দেড়যুগ ধরে বন্ধ গাংনী হাসপাতালের এক্স-রে সেবা

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে অকেজো থাকায় রোগী সাধারণের ভোগান্তি বেড়েছে চরমে। ২০০০ সালে মেশিনটি অন্তত ১০ বার মেরামতের চেষ্টা করেও কোনো সমাধান হয়নি। আবার নতুন মেশিন সরবরাহ না করায় রোগী সাধারণকে ছুটতে হচ্ছে বিভিন্ন ক্লিনিক ও প্যাথোলজিতে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন মেশিন সরবরাহের জন্য আবারও চাহিদাপত্র প্রেরণ করা হয়েছে কিন্তু জবাব মেলেনি।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তথা হাসপাতালসূত্রে প্রকাশ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্মলগ্ন থেকে হাঙ্গেরি ১০০এমএ মডেলের একটি এক্স-রে মেশিন সরবরাহ করা হয়। পুরাতন মডেলের এ মেশিনটিতে তেমন কোনো ছবি হতো না। সে সময় থেকেই রোগী সাধারণ ক্লিনিকমুখি। তারপরও কোনোমতে সেবাটি চালানো হতো। স্বল্প টাকায় রোগীরা এক্স-রে করতে পারতেন। এখন ক্লিনিকগুলোতে বাড়তি অর্থ দিয়ে এক্স-রে করাতে হয়। মেশিনটি অকেজো তাই অপারেটরকে দিয়ে পিয়নের কাজ করানো হচ্ছে।

২০০০ সালে মেশিনটি অকেজো হলে বিষয়টি জানানো হয় মেহেরপুর সিভিল সার্জন অফিস ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। সে সময় অন্তত ১০ বার মেশিনটিকে সারানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সম্ভব হয়নি। মেশিনটির ফিল্ম হোল্ডার ও টিউব দিয়ে ওয়েল পাস হওয়ায় মেশিনটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নতুন ৩০০এমএ সিমেন্স কোম্পানির একটি এক্স-রে মেশিন চেয়ে কয়েকবার আবেদন করেও কোনো সাড়া মেলেনি। হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, মেশিনটি অকেজো হওয়ার পেছনে কর্তৃপক্ষের অনীহা ছাড়াও এক্স-রে কক্ষটি পরিত্যক্ত। ছাদের পলেস্তার খসে খসে পড়ছে। সামান্য বৃষ্টিতে স্যাতস্যাতে হয়ে পড়ে। এখন সেটি পরিত্যক্ত জিনিসপত্র রাখা হয়। পরিণত হয়েছে পোকামাকড়ের ঘর বসতিতে। এটি ভালো থাকলে গরিব অসহায় রোগীরা স্বল্প পয়সায় এ সেবাটি পেতো।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মকর্তা জানান, এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট হলেও প্রতি বছর ফিল্ম কেনার জন্য বরাদ্দ আসে। সেই সাথে আসে জেনারেটরের জ্বালানি। কিন্তু এ টাকা কোথায় কীভাবে খরচ হয় তার হিসেব কেউ জানেন না।

গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও এমকে রেজা জানান, দীর্ঘদিন যাবত মেশিনটি অকেজো। প্রতিমাসেই প্রতিবেদন পাঠানো ছাড়াও নতুন মেশিন সরবরাহের জন্য চাহিদাপত্র দেয়া হয় কিন্তু কোনো জবাব পাওয়া যায় না। তবে অসমর্থিত একটি সূত্র বলেছে, নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ শেষ হলে নতুন মেশিন সরবরাহ করা হতে পারে।