দেখা করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার: আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে সবার কাছে দোয়া চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আমার এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর আকস্মিক অকালমৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই মা হিসেবে আমি গভীরভাবে শোকাহত এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। দেশবাসীকে বলবো, আমি আপনাদের মাঝে আছি এবং যতোদিন বেঁচে আছি আপনাদের সাথেই থাকব ইনশাআল্লাহ। প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান সোহেল স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, এ গভীর বেদনা ও শোকের মুহূর্তে সবার কাছ থেকে যে বিপুল সহানুভূতি, সহমর্মিতা ও সমবেদনা পেয়েছি, তা আমার হৃদয় স্পর্শ করেছে। বিএনপি ও ২০ দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-জোটের নেতাকর্মী, পেশাজীবী, নাগরিক সমাজের সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে জড়িত ব্যক্তিত্ববর্গসহ নর-নারী, শ্রেণি-পেশা ও বয়স নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকে আমি ধন্যবাদ দিচ্ছি ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তারা আমার কার্যালয়ে এসে শোক প্রকাশ ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছেন। তারা এ সময়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে না পারায় আমি গভীরভাবে দুঃখিত। আমি আশা করি পরিস্থিতির বিবেচনায় সবাই বিষয়টিকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। বিভিন্ন ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের নেতাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আমার এই দুঃখের সময়ে তারা শোকবার্তা পাঠিয়ে সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছেন। আমি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ও কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিদের প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

খালেদা জিয়া বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান এবং রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের পুত্র হিসেবে আমাদের এই সন্তানটি একটি রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও কখনও রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট হয়নি। কেবল সে ক্রীড়াঙ্গনের সাথে নিজেকে যুক্ত রেখেছিলো। দুর্ভাগ্যের বিষয়, শুধু শহীদ জিয়া পরিবারের একজন সদস্য হওয়ার কারণেই তাকে নানামুখি জুলুম-নির্যাতন, হেনস্তা-অপপ্রচারের শিকার হতে হয়েছে। অসুস্থ হয়ে প্রবাসে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ও সে চরম প্রতিহিংসামূলক বৈরিতা থেকে নিষ্কৃতি পায়নি। ভাগ্যের এমনই নিষ্ঠুর পরিহাস যে, মা হিসেবে আমি প্রায় আট বছর ধরে এই অসুস্থ সন্তানটির মুখ দেখার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত ছিলাম। অবশেষে আমাকে সন্তানের লাশ গ্রহণ করতে হলো। সর্বশক্তিমান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে আমি এর বিচারের ভার অর্পণ করলাম। কুয়ালালামপুরে কোকোর প্রথম নামাজে জানাজায় অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে যে বিপুলসংখ্যক মানুষের ঢল নেমেছে, আমি তার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

দেশে-বিদেশে কোকোর জানাজায় অংশ নেয়া সবার প্রতি অভিনন্দন জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিএনপি, আমাদের অঙ্গ ও সহযোগী-সংগঠন, ২০ দলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন এবং ব্যক্তি উদ্যোগে কোকোর বিদেহী রুহের মাগফেরাতের জন্য গায়েবানা জানাজা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন যারা করেছেন, আমি তাদেরও আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছি। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর জানাজার নামাজে দলমত, শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সর্বস্তরের লাখ লাখ মানুষ শরিক হয়ে যে অবিস্মরণীয় ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন তাতে আমি গভীরভাবে অভিভূত। ধন্যবাদ প্রিয় দেশবাসীকে। জিয়া পরিবারের প্রতি গণমানুষের এ অপরিমেয় ভালোবাসার বহির্প্রকাশ আমাকে আরও একবার নতুন করে কৃতজ্ঞতার ঋণে আবদ্ধ করলো। বিপুলসংখ্যক মানুষের এ উপস্থিতিতে আমি গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হলাম। শোক কাটিয়ে ওঠার শক্তি সঞ্চয়ে সর্বস্তরের দেশবাসীর এই অংশগ্রহণ আমাকে অনেক সাহায্য করবে।