দামুড়হুদার নতিপোতা ও নবগঠিত নাটুদহ ইউনিয়নে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ

উৎফুল্ল এলাকাবাস : সম্ভাব্য প্রার্থীদের দোড়-ঝাপ শুরু

 

বখতিয়ার হোসেন বকুল: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা ও নবগঠিত নাটুদহ ইউনিয়নের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ওয়ার্ড বিভাজন, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ ও হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুতসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে উপজেলা নির্বাচন অফিস। এ দুটি ইউনিয়নের দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পত্রও প্রেরণ করা হয়েছে বলে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে।

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দুটি ইউনিয়নেই সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ইতোমধ্যেই দোড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন। পুনর্গঠিত নতিপোতা ইউনিয়নে ৬ জন এবং নবগঠিত নাটুদাহ ইউনিয়নে ৬ জন মোট ১২ জন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম জানা গেছে। এর মধ্যে কেউ কেউ বেশ আগে ভাগেই শুরু করেছেন গণসংযোগ। ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। চাচ্ছেন ভোট, দোয়া ও সমর্থণ। এদিকে এ দুটি ইউনিয়নে দীদিন পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এমন খবর এলাকাবাসী মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তাদের চোখে মুখে উৎফুল্লভাব লক্ষ্য করা গেছে।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. আবু দাউদ জানান, নতিপোতা ও নবগঠিত নাটুদহ ইউনিয়নের বিভাজন অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইনগত কোনোবাধা না থাকায় এ দুটি ইউনিয়নে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইতোধ্যেই ওয়ার্ড বিভাজন, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ ও হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুতসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গত ১০ ফেব্রুয়ারি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে অনুমতিপত্র হাতে পাওয়ার পরপরই ভোট গ্রহণের কাজ শুরু করা হবে। আগামী মার্চের শেষ অথবা এপ্রিলের প্রথম সপ্তায় ভোটগ্রহণ করা হতে পারে বলেও তিনি জানান।

তিনি আরো জানান, খলিশাগাড়ি ও গোচিয়ারপাড়াকে ১ নং ওয়ার্ড, জগন্নাথপুরকে ২ নং ওয়ার্ড, বোয়ালমারী ও ফকিরপাড়াকে ৩ নং ওয়ার্ড, চারুলিয়া পশ্চিমপাড়া ও নাটুদহকে ৪ নং ওয়ার্ড, চারুলিয়া পূর্বপাড়া ও দুলালনগরকে ৫ নং ওয়ার্ড, চন্দ্রবাস উত্তরপাড়াকে ৬ নং ওয়ার্ড, চন্দ্রবাস দক্ষিনপাড়াকে ৭ নং ওয়ার্ড, ছাতিয়ানতলাকে ৮ নং ওয়ার্ড এবং কুনিয়াকে ৯ নং ওয়ার্ড হিসেবে পূর্নবিন্যাস করে ‘নাটুদহ’ নামে নতুন ইউনিয়ন এবং ছুটিপুর, বিলদলকা ও মরগাংনীকে ১ নং ওয়ার্ড, পোতারপাড়াকে ২ নং ওয়ার্ড, ভগিরথপুরকে ৩ নং ওয়ার্ড, নতিপোতাকে ৪ নং ওয়ার্ড, কালিয়াবকরিকে ৫ নং ওয়ার্ড, রুদ্রপুরকে ৬ নং ওয়ার্ড, হেমায়েতপুর, বেড়বাড়ি ও করিমপুরকে ৭ নং ওয়ার্ড, হোগলডাঙ্গা উত্তরপাড়াকে ৮ নং ওয়ার্ড ও হোগলডাঙ্গা দক্ষিনপাড়াকে ৯ নং ওয়ার্ড হিসেবে পুনর্বিন্যাস করে নতিপোতা ইউনিয়নকে পুনর্গঠিত করা হয়েছে।

পুনর্গঠিত নতিপোতা ইউনিয়নে হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৪৩৩ জন। এর মধ্যে ৬ হাজার ৬৫৭ জন পুরুষ ও ৬ হাজার ৭৮৯ জন মহিলা এবং নবগঠিত নাটুদহ ইউনিয়নে হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ২১৬ জন। এরমধ্যে ৬ হাজার ৫৭২ জন পুরুষ ও ৬ হাজার ৬৪৪ জন মহিলা ভোটার রয়েছেন।

                পুনর্গঠিত নতিপোতা ইউনিয়নে মোট ৬ জন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম জানা গেছে। এর মধ্যে নতিপোতা গ্রামের মৃত হুরমত আলীর ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক আজিজুল হক, বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির সভাপতি হোগলডাঙ্গা গ্রামের মৃত মহিউদ্দিন সরকারের ছেলে মনিরুজ্জামান মনির, সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা নতিপোতা গ্রামের মৃত ডাক্তার হেকমত আলীর ছেলে কামরুজ্জামান টুনু, নতিপোতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভগিরথপুর গ্রামের মৃত বরকত আলীর ছেলে জাফর আলী, প্যানেল চেয়ারম্যান ভগিরথপুর গ্রামের আ. রহমানের ছেলে আবু তালেব ও হোগলডাঙ্গা গ্রামের মৃত ডা. ইসরাইল হোসেনের ছেলে রবিউল হোসেনের নাম শোনা গেলেও এলাকাবাসীর মধ্যে কেউ কেউ বলেছেন জাফর আলী ও কামরুজ্জামান টুনুর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাই বেশি। অপরদিকে নবগঠিত নাটুদহ ইউনিয়নেও চেয়ারম্যান পদে মোট ৬ জন সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা নাটুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় জগন্নাথপুর বালিকা মাদরাসার সভাপতি জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত হামিদুল্লাহ তরফদারের ছেলে ইয়াছনবী, চারুলিয়া গ্রামের তরুণ সমাজসেবক শফিকুল ইসলাম শফি, সাবেক চেয়ারম্যান চন্দ্রবাস গ্রামের ফজলুর রহমান, একই গ্রামের মৃত কলিম উদ্দিনের ছেলে সাবেক মেম্বার আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হালিম, দুলালনগর গ্রামের মৃত সৈয়দ রহমান খানের ছেলে মাসুম আলী খাঁন ও চন্দ্রবাস গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলী চেয়ারম্যানের ছেলে আ.লীগ নেতা হাসানুজ্জামান পিন্টুর নাম বেশ জোরেশোরেই শোনা যাচ্ছে।