ করেছেন, গত শুক্রবার আম চুরি করে খাওয়ার অপবাদ দিয়ে তার ৪ বছরের ছেলে আবিরকে বেদম মারপিট করতে থাকেন নাতাশা। আমেনা বাধা দিতে গেলে তার মাথার চুল চেপে ধরে দেয়াল ও গ্রিলের সাথে আছড়ে আছড়ে মারেন। এরপর হত্যার উদ্দেশে গলায় রশি দিয়ে শ্বাস রোধ করে ধরেন। মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে টেনেহেঁচড়ে বাড়ির বাইরে আমেনাকে ফেলে রাখেন নাতাশা। পরে এলাকার লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। গতকাল শনিবার বিকেলে জেলা লোকমোর্চার সভাপতি অ্যাডভোকেট আলমগীরের নেতৃত্বে একটি টিম হাসপাতালে দেখতে যায় আমেনাকে। পরে তাকে সাথে করে থানায় নেন। পরে আমেনা এজাহারটি দাখিল করেন বলে জানান ওসি (তদন্ত) এএইচএম লুৎফুল কবীর।
আলমডাঙ্গা উপজেলা লোকমোর্চার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলী জানান, নির্যাতনের শিকার আমেনা এখনও চরম অসুস্থ। আলমডাঙ্গায় থানায় মামলা করতে এসে তিনি ঠিকভাবে বসতে পারছিলেন না। একটি বেঞ্চে শুয়েই তিনি এজাহারে স্বাক্ষর করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার সভাপতি অ্যাড. আলমগীর হোসেন, সদর উপজেলা লোকমোর্চার সভাপতি সহিদুল হক বিশ্বাস, আলমডাঙ্গা উপজেলা লোকমোর্চার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, জেলা লোকমোর্চার সদস্য অ্যাড. হানিফ উদ্দিন, জুলহাস মিল্টু, কিশোর কুমার কু-ু, আলমডাঙ্গা উপজেলা লোকমোর্চার সহসভাপতি খন্দকার শাহ আলম মন্টু প্রমুখ। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন জেলা লোকমোর্চার সচিব কানিজ সুলতানা।
আলমডাঙ্গা উপজেলার আসাননগর গ্রামের আমিরুল ইসলামের স্ত্রী আমেনা খাতুন (৩২) গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন উপজেলা শহরের বাবুপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক লুলু মাস্টারের বাড়িতে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে লুলু মাস্টারের জামাই জজ নুরুল ইসলামের উপস্থিতিতে স্ত্রী নাতাশা নির্মম নির্যাতন চালান আমেনার ওপর। হাসপাতালে চিকিৎসার ৮ ঘণ্টা পর তার জ্ঞান ফেরে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৯ আগস্ট সাতক্ষীরায় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালে নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী নাতাশা ১০ বছর বয়সী কাজের শিশু বিথীকে নির্মম নির্যাতন করেন।