দু নেত্রীর ফোনালাপ : শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে খালেদা জিয়ার সম্মতি

স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন ১০ম জাতীয় নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান এবং দেশবাসীর নানা শঙ্কা-উদ্বেগের মধ্যেই গতকাল শনিবার ফোনে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। প্রধানমন্ত্রী তাকে আগামীকাল সোমবার সন্ধ্যায় তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আলোচনা ও নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। একইসাথে দেশ ও জাতির স্বার্থে হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তবে বিরোধী দলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হলে সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হবে। এর আগে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া টানা ৬০ ঘণ্টার হরতাল প্রত্যাহার করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ এ হরতালের কর্মসূচির সিদ্ধান্ত তার একার নয়, এটি ১৮ দলের জোটগত সিদ্ধান্ত। ২৯ অক্টোবরের পর আলোচনার জন্য যে কোনোদিন গণভবনে যেতে প্রস্তুত বলে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে দেন। নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেন, তাহলে সামনের সব কর্মসূচিও স্থগিত করা হবে।

Hasina-Khelada

গতকাল সন্ধ্যায় টেলিফোনে আলাপ। দীর্ঘ ৩৭ মিনিটের আলোচনায় শুধু কুশল বিনিময়ই নয়, আলোচনা হয়েছে চলমান রাজনীতি নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার দলের নেতাদের দাওয়াত দিয়েছেন গণভবনে। প্রধানমন্ত্রীর এ দাওয়াত কবুলও করেছেন বিরোধী নেত্রী। তবে নির্ধারিত দিনে দাওয়াতে তিনি যেতে পারছেন না। প্রধানমন্ত্রী ২৮শে অক্টোবর আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। জবাবে বিরোধী নেত্রী জানিয়েছেন, জোটের ডাকা হরতালের কারণে তিনি এদিন যেতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ জানান হরতাল প্রত্যাহারের। জবাবে বিরোধী নেত্রী বলেন, হরতাল ডাকা হয়েছে জোট নেতাদের পরামর্শ নিয়ে। তাদের সাথে আলোচনা ছাড়া তা প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়। তবে ২৯অক্টোবর হরতাল শেষ হওয়ার পর যে কোন দিন, যেকোনো সময় তিনি তার আমন্ত্রণে যেতে পারবেন।

গত কয়েক দিন ধরেই আলোচনা ছিলো দু নেত্রীর টেলিফোন আলোচনা নিয়ে। দেশবাসীর এনিয়ে ছিলো প্রবল আগ্রহ। গতকাল সন্ধ্যায় আসে সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। তবে দুপুরে বিরোধী নেত্রীর লাল টেলিফোনে কয়েকবার কথা বলার চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে বিরোধী নেত্রীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তার ওই ফোনটি দীর্ঘ দিন থেকেই বিকল। এদিকে দু নেত্রীর দীর্ঘ ফোনালাপের পর বিশিষ্টজন ও রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঘটনাটি দেশের রাজনীতির জন্য ইতিবাচক। যা সামনে ভালো ফল বয়ে নিয়ে আসতে পারে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ফোনালাপকে যুগান্তকারী বলে মন্তব্য করেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রী হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও বিরোধী দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়েছে, তিন দিনের হরতাল বহাল থাকবে। হরতালের পরেই প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আলোচনা হবে।

সন্ধ্যা ৬টায় বিরোধী নেতা খালেদা জিয়াকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন এবং বিরোধী নেত্রী তার গুলশানের বাসায় বসে কথা বলেন। ল্যান্ড ফোনে বিরোধী নেত্রীর সাথে যোগাযোগের সুযোগ না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর এক এডিসি ও বিরোধী নেত্রীর একান্ত সহকারীর মোবাইলফোনে তারা কথা বলেন। ফোনে আলাপ করার সময় প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহসহ দলের নেতারা। বিরোধী নেত্রীর পাশে ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান। দুই নেত্রীর ফোনালাপের পর বিএনপির পক্ষ থেকে চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক তাৎক্ষণিক সংবাদ ব্রিফিঙে বিরোধী নেতার প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান সোহেল সাংবাদিকদের কাছে ফোনালাপের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে সন্ধ্যা ৬টার পর ফোন করেন।

