ধর্ষণের শিকার যুবতীর পরিবারের সকলকে আটকে রেখেছে প্রভাবশালী ধর্ষক

মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে মেয়েটি : পুলিশ বলছে অভিযোগ না পেলে কিছু করতে পারছি না
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার তিয়রবিলা গ্রামে ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীর পরিবারকে আটকে রেখেছে প্রভাবশালী ধর্ষক ও তার লোকজনেরা! তারা অসুস্থ কিশোরীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্যও বাড়ির বাইরে যেতে দিচ্ছে না বলে মেয়েটির পরিবারের এক সদস্য সাংবাদিকের নিকট জানিয়ে প্রতিকার প্রার্থনা করেছেন।
সূত্র জানিয়েছে, ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিলো স্থানীয় কাশেম (৫০)। মেয়েটির মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তার চিকিৎসার জন্য মেয়েটির বাবা প্রায়ই হাসপাতালে নিয়ে যেতেন। সে সময় মেয়েটি একা থাকতো বাড়িতে। কাশেম সেই সুযোগে মেয়েটিকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করতো। কাউকে বললে তাকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। প্রাণভয়ে এতোদিন মেয়েটি কাউকে কিছু বলেনি।
জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার যুবতি অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। তাকে তার দরিদ্র বাবা-মায়ের কাছ থেকে নিয়ে গিয়ে গর্ভপাত ঘটায় কাশেম। গত শনিবার হরিণাকু-ু সদর হাসপাতালে গর্ভপাত ঘটাতে গেল অপরিণত জীবিত শিশু জন্ম নেয়। কিন্তু মায়েরকোল থেকে জীবিত কন্যা শিশুটিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় কাশেমের বড় ভাই মনিরুজ্জামান। হাসপাতালে তিনজন নার্স এ কাজে মনিরুজ্জামানকে সহযোগিতা করে বলে অভিযোগসূত্রে জানা গেছে।
ধর্ষণের শিকার যুবতীর সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে সে বলেছে, গর্ভপাতের পর তাকে ধাক্কা দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণে অসুস্থ মেয়েটি বাড়িতে স্যালাইনের ওপর ভরসা করে চিকিৎসা নিচ্ছে। নির্যাতিতা মেয়েটির মা মোবাইলে জানান, স্বামীর বন্ধু হিসেবে একই গ্রামের ইব্রাহীম আলীর ছেলে কাশেম তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো। প্রায় ৯ মাস আগে চিকিৎসার জন্য তারা স্বামী-স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি হলে তার মেয়ে দাদির সাথে বাড়িতে একা ছিলো। ওই রাতেই কাশেম গলাটিপে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক তার মেয়ের সর্বনাশ করে। কাশেমের ভয়ে মুখ খোলেনি সে। নির্যাতিতা মেয়ের বাবা জানান, আমরা অতি গরিব। গ্রামে আমাদের কেউ নেই বললেই চলে। প্রভাবশালী কাশেম ও তার ভাই মনিরুজ্জামান লোকজন দিয়ে আামদেরকে বাড়ির ভেতর থেকে বের হতে দিচ্ছে না। মেয়েটিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও নিয়ে যেতে পারছি না। গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে স্যালাইন দিয়ে মেয়েটিকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা আইনের আশ্রয়ও নিতে পারছি না।
তিয়রবিলা পুলিশ ক্যাম্পের আইসি মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সব শুনেছি ও দেখেছি। কিন্তু তারা আইনের আশ্রয় না নিলে তো আমরা কিছু করতে পারছি না। ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম ঘটনার সতত্যা স্বীকার করে জানান, নির্যাতিত পরিবারটি আইনের আশ্রয় নিতে পারে। আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে আমরা সহযোগিতাও করতি পারি।