নজরুল সঙ্গীতের কিংবদন্তী শিল্পী আমাদের ছেলে সোহারাব হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার: নজরুল সঙ্গীতে অনন্য অসাধারণ শিল্পী সোহারাব হোসেন জীবদ্দশাতেই কিংবদন্তীতে পরিণত হন। সঙ্গীতে নিবেদিত এই প্রবাদ পুরুষের কণ্ঠে নজরুল ইসলামের গান যেন আলোর ফুলকি হয়ে ফুটেছে। তার গায়কির তন্দ্রাজালে আচ্ছন্ন ছিলো নজরুল সঙ্গীতানুরাগীরা।

১৯২২ সালের ৯ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার রানাঘাটের কাছাকাছি আয়েশতলা গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন শিল্পী সোহারাব হোসেন । তার পৈত্রিক নিবাস এবং শৈশব কৈশোর কেটেছে  চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার লোকনাথপুর গ্রামে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই ছেলে ও তিন মেয়ের জনক। স্ত্রী সুরাতন নেছা বর্তমানে শিল্পীর ঢাকার বাসায় অবস্থান করেন। শিল্পীর বড় ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন জনতা ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক হিসেবে কর্তব্যরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি অবসর গ্রহণ করেছেন। ছোট ছেলে মোকারম হোসেন আমেরিকা প্রবাসী। তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে রওশন আরা সোমা ও ছোট মেয়ে রিফাত আরা গৃহিনী এবং মেজ মেয়ে রাহাত আরা গীতি দেশের আরেক প্রখ্যাত নজরুল সঙ্গীত শিল্পী। ১৯৪৭- এর দেশ বিভাগের পর মরমী শিল্পী আব্বাস উদ্দীন তাকে সরকারের প্রচার বিভাগে চাকরি পাইয়ে দেন। এর আগে কলকাতায় ইন্দুবালা ও আঙ্গুরবালাসহ অনেক গুনী শিল্পীর সান্নিধ্য লাভ করেন এবং তাদের কণ্ঠে নজরুল সঙ্গীত শোনার সৌভাগ্য হয় তার।

সোহারাব হোসেন চলচ্চিত্রের গানেও কন্ঠ দিয়েছেন। রবিন ঘোষের সুরে এহতেশাম পরিচালিত রাজধানীর বুকে ছাড়াও তার গাওয়া গান রয়েছে- মাটির পাহাড়, যে নদী মরুপথে, গোধুলির প্রেম, শীত বিকেল ও এদেশ তোমার আমার প্রভৃতি ছবিতে।

সঙ্গীতাঙ্গণে অনন্য অবদানের জন্য সোহারাব হোসেন স্বাধীনতা পদক, নজরুল একাডেমী পদক, মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার, চ্যানেল আই পদকসহ অসংখ্য সম্মান পেয়েছেন। ২০০৯ সালে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সম্মাননা লাভ করেন তিনি। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি জড়িত ছিলেন।

এছাড়া বুলবুল ললিতকলা একাডেমী, ছায়ানট, শিল্পকলা ও নজরুল একাডেমীতে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন। নজরুল ইনষ্টিটিউট ছিলো তার শেষ কর্মস্থল। শুদ্ধ সঙ্গীত জগতের এই গুরু ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। গুনী এ শিল্পীর প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় অনির্বাণ মঞ্চে আজ শুক্রবার সকাল ১০ টায় স্মরণসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনির্বাণ থিয়েটার, গণউন্নয়ন গ্রন্থাগার, ওমেন্স ক্লাব ও সুর সাধণা যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।