দামুড়হুদার মদনা স্কুলে প্রাইভেট না পড়ায় শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখম

শিক্ষক ভুট্টোর শাস্তির দাবিতে স্কুল ঘেরাও : কমিটির জরুরি বৈঠকে তদন্ত কমিটি গঠন
দর্শনা অফিস: শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়া যেনো বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। দর্শনাসহ আশপাশ এলাকার প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ানো যেনো পুঁজিতে পরিণত করেছে। স্কুলে পড়ানোর চেয়ে প্রাইভেট পড়ানোতে অতি আগ্রহী হয়ে পড়েছেন অতিলোভী এক শ্রেণির শিক্ষক। প্রাইভেট পড়তে হবে বাধ্যতামূলক, অন্যথায় বহু শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অকৃতকার্য করানোর নজিরও রয়েছে কিছু অসাধু শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। প্রাইভেট পড়িয়ে বেশ কয়েকজন আলোচিত শিক্ষক রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। সরকারের নিষেধাজ্ঞা তাদের কাছে যেনো থোড়ায় কেয়ার? কে দেখবে শিক্ষার্থীদের এ দূর্দশা? শিক্ষকদের কাছে জিম্মি এখন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। প্রতিকারের দাবি যখন সর্বমহলের ঠিক তখনই ঘটলো দামুড়হুদার মদনায় অঘটন। শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখম করে তোপের মুখে পড়েছেন আলোচিত শিক্ষক হাসানুজ্জামান ভুট্ট। ঘটনাটি ঘটেছে দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুর-মদনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ওই বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক অবস্থা নড়বড়ে হওয়ার কারণেই এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর। মদনা মাঝপাড়ার জয়নাল আবেদীনের ছেলে মদনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র রিমন হোসেন মাস কয়েক আগে প্রাইভেট পড়তো ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসানুজ্জামান ভুট্টোর কাছে। হঠাৎ করেই ভুট্টোর কাছে প্রাইভেট না পড়ার কারণে রিমনের উপর ক্ষেপে ছিলেন ওই শিক্ষক। গত রোববার বিদ্যালয়ে রিমনকে একা পেয়ে বেধড়কভাবে মারধর করেন শিক্ষক ভুট্ট। যা বিদ্যালয়ের গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা ছিলো। এ ঘটনায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিসহ প্রধান শিক্ষকের কাছে নালিশ করা হলে আজ নয় কাল বলে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে রিমনের অভিভাবকদের ঘোরানো হয়। এক পর্যায়ে গতকাল বুধবার বেলা ১১ টার দিকে গ্রামবাসী শিক্ষক ভুট্টোর শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয় ঘেরাও করে। গ্রামবাসীর চাপের মুখে পরিচালনা কমিটি জরুরি বৈঠক করতে বাধ্য হয়। বৈঠকে ঘটনাটি তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে রফিকুল ইসলাম বিশ্বাসকে। এদিকে ভুট্টোর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও শিক্ষা অফিসারের কাছে। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মুনিম লিংকন বলেছেন, অভিযোগপত্র এখনও হাতে পায়নি। পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে শিক্ষক ভুট্টোর দোষ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার জন্য সুপারিশ করা হবে সংশ্লিষ্ট বিভাগে। সেই সাথে মদনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষকই প্রাইভেট পড়াতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কমিটির বৈঠকে। প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম বলেন, ঘটনাতো তেমন জটিল নয়, তবুও দেখছি কি ঘটেছে।