দামুড়হুদায় অর্ধকোটি টাকার ভারতীয় পণ্যসহ দু চোরাচালানী আটক

দামুড়হুদা/কুড়ুলগাছি প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় অর্ধকোটি টাকা মূলের ভারতীয় অবৈধ ওষুধ ও প্রাইভেটকারসহ দু চোরাচালানীকে আটকের ঘটনায় পুলিশ-বিজিবি পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছে। ওষুধসহ ওই দু চোরাচালানীকে বিজিবি সদস্যরা আটক করেছে মর্মে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিজিবি দাবি করলেও পুলিশ বলেছে ভিন্ন কথা। পুলিশের দাবি তারাই প্রথমে ওই দু চোরাচালানীকে মালামালসহ আটক করে। পরে বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক ওই মালামালসহ আটককৃতদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডার গার্ড বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক মোহাম্মদ আমির মজিদ গতকাল বুধবার দুপুরে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, সকাল ৬টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের পরিচালক মোহাম্মদ আমির মজিদ এবং অতিরিক্ত পরিচালক মো. আনোয়ার জাহিদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মুন্সিপুর বিওপির টহল কমান্ডার হাবিলদার আরাফাত উল্লাহসহ একদল বিজিবি সদস্য অভিযান চালিয়ে দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা-মুজিবনগর সড়কের ফকিরপাড়াস্থ ইটভাটার কাছ থেকে একটি শাদা রঙের প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো-খ-১২-৭৫৯৬) আটক করেন। পরে ওই প্রাইভেটকার তল্লাশি করে ৬২ হাজার ৪শ পিস ভারতীয় যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট সেনেগ্রা এবং ১৪ হাজার ৮শ পিস ডোপামিন হাইড্রোক্লোরাইড ইনজেকশন ও ২টি মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়। সেইসাথে ওই প্রাইভেটকারে থাকা দু চোরাচালানী মেহেরপুর সদর উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের মৃত মাওলাদ হাজির ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩২) এবং মুজিবনগর উপজেলার পুরন্দপুর গ্রামের কাসেদ আলীর ছেলে রাকিবুল ইসলামকে (২৬) আটক করা হয়। গতকাল সন্ধ্যায় মুন্সিপুর বিওপির টহল কমান্ডার হাবিলদার আরাফাত উল্লাহ বাদী হয়ে আটককৃত ওই দু চোরাচালানীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরপূর্বক উদ্ধারকৃত মামলামাল দামুড়হুদা মডেল থানায় হস্তান্তর করেন। উদ্ধার হওয়া মালামালের আনুমানিক বাজারমূল্য ৫০ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বলে বিজিবিসূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে নাটুদহ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সার্জেন্ট নুরুজ্জামান জানান, গতকাল বুধবার সকালে কার্পাসডাঙ্গা-মুজিবনগর সড়কের ফকিরপাড়াস্থ বর্ষা ইটভাটার কাছ থেকে ওই দু চোরাচালানীকে মালামালসহ আমরাই আটক করি। আটকের পরপরই মুন্সিপুর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা আমাদের কাছ থেকে জব্দকৃত মালামালসহ আটককৃত দু চোরাচালানীকে ছিনিয়ে নেয়। এ সময় বিজিবির সাথে আমাদের বাগবিতাণ্ডাও হয়। তিনি আরও বলেন, বিজিবি সদস্যরা জনগণের সামনে মালামালের জব্দ তালিকা না করে জোরপূর্বক আসামিসহ মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনাটি তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।

এ দিকে পুলিশের কাছ থেকে জোরপূর্বক ভারতীয় মালামালসহ দু চোরাকারবারীকে বিজিবি কর্তৃক ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনাটি জানাজানি হয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে এলাকার সচেতন মহলের মধ্যে নানা প্রশ্ন দানা বাঁধে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেউ কেউ বলেছেন, জগন্নাথপুর বিজিবি ক্যাম্পের সামনে দিয়ে ভারতীয় চোরাইপণ্যসহ ওই প্রাইভেটকারটি যখন আসে তখন বিজিবি সদস্যরা ওই প্রাইভেটকারটির গতিরোধ করেনি। অথচ পুলিশ যখন ওই প্রাইভেটকারটি আটক করলো সাথে সাথে বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে পুলিশের কাছ থেকে জোর করে তা ছিনিয়ে নেয়া হলো। বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্তেরও দাবি জানান তারা।