দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি

চুয়াডাঙ্গা আলডাঙ্গার খাদিমপুর ও মেহেরপুর গাংনীতে ইসতেস্কার নামাজ আদায় : বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা

 

স্টাফ রিপোর্টার:প্রচণ্ড খরতাপে চুয়াডাঙ্গায় মাঠ-ঘাট ফেটে চৌচির। চারিদিকে খাঁ খাঁ করছে। প্রাণি জীবন অতিষ্ঠ। প্রচণ্ড খরতাপে ইতোমধ্যে এ জেলায় কমপক্ষে ১০ জন বৃদ্ধ নারী-পুরুষ মারা গেছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জেলার ৪ উপজেলার সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিন শতাধিক শিশু চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সকল সড়ক মহাসড়ক বাজার মাঠ-ঘাট জনমানব শূণ্য হয়ে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। গতএক সপ্তাহ ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলায়। এ সময়ে চুয়াডাঙ্গার তাপ মাত্রা ছিলো ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি থেকে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপ মাত্রা ছিলো ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি চুয়াডাঙ্গায়।প্রচণ্ড এ দাবদাহে দেখা নেই স্বস্তির বৃষ্টি।

সিনপটিক অবস্থা: পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি অতি দ্রুত ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে। পশ্চিমা লঘুচাপটি হিমালয়ান পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলকায় অবস্থান করছে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, অঞ্চলসহ ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং দেশের অন্যত্র আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।রাজশাহী, পাবনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ঢাকা ও রংপুর বিভাগসহ কুমিল্লা ও মাইজদী কোর্ট অঞ্চলসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা আগামীকালও অব্যাহত থাকতে পারে।সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

এদিকে বৃষ্টির জন্য সৃষ্টিকর্তার রহমত কামনায় চুয়াডাঙ্গা, নুরনগর কলোনী আলমডাঙ্গা খাদিমপুর, আলুকদিয়ার পীরপুর, বিশ্বাসপাড়ায় ও মেহেরপুর গাংনীতে গতকাল বুধবার নামাজের আয়োজন করা হয়েছে। শহীদ হাসান চত্বরসংলগ্ন স্থানে, কেদারগঞ্জপাড়া এবং বেলগাছি এলাকায় ইস্তেস্কার নামাজ (বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা) আদায় করা হয়েছে। বেলা ১০টার দিকে একই সাথে অনুষ্ঠিত নামাজে বৃষ্টির জন্য আল্লাহর দরবারে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বিশেষ এ নামাজে দোয়া পরিচালনা করেন বড়বাজার জামে মসজিদের ইমাম মুফতি জুনায়েদ আল হাবিবী ও স্ব-স্ব এলকার মসজিদের ইমামগণ প্রায় একই সময়ে অপর দুটি নামাজের ইমামতি করেন। এবারের এ তীর্ব গরমে আদ্যবধী চুয়াডাঙ্গা জেলার কোথাও তেমন কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি।

খাদিমপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল বুধবার আলমডাঙ্গার খাদিমপুর গ্রামের ইচেখালি বিল মাঠে শ শ মানুষ বৃষ্টির আশায় খোলা আকাশের নিচে প্রচণ্ড রোদ্রের মধ্যে নামাজ, জিকির ও আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।দীর্ঘদিন যাবত প্রচণ্ড তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ গাছপালা পশুপাখির সাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হচ্ছে।এ দুর্দিন থেকে মুক্তি পেতে খাদিমপুর গ্রামের ইচেখালী বিল মাঠে শ শ মানুষ জড় হয়ে নামাজ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেয়। গতকাল সকাল ১০টায় ইস্তেস্কার দু রাকাত নামাজ পরিচালনা করেন খাদিমপুর মাঠপাড়া জামে মসজিদের ঈমাম মাও. আব্দুল্লাহ। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন খাদিমপুর মোল্লাপাড়া জামে মসজিদের ঈমাম মাও. জালাল উদ্দিন। গ্রামের প্রায় সকল মানুষ এ দোয়া মাহফিলে নামাজ পড়ে আল্লাহর দরবারে হাত উঁচু করে রহমতের বৃষ্টি কামনা করে। প্রার্থনা অনুষ্ঠান সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে সাড়ে ১১টায় সম্পন্ন হয়। দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মাও. আবু হানিফ।

গাংনী প্রতিনিধিজানিয়েছেন,বৃষ্টি কামনায় মেহেরপুরের গাংনীতে মহান আল্লাহর বিশেষ রহমতের আশায় ইস্তেস্কার নামাজ আদায় করেছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মুসলমান। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে গাংনী শহরের অদুরবর্তী ঈদগাহ এলাকার মাঠে এ নামাজ আদায় শেষে বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়। পোশাক কিংবা টুপি উল্টো পরে হাত উল্টো করে মোনাজাত করে আল্লাহর রহমত কামনা করা হয়। ঈমামতিশেষে দোয়া পরিচালনা করেন মাও. আব্দুল কাদের। উপস্থিত ছিলেন গাংনী বাজার জামে মসজিদের ঈমাম মাও. রুহুল আমিনসহ এলাকার মুসল্লিরা।