দামুড়হুদার হাউলী ইউপি উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই সম্পন্ন

 

ঋণ খেলাপির দায়ে একজনের মনোনয়নপত্র বাতিল : বৈধ ৭ জনের

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমাদানকারী ৮ জনের মধ্যে ৭ জনকে বৈধ ঘোষণা করা হয় এবং ঋণ খেলাপির দায়ে একজনের (সিরাজুল ইসলাম) মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে রিটার্নিং অফিসার মো. আবু দাউদ সকল প্রার্থীর উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কাজ সম্পন্ন করেন।

জানা গেছে,চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনের অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে চিঠি প্রাপ্তির পর রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক গত ২৪ জুলাই তফশিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী গতকাল বুধবার ছিলো মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করার কাজ। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচন অফিসে মনোনয়নপত্র জমাদানকারী সকল প্রার্থীর উপস্থিতিতে শুরু হয় মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কাজ। এ সময় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক দামুড়হুদা শাখার প্রতিনিধি জানান, প্রার্থী সিরাজুল ইসলামের নামে ১ লাখ ১১ হাজার ১৫ টাকা খেলাপি ঋণ আছে। প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ওই টাকা তাৎক্ষণিকভাবে পরিশোধ করলে উপজেলা নির্বাচন অফিসার প্রাথমিকভাবে তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রার্থীর আপত্তির কারণে রিটার্নিং অফিসার তার মনোনয়নপত্র বাতিল ও ৭ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার জানান,মনোনয়নপত্র জমাদানের তারিখে প্রার্থী যদি ঋণ খেলাপি হয় তাহলে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯’র ধারা ২৬’র উপধারা ২’র জ মোতাবেক তার মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। ওই আইনের আওতায় প্রার্থী সিরাজুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রার্থীর আপিল করার সুযোগ আছে। তবে ৩ দিনের মধ্যে (অফিস চলাকালীন সময়ে) জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর আপিল করতে হবে। তিনি আরো জানান, মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে থানা ও আদালতে, ঋণ খেলাপি সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যাংকে, ঠিকাদারি সংক্রান্তে উপজেলা প্রকৌশল অফিসে এবং কোনো প্রার্থীর নামে সরকারি কোন ডিলারশিপ আছে কি না তা জানতে চেয়ে আমি গত ৫ আগস্ট স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে পত্র প্রেরণ করি এবং এ সংক্রান্তে কোনো তথ্য থাকলে গতকাল বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে একজন করে প্রতিনিধি পাঠানোর অনুরোধ জানাই। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো প্রতিনিধি হাজির না হলেও কৃষি ব্যাংক থেকে একজন প্রতিনিধি হাজির হন এবং সিরাজুল ইসলামের নামে আপত্তি জানান।

এ বিষয়ে প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ষড়যন্ত্র করে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। প্রার্থিতা ফিরে পেতে আমি অবশ্যই আপিল করবো। পরবর্তীতে দুপুরে উপজেলা ফুড অফিস থেকে একজন প্রতিনিধি এসে জানান, প্রার্থী নিশান তরফদারের নামে ওএমএস’র সরকারি ডিলারশিপ আছে। যেহেতু ওই প্রতিষ্ঠান থেকে নির্ধারিত সময়ে কোনো তথ্য দেয়া হয়নি বিধায় ওই প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা করে জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়। এ বিষয়ে ভোটে অংশ গ্রহণকারী অন্য কোনো প্রার্থী যদি জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর ৩ দিনের মধ্যে (অফিস চলাকালীন সময়ে) তার বিরুদ্ধে আপিল করেন করেন তবে তার মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।

মনোনয়নপত্র দাখিলকারী ৮ জনের মধ্যে যে ৭ জনের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন- হাউলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান হাজি সহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ খোকন, হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শাহ মিন্টু, হাউলী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নজরুল ইসলাম, বিএনপি নেতা ওহিদুজ্জামান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ হাসান ও নিশান তরফদার।