নাটোরে গাছের সাথে বেঁধে শিশুসহ দুজনকে নির্যাতন

স্টাফ রিপোর্টার: নাটোরের বড়াইগ্রামে চুরির অপরাধে গাছের সাথে বেধে শিশুসহ দুজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। উপজেলার দক্ষিণ মালিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটলেও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পেটানোর দৃশ্য ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। গুরুতর আহত হবার পরেও তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি না করে বাড়িতেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়, বড়াইগ্রাম উপজেলার দক্ষিণ মালিপাড়া গ্রামের বোবার মোড়ে বুলবুল হোসেনের মুদির দোকানে চুরি হয় শুক্রবার রাতে। এঘটনায় রোববার বিকেলে সৌদি প্রবাসী রবিউল করিমের নির্দেশে আবু সামা (৩৬) ও শাকিল কাজী (১২) নামে দুজনকে সন্দেহমূলকভাবে ধরে আনা হয়। পরে তাদেরকে সুপারি গাছের সাথে বেঁধে বেধরকভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরিবারের লোকেরা তাদের উদ্ধারের জন্য এগিয়ে এলে তাদেরকে হুমকি দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপি নির্যাতন চালানো পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের হস্তক্ষেপে তাদের উদ্ধার করা হলেও হাসপাতালে ভর্তি করানো বা থানায় অভিযোগ করানো সম্ভব হয়নি। পরে তাদেরকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

স্থানীয় মাতব্বর আব্দুস সোবহান জানান, চুরির সাথে জড়িত থাকায় তাদেরকে সামাজিকভাবে সাজার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নেছামুদ্দিনের ছেলে রবিউলের নির্দেশে মোকলেছের ছেলে সাইদুল তাদের গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়েছে।

নির্যাতিত আবু সামা বলেন, আমাকে অন্যায়ভাবে গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। আবার রবিউলের লোকেরা হুমকি দিচ্ছে, হাসপাতালে ভর্তি হলে বা থানায় অভিযোগ করলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে।

রবিউল করিম বলেন, সামাজিকভাবে বিচার করা হয়েছে, এভাবেই আমাদের সামাজিক বিচার করা হয়। আমি থাকায় তাদেরকে বেশি মারধর করা হয়নি। এখন আবার মানবিক কারণে আমিই তাদের চিকিৎসা করাচ্ছি। আর আমিতো একা নই সমাজের মহিদুল, শাহজাহান, শফিকুলসহ অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন ওই বিচারে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরে তাদেরকে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয়দের সাথে এবং পুলিশের সাথে কথা বলে বিষয়টি গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে আপোষ-রফা করার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, খবর পেয়ে বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী এএসআই ইউসুফ আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয়ভাবে আপস রফার পরামর্শ দিয়েছেন। সম্ভব না হলে পরে থানায় অভিযোগ করতে বলেছেন।

এ ব্যাপারে নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী বলেন, এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। তবে ঘটনা জানার পর জড়িতদের আটকে অভিযান চালানো হচ্ছে। জড়িতরা পলাতক থাকায় এখনও আটক করা যায়নি। দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।