দু নেত্রীকে হত্যার ছক জেএমবির

স্টাফ রিপোর্টার: নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) পশ্চিমবঙ্গকে তাদের নিরাপদ ঘাঁটিতে পরিণত করে সেখান থেকে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার বিরাট এক জঙ্গি ছক তৈরি করছিলো বলে ভারতীয় গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের দু প্রধান রাজনৈতিক দলের নেত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দু দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যার পরিকল্পনাও ছিলো।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন বাংলাদেশে পাঠানো হবে বলে একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, তদন্তে প্রতিদিনই আমরা নতুন তথ্য পাচ্ছি। আমাদের মনে হচ্ছে এ বিষয়গুলোও প্রতিবেদনে যোগ করা উচিত, কেননা এসব বিষয় আমাদের মতো বাংলাদেশের জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে কিছুটা সময় লাগছে। গত ২ অক্টোবর বর্ধমানে বিস্ফোরণের ঘটনার পর ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) অনুসন্ধানে পশ্চিমবঙ্গে ৫৮টি জঙ্গি ঘাঁটির সন্ধান পাওয়ার তথ্যও ওই প্রতিবেদনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে জানানো হবে।

ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, এনআইএ এবং গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ ও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর সরবরাহ করা তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদন তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এসব বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে বিস্তারিত আলোচনার জন্য আজ সোমবার কোলকাতায় পৌঁছাচ্ছেন ভারতের  জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল,  ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডসের প্রধান জেএন চৌধুরী ও  ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধান সৈয়দ আসিফ ইব্রাহিম। বর্ধমান বিস্ফোরণের তদন্তে আরো সমন্বয়ের বিষয়েও তারা কথা বলবেন বলে জানা গেছে।

মমতার তৃণমূল সরকার শুরুতে এ ঘটনায় এনআইএর তদন্তের বিরোধিতা করে বলেছিল, ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি রাজ্য সরকারেরই দেখার কথা।  কিন্তু বিষয়টি নিছক আইনশৃঙ্খলার বিষয় নয়। এটা এমন নয় যে একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীরা প্রতিপক্ষকে মারবে বলে হাতবোমা বানাচ্ছিলো। এর সঙ্গে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা এবং আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশের বিষয় জড়িত, বলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, রাজ্য সরকারকে সাথে নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। যে জঙ্গি পরিকল্পনা আমরা উদঘাটন করেছি তা তাদের গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। ভারতের এই কর্মকর্তার দাবি, ইন্ডিয়ান মুজাহিদীন ও কাশ্মিরের জঙ্গিদের সাথে মিলে পশ্চিমবঙ্গে এসব জঙ্গি ঘাঁটি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসএই এর ইন্ধন স্পষ্ট।  জেএমবি ও পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন আল মুজাহিদীনের নেতাদের মধ্যে অসংখ্য ফোন কল আদানপ্রদান হয়েছে। আল মুজাহিদীন আল কায়েদার সহযোগী হলেও আইএসআই তদের গোপনে মদদ দিচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, আইএসআই দুবাইয়ের গোপন স্থান থেকে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার এই পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছিলো। তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিলো বাংলাদেশে তালেবান স্টাইলের পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, যাতে ভারতের বিরুদ্ধে গুপ্ত লড়াই চালানো সম্ভব হয়।