দামুড়হুদায় ২ ব্লকের বেশকিছু ধানক্ষেতে দেখা দিয়েছে ক্ষতিকর ব্লাস্ট রোগ : চিন্তিত চাষি : ব্যাপকতারোধে কৃষকদের মাঝে লিফলেট বিতরণ

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের পর এবার দামুড়হুদায়ও ধানক্ষেতে ব্লাস্ট রোগের সন্ধ্যান মিলেছে। দামুড়হুদা সদর ও হাউলী ইউনিয়নের ৫৮ বিঘা ধানক্ষেত ব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ব্যাপকতা প্রতিরোধে প্রতিটি ধানক্ষেতে স্প্রে করার পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের মাঝে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম অব্যহত রাখা হয়েছে।

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসসূত্রে জানা গেছে, চলতি মরসুমে লক্ষমাত্রা ছিলো ৭ হাজার ৪৩৫ হেক্টর। অর্জণ হয়েছে ৮ হাজার ৫৩৩ হেক্টর। এরমধ্যে দামুড়হুদা সদর ব্লকের কলেজমাঠ, ঝোটোর বিল, পুড়াপাড়াসহ কিছু এলাকা এবং হাউলী ইউনিয়নের জয়রামপুর ব্লকের বাউনগাড়ি মাঠ, বাটকেমারী, বটতলাসহ বেশকিছু এলাকায় ব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা মিলেছে। দামুড়হুদা সদর ব্লকে ২১ বিঘা  এবং জয়রামপুর ব্লকে ৩৭ বিঘা ধানক্ষেত ব্লাস্ট রোগ ধরা পড়েছে। হাউলি ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শফিউল আজম শফি জানান, আমার হাউলী ব্লকের আওতাধীন বাস্তুপুর, কাদিপুর, রঘুনাথপুরসহ পুরো মাঠ ঘুরে ঘুরে দেখেছি। কিন্ত কোথাও এ রোগের দেখা মেলেনি।

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেছেন, ব্লাস্ট একটি ছত্রাক জনিত ক্ষতিকর রোগ। এ রোগটি আগে ধানের পাতায় দেখা যেত। রোগটি কাণ্ডের গিটে, শীষের নিচে এমনকি ছড়ায়ও দেখা দিতে পারে। এ রাগের প্রাথমিক লক্ষণ হলো  ধানের পাতায় ছোট ছোট দাগ দেখা দেয়। পরে দাগগুলো একটু লম্বাটে হয়। দেখতে ঠিক চোখের মতো হয়। রোগটি শীষের নিচে আক্রমণ করে গিট পচে কালচে হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ছড়ায় আক্রমণের ফলে ধান চিটে হয়ে যাচ্ছে। দিনে প্রচণ্ড গরম আর রাতে ঠাণ্ডা এ অসম তাপমাত্রার কারণেই এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বর্তমান আবহাওয়াও ব্লাস্ট রোগের অনুকূলে বিরাজ করছে। আমরা আগেভাগেই বাড়তি নজরদারির পাশাপাশি চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়ার ফলেই এ উপজেলায় ব্লাস্ট রোগ তেমনভাবে ছড়াতে পারেনি।

করণীয় বিষয়ে তিনি বলেন, ব্লাস্ট আক্রান্ত জমিতে পানি ধরে রাখতে পারলে এ রোগের ব্যাপকতা অনেকাংশে হ্রাস পাবে। যে সমস্ত জমি এখনও পাতা, গিট ও ছড়া আক্রন্ত হয়নি সে সমস্ত জমিতে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক যেমন-টুপার-৮ গ্রাম ১০ লিটার পানি অথবা নাটিভো-৬ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে। আর যে সমস্ত ধানের জমিতে ইতোমধ্যেই ধানের পাতা, গিট ও নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে সেমস্ত জমিতে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক যেমন পিলিয়া ৫২৫ এসই ২০ মিলি ১০ লিটার পানিতে অথবা অ্যামিস্টার টপ ১০ মিলি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে ৭-১০ দিন অন্তর দু বার বিকেলে স্প্রে করতে হবে। এর ব্যাপকতারোধে উপজেলার ২৫ ব্লকেই  চাষিদের সাথে নিয়মিত বৈঠক করা হচ্ছে।