নদীগর্ভ থেকে জমি উদ্ধার করে শিল্পায়নের পরিকল্পনা

 

স্টাফ রিপোর্টর: সরকারমাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেনপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এ লক্ষ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণঅধিদফতর, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি এবং কোস্টগার্ড নিরলসভাবে কাজ করছে।বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ও ভয়ঙ্কর মাদক ইয়াবা পাচার রোধকল্পে টেকনাফউপজেলায় ৯ জনবল সংবলিত একটি নতুন অস্থায়ী সার্কেল অফিস স্থাপন করা হয়েছে।গতকাল বুধবার সংসদে জাতীয় পার্টির (জাপা) একেএম মাইদুল ইসলামের টেবিলেউত্থাপিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।

একই প্রশ্নের জবাবেপ্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সমন্বয়ে ইয়াবাপাচার বিরোধী অভিযান ইতোমধ্যে জোরদার করা হয়েছে। ভারত সরকার সীমান্তের৫০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ফেনসিডিল কারখানা স্থাপন না করার নির্দেশদিয়েছে। বিজিবি ও বিএসএফ পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলনে বিএসএফের প্রতিনিধিরকাছে ফেনসিডিল তৈরির কারখানার তালিকা সংবলিত বুকলেট হস্তান্তর করে সেগুলোধ্বংস করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীজানান, কক্সবাজারসহ সীমান্ত এলাকাগুলোতে ইয়াবা ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য পাচাররোধে বিজিবির সার্বক্ষণিক টহল কার্যক্রম পরিচালনা, তল্লাশি ও নজরদারিবৃদ্ধির ফলে সীমান্ত এলাকায় বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ অন্যান্যমাদকদ্রব্য আটক করা হচ্ছে। ফলে মাদকদ্রব্যের অনুপ্রবেশ হরাস পেয়েছে।নদীগর্ভ থেকে বিপুল পরিমাণ জমি উদ্ধারের পরিকল্পনা:ঝিনাইদহ-৩আসনের নবী নেওয়াজের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের বৃহত্ নদীসমূহ খনন করে গভীরতা ও নাব্য বৃদ্ধি এবং ড্রেজিংকৃতমাটি দিয়ে নিচু জমি ভরাটের পরিকল্পনা করেছে। এ কাজ সমাপ্ত করলে বিপুলপরিমাণ জমি নদীগর্ভ থেকে উদ্ধার হবে। এ জমিগুলো শিল্পায়নসহ নগরায়ণের কাজেব্যবহার করতে সরকার শিগগিরই ব্যাপক পরিকল্পনা নেবে।

অভিবাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় নিবিড় কূটনৈতিক তত্পরতা:মমতাজবেগমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৫ সাল পরবর্তী উন্নয়নএজেন্ডায় অভিবাসন ইস্যুকে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি সরকার অত্যন্ত গুরুত্বেরসাথে নিয়েছে। একজন অভিবাসী নাগরিকের সার্বিক অবদানকে বিবেচনায় এনেবাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী একটি সুষ্ঠু, নিরাপদ, নিয়মতান্ত্রিক, সম্মানজনক ওঅধিকার-ভিত্তিক অভিবাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় নিবিড় কূটনৈতিক তত্পরতাঅব্যাহত রেখেছে। আশা করা হচ্ছেটেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য নির্ধারণের চলমানবৈশ্বিক আলোচনায় এ সুপারিশসমূহ অভিবাসন বিষয়টি অন্তভুক্তিকরণে বিশেষভূমিকা রাখবে।একই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৫ সালপরবর্তী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার চলমান বৈশ্বিক আলোচনায় নেগোনিয়েশনঅভিবাসনকে লক্ষ্যমাত্রা/নির্দেশক হিসেবে অন্তর্ভুক্তিকরণে যেসব দেশ অগ্রণীভূমিকায় রয়েছে, বাংলাদেশ তাতে দৃশ্যমানভাবে স্বীকৃত। উত্স-গন্তব্য-ট্রানজিটদেশসমূহে আন্তর্জাতিক অভিবাসন ক্রমশই সার্বিক দেশজ উন্নয়নের একটিঅপরিহার্য নিয়ামক হিসেবে স্বীকৃত। প্রত্যাশিত কাঠামো সৃষ্টি হলেঅভিবাসীদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকরণে অধিকারভিত্তিক শ্রম অভিবাসন, সম্মানজনক মজুরি ও কর্মপরিবেশগত সমতা-ভিত্তিক ব্যবস্থা গ্রহণ, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জরুরি প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতেঅভিবাসী শ্রমিকদের রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অন্যান্য নাগরিকসুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।২০২১ সাল নাগাদ সবার জন্য বিদ্যুত:ঢাকা-১৫আসনের কামাল আহমেদ মজুমদারের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানসরকারের গৃহীত পরিকল্পনাসমূহের সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামী ২০২১ সালনাগাদ সবার জন্য বিদ্যুত নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। চলতি বছরের মে পর্যন্তসরকার বিদ্যুতউত্পাদন ক্ষমতা ১০ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটের মাইলফলক অর্জনকরেছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে এ বছরের মে পর্যন্ত সর্বমোট ৬৩টিবিদ্যুত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

সরকারিভাবে চাল আমদানির প্রয়োজন নেই:আয়েনউদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশে বর্তমানে ধানের ফলনভালো হওয়ায় সরকারিভাবে চাল আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। এ মুহূর্তেসরকারি ভাণ্ডারে খাদ্যশস্যের মজুদের পরিমাণ ১০ লাখ ৭ হাজার ৪৯২ মেট্রিক টন।এর মধ্যে চাল ৬ লাখ ২৯ হাজার ২৭৪ মেট্রিক টন এবং গম ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৬১৩মেট্রিক টন। এ মজুদের পরিমাণ সন্তোষজনক। এ ছাড়াআগামী ২০১৪-১৫ অর্থবছরে১৪ লাখ মেট্রিক টন চাল ও এক লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম অভ্যন্তরীণ উত্সহতে এবং ২ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৯ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি সূত্রে সংগ্রহকরার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

রেলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে বিএনপি-জামায়াত:আবদুলওয়াদুদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা জানান, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিথেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের আহূত হরতাল ও অবরোধ চলাকালেবিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশ রেলওয়ের বেশ কিছুযাত্রীবাহী কোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের সহিংস ঘটনায়যাত্রীবাহী কোচের ব্যাপক ক্ষতি সত্ত্বেও জনগণের কষ্ট লাঘবের জন্য সরকারআরো যাত্রবাহী কোচ সংগ্রহের ব্যবস্থা নিয়েছে