দামুড়হুদায় নদীতে আকস্মিক মাছ ভেসে উঠতে দেখে এলাকাবাসীর নানা মন্তব্য : মাথাভাঙ্গার পানি দূষিত : অক্সিজেনের অভাবে মরছে মাছ

 

বখতিয়ার হোসেন বকুল/আব্দুল লতিফ: দামুড়হুদার মাথাভাঙ্গা নদীর ব্রীজের দু ধারের বেশকিছু অংশ লোকে লোকারন্য হয়ে ওঠে। ছোট শিশু থেকে শুরু করে শ শ নারী-পুরুষ যে যা হাতের কাছে পাচ্ছে তাই নিয়ে ছুটছে মাথাভাঙ্গা নদীতে। কারো হাতে সিটকিজাল, কারো হাতে খ্যাপলা, আবার কাউকে কাউকে ঝুড়ি নিয়েও ছুটছে দেখা গেছে। ছোট ছোট শিশুরাও থেমে থাকেনি। তাদেরও প্লাস্টিকের জগ হাতে মাছ ধরতে মাথাভাঙ্গা নদীতে নামতে দেখা গেছে। আবাল বৃদ্ধ বনিতা সবাই মেতে উঠে মাছ ধরার মহোৎসবে। কেউ কেউ হাতড়িয়েই ধরেছে কয়েক কেজি মাছ। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে যেন তাদের কথা বলার যেন এক সেকেন্ডও সময় নেই। দু একজন জোর পায়ে নদীর দিকে যেতে যেতে বললেন নদীতে গান্ধি লেগেছে। মাছ মরে ভাসছে। মাছ ধরতে যাচ্ছি এর বেশি কিছু বলতে পারবো না। সময় নেই। গতকাল শুক্রবার সকালে দামুড়হুদার মাথাভাঙ্গা নদীর বেশকিছু অংশ জুড়েই ছিলো ওই দৃশ্য। বাইন, পুটি, ট্যাংরা, গুতেল, পাকাল, তোড়া, বেলে জিওলসহ ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় দশ লক্ষাধিক টাকার মাছ মারা গেছে বলে এলাকাবাসীর ধারণা। কেউ কেউ বলেছে নদীতে এক ধরনের ট্যাবলেট দিয়ে পানি দূষিত করা হয়েছে। আবার ওকউ কেউ বলেছে নদীতে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে। তবে উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে পানিতে অক্সিজেনের অভাবে এবং এ্যামোনিয়া গাসের কারণে ওই ঘটনা ঘটেছে ।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার কেশবপুর থেকে শুরু করে পুরাতন বাস্তুপুর পর্যন্ত মাথাভাঙ্গা নদীতে গতকাল শুক্রবার ভোরে হঠাত করেই বাইন, পুটি, ট্যাংরা, গুতেল, পাকাল, তোড়া, বেলে জিওলসহ সব ধরনের মাছ ভাসতে দেখা যায়। নদীতে মাছ ভাসছে এমন খবর পেয়ে ঘাট এলাকার ছোট ছোট শিশু থেকে শুরু করে শ শ নারী-পুরুষ যে যা হাতের কাছে পেয়েছে তাই নিয়েই ছুটেছে নদীতে। কারো হাতে সিটকিজাল, কারো হাতে খ্যাপলা, আবার কাউকে কাউকে ঝুড়ি নিয়েও ছুটছে দেখা গেছে। ছোট বড় সকলেই মেতে উঠে মাছ ধরার মহোৎসবে। কেউ ৫ কেজি কেউ ৭ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত মাছ ধরতে পেরেছে। আবার কয়েকজনকে হাতড়িয়েও মাছ ধরতে দেখা গেছে। দামুড়হুদার মাথাভাঙ্গা ব্রীজের দু ধারে ছোট শিশু থেকে শুরু করে  শ শ নারী-পুরুষের ওই মাছ ধরার দৃশ্য দেখতে নদীর তীরে ছুটে যায় অসংখ্য মানুষ। কয়েকজনকে ওই মাছ সস্তায় কিনে বাড়িতে নিয়ে আসতেও দেখা যায়। কেশবপুর এলাকার বেশ কয়েকজন বলেছে গত ৩-৪ দিন আগে কেশবপুর এলাকায় মাথাভাঙ্গা নদীতে এক ধরনের ট্যাবলেট দিয়ে বড় বড় চিংড়িসহ আড় মাছ ধরে নিয়েছে কয়েক অসাধু মাছ শিকারী। কেউ কেউ বলেছে গত বছর চুয়াডাঙ্গার ভিমরুল্লাস্থ জেলাখানার দূষিত পানি মাথাভাঙ্গা নদীতে মিছে মাছ মারা গিয়েছিল। এবার তেমন ঘটনাও হতে পারে। এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা আইয়ুব আলী জানান, ঘটনাটি জানার পর আমরা নদীর পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার জন্য ভেসে ওঠা কিছু মাছের স্যাম্পলও নেয়া হয়েছে। পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কম এবং অ্যামোনিয়া গ্যাসের কিছু উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সে কারণেই এমনটি ঘটতে পারে। তা ছাড়া গত দু দিনের বৃষ্টির পানির ধোয়াট নেমেও পানি কিছুটা হলেও দূষিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। কারণ ওই সমস্ত ধোয়াটের সাথে গরু ছাগলের মলমূত্রসহ বিভিন্ন ধরণের বিষাক্ত পদার্থ পানিতে পড়েছে। এছাড়া সকালের দিকে পানিতে অক্সিজেনের পরিমান কম থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে অক্সিজেনের পরিমানও বেড়ে যায়। তবে চেতনানাশক কোনো ট্যাবলেট কেউ নদীতে দিয়েছে কি-না আমার জানা নেই।