দামুড়হুদার মুন্সিপুর সীমান্তে গুলিতে গরুব্যবসায়ী নিহত : বিএসএফ’র অস্বীকার

 

দর্শনা অফিস/দামুড়হুদা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার মুন্সিপুর সীমান্তে আহাদ আলী হালসোনা (৩৩) নামের এক গরুব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র গুলিতে সে নিহত হয়েছে বলে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে। বিজিবির আহ্বানে গতকাল বিকেলে পতাকা বৈঠকে বিএসএফ হত্যার কথা অস্বীকার করলেও বিজিবির তরফে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। গুলিবিদ্ধ লাশ বাংলাদেশ অভ্যান্তরেই ছিলো।

জানা গেছে, গত রোববার রাতে আহাদ আলীসহ ৭/৮ জন গরু ব্যবসায়ী গরু আনতে মুন্সীপুর সীমান্তের ৯৩ নম্বর পিলার অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেন। এ সময় ভারতের মহাখোলা ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ তাদের দেখে ৪/৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহাদ আলী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। পালিয়ে রক্ষা পান আহাদ আলীর অন্য সহযোগীরা। নিহত গরু ব্যবসায়ী আহাদ আলী উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের মাঝপাড়ার আয়ুব আলী হালসোনার ছেলে। তার লাশ তারই সহযোগীরা উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে রেখে যায়। সকালে দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই এমদাদ হোসেন নিহতের বাড়ি কুতুবপুরে যান এবং লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয়। পরে বেলা ১২টার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলা সদর হাসপাতালমর্গে পাঠায়। বিকেলে ময়নাতদন্তের পর নিজ গ্রামের কবরস্থানে নিহতের দাফন সম্পন্ন করা হয়। নিহত গরুব্যবসায়ী আহাদ ৩ কন্যা সন্তানের জনক এবং ২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে সকলের বড়।

কুতুবপুর গ্রামবাসী জানায়, রাত আনুমানিক ৩টার দিকে বর্ডারে গুলির শব্দ পায়। গ্রামবাসী আরো জানান, নিহত গরুব্যবসায়ী আহাদ আলী খুব ছোট বেলায় তার নানা বাড়ি ভারতের হাটখোলা গ্রামেই থাকতো। পরবর্তীতে সে হাটখোলা গ্রামে বিয়েও করে। তার স্ত্রীর নাম ঝর্না। শশুরের নাম নিয়ামত আলী। সে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হওয়ার পর ভোররাতে তার মামাতো ভাইসহ ৪/৫ জন ভারতীয় নাগরিক তার মৃতদেহ ঘাড়ে করে কুতুবপুরে রেখে যায়। এদিকে এলাকার সচেতনমহল প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ভারতীয় অভ্যন্তর থেকে তার লাশ ঘাড়ে করে বাংলাদেশে রেখে গেলো অথচ বিজিবি সদস্যরা কেন ঠিক পেলো না? মুন্সীপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা ওই সময় কোথায় ছিলো? এ বিষয়ে মুন্সীপুর বিজিবি ক্যাম্পের ইনচার্জ নাজমুল হোসেন জানান, ঘটনার সময় আমাদের টহলদল কুতুবপুর মাঠে চোরাচালান অভিযানে ছিলো। ঘটনাটি জানার পর টহলদল গিয়েছিলো কিন্ত লাশ না পেয়ে ফিরে আসে। পরে খবর পেয়ে নিহতের বাড়িতেও গিয়েছিলো।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক লে. কর্নেল এসএম মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানান, অদ্য ২৪ মার্চ ২০১৪ তারিখ আনুমানিক ৩ ঘটিকায় অত্র ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ মুন্সিপুর বিওপি থেকে ৫০০ গজ দূরে কুতুবপুর নামক স্থানে মো. আহাদ আলী হালসোনা (৩২),  পিতা- মো. আইয়ুব আলী হালসোনা, গ্রাম-কুতুবপুর, পো.-পিরপুরকুল্লা, থানা-দামুড়হুদা, জেলা-চুয়াডাংগা এর গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়।

বিভিন্নসূত্রে জানা যায় যে, বর্ণিত মৃত ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক ও ভারতে বসবাস করে (অসমর্থিত সূত্র) এবং তার পিতা-মাতা বাংলাদেশে বসবাস করে। বর্তমানে লাশ তার পিতা-মাতার বাড়িতে রয়েছে এবং বিষয়টি দামুড়হুদা থানা কর্তৃক তদন্তনাধীন রয়েছে।