বিরোধী নেতা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন, নির্দলীয় নিরপক্ষে সরকারের দাবি এখন জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। এ দাবি মেনে নিতে আপনি যদি নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেন তাহলে আমি যেকোনো দিন আলোচনায় বসতে রাজি আছি। প্রধানমন্ত্রী জবাবে বলেন, আপনি ২৭ অক্টোবর থেকে ঘোষিত হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করুন। ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় এ বিষয়ে আলোচনার জন্য গণভবনে দাওয়াত দিচ্ছি। কাকে কাকে সাথে আনবেন সেটা আপনার বিষয়। ২৮ অক্টোবর রাতে আপনি আমার সাথে খাবেন। জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, হরতাল কর্মসূচি ১৮ দলের সিদ্ধান্ত। আপনি যদি একদিন আগে ফোন দিতেন তাহলে ১৮ দলের সাথে আলোচনা করে হরতাল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বিবেচনা করা যেতো। এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। পুলিশি গ্রেফতারির ভয়ে ১৮ দলের অনেক নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন। এ মুহূর্তে সবাইকে জড়ো করে আলোচনা করা সম্ভব নয়। তাই হরতাল কর্মসূচি বহাল থাকবে। তাছাড়া সমাবেশে স্পষ্ট বলেছি, আন্দোলন এবং সংলাপ একসাথে চালাবো। বিএনপি চেয়ারপারসন আরও বলেন, হরতালের মধ্যে গণভবনে যাওয়া সম্ভব নয়। আপনি যদি আগামী ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় হরতাল কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর যে কোনোদিন যেকোনো সময় আলোচনার জন্য ডাকেন, আমি যাবো। এরপর প্রধানমন্ত্রী অতীতের অনেক প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে চেষ্টা করেছেন। তার কিছু কথার জবাব দেয়ার চেষ্টা করেছেন বিরোধী নেতা। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, আমরা নতুন ধারার রাজনীতি শুরু করতে চাই। আমরা সুন্দর আগামীর দিকে এগিয়ে যেতে চাই। অতীতের তিক্ততা নিয়ে আর কথা বলতে চাই না। আপনি যদি বারবার অতীতের দিকে যেতে থাকেন, অতীতের তিক্ততাকে সামনে আনতে চান তাহলে সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারবো না। একটা সমঝোতায় আসা যাবে না। তাই পরস্পরবিরোধী অভিযোগ না করে সংলাপের মধ্যদিয়ে জাতির জীবনে সঙ্কট দূর করুন।

প্রধানমন্ত্রী দুপুরের দিকে বারবার ফোনে চেষ্টা করার কথা বলেছেন। তারপরও প্রধানমন্ত্রী অতীতের প্রসঙ্গ টানলে বিরোধী নেতা বলেছেন, অতীতের বহু নজির আছে। আমরা সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আপনি সমঝোতায় আসেননি। নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রসঙ্গে বিরোধী নেতা তাকে বলেন, অতীতে আমরাও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে অনেক ভালো ভালো প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তখন জামায়াতের ইসলামীর ফর্মুলা নিয়ে আপনারা আন্দোলন করেছেন। তাই এখন অতীত নিয়ে আলোচনা করতে চাই না। অতীত নিয়ে কথা বললে তিক্ততার সৃষ্টি হয়। এখন প্রয়োজন জাতীয় সমস্যার সমাধান করা। এ সময় খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আপনি একটি প্রস্তাব দিয়েছেন, আমিও একটি প্রস্তাব দিয়েছি। দু প্রস্তাবের সমন্বয় করে গ্রহণ-বর্জন ও আলোচনার মাধ্যমে আশা করি একটি জায়গায় পৌঁছুতে পারবো। এ নিয়ে আলোচনা শুরু করুন। অতীত চর্চা করলে সামনের দিকে যাওয়া যাবে না। এক প্রশ্নের জবাবে মারুফ কামাল খান সোহেল জানান, বিরোধী নেতার বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী শুনেছেন। বিরোধী নেতা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, আগে আলোচনা শুরু হোক। ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যার পর যেকোনো সময় আমন্ত্রণ জানাবেন আমরা গ্রহণ করবো। সময় গুরুত্বপূর্ণ নয়, আলোচনাই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি সংলাপ ও সমঝোতাকে আশা করি গুরুত্ব দেবেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, টেলিফোনে তিনি সব বলতে পারবেন না। তার দল আছে। দলীয় ফোরামে আলোচনা করেই বলতে হবে।

