দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগীদের পচা-বাসি ভাত খেতে দেয়ার অভিযোগ

 

 তোপের মুখে খাবার সরবরাহকার

দামুড়হুদা প্রতিনিধ: দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা রোগীদের বাসি-পচা ভাত দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোগীরা ওই পচা-বাসি ভাত না খেয়ে হইচই করে প্রতিবাদ জানালে খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদার পুনরায় ভাত রান্নার ব্যবস্থা করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। উপজেলার জয়রামপুরের শাহাবদ্দিন ওরফে বদ্দিন নামের এক রোগী রাগে ক্ষেভে ভাত না খেয়ে শুয়ে পড়েন বলে জানা গেছে। গতকাল শুক্রবার রাতের খাবার পরিবেশনের সময় এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি নানাভাবে অবহেলিত। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিনিয়ত নানা অনিয়ম আর দুর্নীতি নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতঃপূর্বে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উঠলেও এবার নিম্নমানের পচা বাসি খাবার পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদারের ওপর। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগী উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের জহর আলীর স্ত্রী সাইদা খাতুন বলেন, আমি ৯ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছি। রাতে যে ভাত দেয়া হয়েছে তা দুপুরে রান্না করা। গরমে ওই ভাত পচে গন্ধ হয়ে গেছে। মাছ দেয় আঙুল কাটা। (আঙুলের মতো ছোট সাইজের)। দুপুরে ডাল ভালো দিলেও থেকে যাওয়া ডালের মধ্যে পানি মিশিয়ে গরম করে রাতে খেতে দেয়া হয়। একইভাবে মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগী গোবিন্দহুদার সাদিকুলের স্ত্রী রেনু, একই গ্রামের হারুন খাঁর স্ত্রী ছালেহা বেগম, দেউলী গ্রামের ফরজ আলীর স্ত্রী বিলকিস ফুলবাড়ি গ্রামের খালেক দফাদারের ছেলে হাসান, জয়রামপুরের রমজান মণ্ডলের ছেলে বদ্দিন, পুরাতন বাস্তপুরের আজিজুলের ছেলে আজাদ, ছাতিয়ানতলার হামিদের ছেলে লাল্টু অভিযোগ করে বলেন, এ ধরনের বাসি-পচা খাবার আমাদের কীভাবে খেতে দেয়। আমরা কী মানুষ না পশু?

এ বিষয়ে হাসপাতালে কর্মরত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. আনিসুর রহমান জানান, হাসপাতালে বর্তমানে ১৩ জন পুরুষ ও ২৫ জন মহিলা রোগী আছে। এরমধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী আছে ৩ জন। বাসি-পচা ভাত দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ পেয়ে আমি সরবরাহকৃত ভাতগুলো শুকে দেখি। দুপুরে রান্নার কারণে গরমে নষ্ট হয়ে গেছে। বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিকভাবে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফয়সাল বীন সেলিম খাঁনকে অবহিত করি। তিনি সংশ্লিষ্ট খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদার আকতার হোসেনকে হাসপাতালে যেতে বলেন। ঠিকাদার আকতার হোসেন হাসপাতালে এসে ওই ভাত রেখে পুনরায় চাল দিয়ে নতুনভাবে আবারও ভাত রান্নার ব্যবস্থা করেন। এ বিষয়ে ঠিকাদার আকতার হোসেন বলেন, আমি প্রতিদিন সকালে মালামাল বুঝে নেয়ার জন্য ৩ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। (আবাসিক মেডিকেল অফিসার, ডাইড ক্লার্ক ফরহাদ ও সকালে কর্মরত একজন নার্স) আমি প্রতিদিন সকালে গঠিত কমিটির কাছে খাদ্য তালিকা অনুয়ায়ী মালামাল বুঝে দিয়ে যায়। গতকাল সকালেও আমি মালামাল বুঝে দিয়ে গেছি। তারপর হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা রোগীদের খাবার কীভাবে এবং কখন পরিবেশন করবেন সেটা আমার দেখার বিষয় না। তারপরও মানবিক কারণে আমি আবার পুনরায় চাল কিনে দিয়ে ভাত রান্নার ব্যবস্থা করেছি।