দেশে মোবাইল সিম নিবন্ধনে কড়া হুঁশিয়ারি থাকলেও চুয়াডাঙ্গা মোবাইল হাউজে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র অন্যের ছবি ব্যবহার করে সিম বিক্রির অভিযোগ : প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

স্টাফ রিপোর্টার: মোবাইলফোনের সিম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। তাই জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থ সংরক্ষণ, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, অবৈধ ভিওআইপি, ক্ষতিকারক কাজগুলো বন্ধ করতে দেশব্যাপী বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুরোনো বা নতুন সিম নিবন্ধনে ক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ব্যবহার, আঙুলের ছাপ ও রঙ্গিন পাসপোর্ট সাইজের ছবির সাথে জাতীয় পরিচয় পত্রের ছবি মিলিয়ে নিতে বিক্রেতাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু চুয়াডাঙ্গার কিছু অসাধু মোবাইল সিম ব্যবসায়ী ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে গোপনে চালিয়ে যাচ্ছেন সিম ব্যবসা। কে কতোগুলো সিম বিক্রি করতে পারেন? এই নিয়ে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা। এছাড়া মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা কোনো যাচাইবাছাই না করেই পূরণকৃত ফরম গ্রহণ করে অফিসে জমা দিচ্ছেন।

সম্প্রতি শহরের প্রিন্সপ্লাজা সংলগ্ন চুয়াডাঙ্গা মোবাইল হাউজের মালিক মজিবুল হক দৈনিক মাথাভাঙ্গার স্টাফ রিপোর্টার জহির রায়হান সোহাগের ছবি ব্যবহার করে মোবাইল সিম কোম্পানি বাংলালিংকের একটি সিম (০১৯৯২৬৪……সিরিয়ালের সিম) বিক্রি করার পর প্রমাণসহ ধরা পড়েছেন। ওই সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহের জন্য শহরের প্রিন্সপ্লাজা এলাকায় গেলে মোবাইল সিম কোম্পানি বাংলালিংকের এক এসআর’র সাথে দেখা হয়। অফার সম্পর্কে কথা বলার এক পর্যায়ে সাংবাদিকের চোখ পড়ে নিবন্ধিত কয়েকটি ফরমের ওপর। আর প্রথম ফরমেই তার ছবি দেখে অবাক হন তিনি।

তিনি ওই এসআরকে জিজ্ঞেস করেন, এই ছবি কোথায় পেলেন? আমি তো সিম ক্রয় করিনি। তখন ওই এসআর বলেন, চুয়াডাঙ্গা মোবাইল হাউজের মালিক মজিবুল হক একটি সিম বিক্রি করে ওই ফরমে ছবি লাগিয়েছেন। তখনই প্রমাণ হিসেবে ক্যামেরা দিয়ে ওই ফরম ও ফরমে সংযুক্ত জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপির ছবি নেন সাংবাদিক।

ফরম থেকে জানা যায়, ওই সিমের মালিক গুলশানপাড়ার ইসরাইল নামের এক ব্যক্তি। ওই নম্বরে ফোন করা হলে ইসরাইলের ছেলে তন্ময় বলেন, সিমটি আমিই কিনেছি। তবে আমি আমার পিতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ব্যবহার করেছি। কোনো ছবি দেয়নি।

পিতার জাতীয় পরিচয়পত্র, ছেলের আঙুলের ছাপ ও ছবি অন্যজনের? যেখানে জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোনো হাতের আঙুলের ছাপ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে গ্রহণযোগ্য নয়, কিভাবে ওই সিম বিক্রি হলো এবং ওই ছবি কোথায় পেলেন ওই প্রশ্নের জবাবে দোকান মালিক মজিবুল হক বলেন, আপনার ছবি কিভাবে আমার দোকানে এলো তা আমিও জানি না। তাছাড়া সিম বিক্রি করার সময় আমার কর্মচারীরা ছিলো। আমি আপনার ছবি এখনই পরিবর্তনের ব্যবস্থা করছি।

তবে ছবির বিষয়ে বড়বাজার এলাকায় গেলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, মোবাইল সিম ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ছবির দোকন ও ল্যাব থেকে ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি কিনে থাকে। এর আগে অনেকেই ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের বিষয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। অবৈধভাবে সিম নিবন্ধন বন্ধ করে দেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কবল থেকে রক্ষা করতে বিষয়টি খতিয়ে দেখে অসাধু ওই ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহলের লোকজন।