মারুফ কামাল খান জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের ব্যাপারে ফোনালাপে বিরোধী নেতা খালেদা জিয়া বলেছেন, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার চাই। একদলীয়, দ্বিদলীয় বা সর্বদলীয় নয়। আমাদের দাবি মূলত নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলেন, আপনি যে প্রস্তাব দিয়েছেন সেটা জনগণ গ্রহণ করেনি। আপনি যখন নীতিগতভাবে নির্দলীয় সরকারের দাবি মানবেন তখন আমরা ভবিষ্যতে হরতাল-অবরোধসহ সব ধরনের কর্মসূচি স্থগিত করবো। প্রধানমন্ত্রীকে খালেদা জিয়া বলেন, আমরা রিজিড অবস্থানে নেই। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। অতীতে আমি আপনার বাসায় গিয়েছি। আন্দোলন সংগ্রামে একসঙ্গে কাজ করেছি। আজ জাতির সঙ্কট মুহূর্তে জাতীয় ইস্যুতে আমরা এক সঙ্গে কাজ করতে চাই। আগামীতেও একসঙ্গে কাজ করতে চাই। এক প্রশ্নের জবাবে মারুফ কামাল খান বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ফোনালাপের মাধ্যমে আলোচনার শুভসূচনা হয়েছে। আশা করি সরকারি দল ও প্রধানমন্ত্রী আলোচনা এগিয়ে নেবেন। যুদ্ধও আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। আলোচনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী সঙ্কট সমাধান করবেন এটা বিরোধীদলীয় নেতা আশা করেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে টেলিফোন আসার সম্ভাবনায় সন্ধ্যায় গুলশানের বাড়িতে অপেক্ষায় ছিলেন বিরোধী দলের নেতা। কথা বলার পর রাত ৯টার দিকে তিনি গুলশানের কার্যালয়ে যান।

এদিকে সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে ফোন দেয়ার আগেই গণভবনে যান আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। তারা দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বৈঠকে অংশ নিতে সেখানে যান। তাদের সামনেই প্রধানমন্ত্রী ফোন করেন বিরোধী দলের নেতাকে। এসময় প্রধানমন্ত্রীর ফোনের দৃশ্য সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরায়ও ধারণ করতে দেয়া হয়। ফোনের শুরুতেই তিনি সালাম দেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তারপর দুপুরে ফোন দেয়ার কথা জানান। এসময় বিরোধী নেত্রী তার লাল ফোনটি ‘ডেড’ বলে জানান।  এ সময় তিনি কিছুটা রসিকতা করেই বলেন, ফোনটা ডেড ছিলো নাকি ডেড করে রাখা হয়েছে- এখন সেটা তো আমি বলতে পারছি না। ঠিক আছে, আমি আগামীকাল দেখবো কেন আপনার ফোনটা ডেড ছিলো। এটা ঠিক করা যায় কি-না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আপনাকে ফোন করলাম, আমি আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি গণভবনে আসার জন্য। ২৮ তারিখ সন্ধ্যায় আমার সাথে বসে রাতে একটু খাবার খাবেন। আপনি হরতালটা প্রত্যাহার করুন। আমি আপনাকে অনুরোধ করবো, জাতির স্বার্থে জনগণের স্বার্থে আপনি হরতালটা প্রত্যাহার করবেন। এ সময় বিরোধী নেত্রী জোটের সঙ্গে আলোচনার কথা জানালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেখুন আজকে এটি বলছেন, আপনি নিজেই তো কালকে বলেছেন সংলাপের উদ্যোগ নিতে হবে।

বিরোধী নেত্রীকে আমন্ত্রণ জানানোর পর এ নিয়ে দুজনের কথা শেষে তাকে হাসিমুখই দেখা যায়। বিরোধী নেত্রী ২৯ অক্টোবরের আমন্ত্রণ গ্রহণের প্রস্তাব দিলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে তিনি দলীয় ফোরামে আলোচনা করবেন।

হরতাল প্রত্যাহার না করায় দুঃখ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করে সংলাপের আমন্ত্রণ জানানোর পরও হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার না করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা। বিএনপির বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী হতাশা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন তার তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান  চৌধুরী। তিনি বলেন, তাদের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী দুঃখ পেয়েছেন। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারপরও তিনি আশা প্রকাশ করছেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী নৈশভোজের আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন, হরতাল প্রত্যাহার করবেন।

তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দু নেত্রীর ফোনালাপের পর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ উদ্যোগে বিরোধীদলের নেতা খালেদা জিয়াকে ফোন করেন। ফোনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি যেকোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত। বিরোধী নেতা প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেননি। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ আশরাফ বলেন, উনাদের মধ্যে ৩৭ মিনিট কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের নেতাকে গণভবনের আসার জন্য ও  নৈশভোজের জন্য দাওয়াত দিয়েছেন। বিরোধী দলের নেতা তাকে জানিয়েছেন, জোটের সাথে আলোচনা করে তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন। আশরাফ বলেন, আমরা বিশ্বাস করি বিরোধী দলের নেতা আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন, গণভবনে আসবেন। সেখানেই আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হবে। শুধু বিএনপি, না ১৮ দলের  জোটকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,  বিরোধী দলের নেতার সাথে প্রধানমন্ত্রীর ওয়ান টু ওয়ান আলোচনা হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিরোধী নেতা যতোজন নিয়ে আসতে চান, আসত পারেন। তিনি কতোজন নিয়ে আসবেন, তা আগে জানাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবনে জামায়াত যেতে পারবে কি-না, এমন প্রশ্নের উত্তরে সৈয়দ আশরাফ জানান, জামায়াতকে দাওয়াত করা হয়নি।