দামুড়হুদার নতিপোতা ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মিজান হত্যামামলা

 

ইউপি চেয়ারম্যান মনির.লীগ নেতা আজিজ ও মোমিন মাস্টারসহ ১৪জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি চার্জশিট

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা ইউনিয়নের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট আদালতে নথিভুক্ত হয়েছে। ঘটনার দীর্ঘ চার বছর পর মামলাটির তদন্ত শেষে সিআইডি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এমামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ২৬ আগস্ট।

গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (২)’র বিচারক মো. তৈয়ব আলীর আদালতে মামলার ধার্য দিনে মামলাটি উপস্থাপন করা হলে আদালতের বিচারক সিআইডির দাখিলকৃত চার্জশিট আমলে নিয়ে মামলায় নথিভুক্ত করেন এবং মামলার বাদী ডলি খাতুনকে নোটিশ করার আদেশ দেন। মামলার পরবর্তী ধার্যদিনে বাদীর উপস্থিতিতে চার্জশিট পর্যালোচনা করা হবে।

২০১০ সালের ১২ অক্টোবর রাতে নতিপোতা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান স্বপরিবারে হোগলডাঙ্গা গ্রামে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওইসময় একদল সন্ত্রাসী দরজা জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে। স্ত্রী ডলি খাতুন বাদী হয়ে দামুড়হুদা থানায় অজ্ঞাত পরিচয় সন্ত্রাসীদের নামে একটি হত্যামামলা দায়ের করেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শাহজাহান শেখ,পরিদর্শক রাম প্রসাদ ভক্ত, উপপরিদর্শক জিয়াউর রহমান এবং উপপরিদর্শক জিয়াউল হক পর্যায়ক্রমে মামলাটি তদন্ত করেন। সর্বশেষ গত বছরের ২০ আগস্ট মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছ থেকে সিআইডিতে বদলি করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক শরীফ মঞ্জুর গত ১৭ জুন ১৪ জন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক দুটি চার্জশিট দাখিল করেন। হত্যা মামলাটি দ.বি. ৪৪৭/৪৪৮/৪২৭/৩০২/৩৪/৩৮০/৩৭৯ ধারা ও অপর চার্জশিটটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ১৯০৮ সংশোধনী ২০০২ এর ৩/৬ ধারা।

আলোচিত মামলার ১৪ জন আসামিরা হলেন, হোগলডাঙ্গা নুতনপাড়ার মৃত হানিফ মণ্ডলের ছেলে রবিউল ইসলাম (৪০), দামুড়হুদার দশমীপাড়ার মৃত মহি উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে রোকনুজ্জামান (৩৫),ভগিরতপুরের মৃত আয়ুব আলীর ছেলে মাসুদ রানা (৩০), হোগলডাঙ্গা নতুনপাড়ার মৃত মো. আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪২), হোগলডাঙ্গা উত্তরপাড়ার মৃত তুফান আলী মণ্ডলের ছেলে আব্দুল হান্নান (৪৩), হোগলডাঙ্গা নতুনপাড়ার আকবর আলী মণ্ডলের ছেলে জমির উদ্দিন (৩০), নতিপোতা গ্রামের হারেজ আলী মণ্ডলের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩০), হোগলডাঙ্গার ফকির চাঁদ মোল্লার ছেলে আফতাব মোল্লা (৪২), দামুড়হুদা দশমীপাড়ার মৃত মহি উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে নতিপোতা ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মনিরুজ্জামান মনির (৪০), হোগলডাঙ্গা নতুনপাড়ার মৃত ইছাহাক মণ্ডলের ছেলে আসাদুল হক মণ্ডল (৪০), মেহেরপুর নতুন দরবেশপুরের মৃত মোজাম্মেলের ছেলে হামিদুল ইসলাম হামিদ (৪৮), হোগলডাