দীর্ঘ ৩ বছরেও মামলার চার্জশিট দেয়নি পুলিশ

আজ আলমডাঙ্গা পৌর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল হাই বল্টুর ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী

 

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গা পৌর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল হাই বল্টু হত্যা মামলার দীর্ঘ ৩ বছর অতিবাহিত হলেও আজও পুলিশ চার্জশিট আদালতে পাঠায়নি। ৩ বছরে ১৬ আসামির ১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। আসামিরা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে এখন প্রকাশ্যে ঘুরছে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গার মিয়াপাড়া ক্যানেলপাড়ার আব্দুল বারীর বড় ছেলে আব্দুল হাই বল্টু পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন। আব্দুল হাই বল্টু ২০১২ সালের ২৭ অক্টোবর ঈদের চাঁদ রাতে ৫ বছরের একমাত্র মেয়ের জন্য মেহেদী ও ঈদের জন্য কেনাকাটা করে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাজিমোড়ে পৌঁছুতেই দুর্বৃত্তরা বল্টুকে তাড়া করে। জীবন বাঁচাতে তিনি একটি গলির মধ্যে ঢুকে পড়েন। সামনে বেরোনোর আর রাস্তা না থাকায় দুর্বৃত্তরা বল্টুকে রামদা, চাপাতি দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। নির্মম এ দৃশ্য অনেকেই দেখেছে। তবে সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ এগিয়ে যায়নি। সন্ত্রাসীরা মহড়া দিতে দিতে চলে গেলে প্রতিবেশীরা বল্টুকে রক্তাক্ত অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নেয়। ওই রাতে কোনো মাইক্রোবাস জোগাড় করতে না পেরে হায়দার আলীর মালবাহী ছোট পিকআপভ্যানে বল্টুকে নেয়া হয় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল বল্টুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। ঢাকা মেডিকেলে সিট খালি না পাওয়ায় মুর্মূষু অবস্থায় ফকিরাপুলের ব্রাইটন প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ক্লিনিকেই পরদিন শনিবার অর্থাৎ ঈদের দিন বেলা ৩টার দিকে বল্টু মারা যান। বল্টুর পিতা ওই ঘটনায় বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় হত্যামামলা দায়ের করেন।

আজ বল্টুর ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী। ১৬ জন আসামির মধ্যে পুলিশ শুধুমাত্র একজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে। হত্যামামলাটির প্রথম তন্তকারী অফিসার ছিলেন তৎকালীন ওসি (তদন্ত) আব্দুল মালেক। পরে তিনি বদলি হলে তদন্তভার বর্তায় এসআই অচিন্ত্য কুমারের ওপর। তিনি অন্যত্র প্রশিক্ষণে গেলে বর্তমানে তদন্তের ভার দেয়া হয়েছে এসআই পিয়ার আলির ওপর। হত্যাকাণ্ডটি এলাকার অনেকেই প্রত্যক্ষ করেছে। নিহতের পরিবার ও বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর দাবি নির্দিষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ থাকার পরও গত ৩ বছরেও পুলিশ নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট আদালতে প্রেরণ করছে না। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই তারা মন্তব্য করেছেন। মামলার ৩ বছর অতিক্রান্ত হলেও চার্জশিট আদালতে প্রেরণ না করায় বল্টুর পরিবারসহ স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝেও হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

উপজেলা বিএনপির একাংশের সভাপতি শহিদুল কাউনাইন টিলু বলেন- আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে এখনো আমরা ধৈর্য ধরে আছি। তবে শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো।

কেন চার্জশিট দেয়া হচ্ছে না? মামলাটির তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই পিয়ার আলীকে মোবাইলফোনে এ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তদন্ত রিপোর্ট তো আমরা আদালতে প্রেরণ করবো না। এসপির নিকট জমা দেবো। ডিআইজি বিষয়টি দেখছেন। এ ব্যাপারে আমাদের মনিটরিং সেল কাজ করছে। পরে অবশ্য বলেন- তদন্ত অব্যাহত আছে। তাড়াতাড়ি চার্জশিট জমা দেবো।