ধারালো অস্ত্রের এলোপাতাড়ি কোপে নিহত : নেপথ্য উন্মোচনে পুলিশি তদন্ত শুরু

 

চুয়াডাঙ্গা ইসলামপাড়ার এক সময়ের মাদকাসক্ত হাজরাহাটি মাঠে নৃশংসতার শিকার : আড়ালে বরিঙের তার চুরি?

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ইসলামপাড়ার মামুনকে (২৫) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। গতপরশু রাতে তাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় হাজরাহাটি মাঠে ফেলে রাখা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার খবর পেয়ে পুলিশ মুমূর্ষু অবস্থায় মামুনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। বিকেলে মামুন মারা যায়।

মামুন হাজরাহাটি মাঠে বরিঙের বৈদ্যুতিক তার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে নৃশংসতার শিকার হয়েছে? নাকি আড়ালে আরো কোনো ঘটনা নিহিত রয়েছে? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজতে পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে। মামুনের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ তুলে বলেছে, মামুনকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। স্বপন নামের একজন পরশু রাত ১২টার দিকে মোবাইলফোনে ডাকে। তার ডাকে সাড়া দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর কোথায় গিয়ে কীভাবে নৃশংসতার শিকার হয়েছে তা বলতে পারবো না।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা ইসলামপাড়ার মৃত হুমায়ুন কবিরের ছেলে মামুন ৪/৫ বছর আগে মাদকাসক্ত হিসেবে চিহ্নিত ছিলো। তাকে তারই পরিবারের সদস্যরা একদফা পুলিশেও দেয়। হাজতমুক্ত হয়ে ঢাকায় পাড়ি জমায়। বিয়ে করে। ফার্মেসিতে চাকরি করতো। ১৬ রোজায় বাড়ি ফেরে মামুন। এলাকায় পুরাতন বন্ধুদের সাথে আবারও ঘুরতে থাকে। ঈদের পরদিন রাতে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সে আর বাড়ি ফেরেনি। গতকাল বৃহস্পতিবার হাজরাহাটি মাঠের কৃষকেরা রক্তাক্ত অবস্থায় একজন পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। তার মাথায়, হাতে ও পায়ে অসংখ্য কোপের দাগ। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, ধারালো অস্ত্রের এলোপাতাড়ি কোপে প্রচুর রক্তক্ষরণে তার অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়ে। হাসপাতালে নেয়ার পর প্রয়োজনীয় সকল প্রকারের চিকিৎসা দেয়া হলেও জরুরি হয়ে পড়ে রক্ত। নিকটজনদের তেমন কেউ দ্রুত হাসপাতালে না আসায় এবং রক্তের চাহিদা দ্রুত পূরণ করতে না পারার কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত বিকেল ৩টার দিকে মারা যায়।

এলাকার অনেকেই মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছে, মামুনের বিরুদ্ধে ছিছকে চুরির অভিযোগ ছিলো। অপরদিকে হাজরাহাটির একাধিকসূত্র বলেছে, বেশ কিছুদিন ধরে মাঠের বরিঙের বৈদ্যুতিক তার চুরি হচ্ছিলো। ১২/১৩ দিনের মধ্যে কয়েক দফা তার চুরি হয়। শ্যালোমেশিনের হেডও চুরি বেড়ে যায়। এরপর মাঠে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়। মামুন কি ওই মাঠে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে নৃশংসতার শিকার হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাব অবশ্য কেউ নিশ্চিত করে দেয়নি। পুলিশ বলেছে, ঘটনার নেপথ্য উন্মোচনে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের আগে কিছু বলা ঠিক হবে না। গতরাতে লাশ হাসপাতালেই রাখা ছিলো। আজ শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে দাফনকাজ সম্পন্ন করা হতে পারে।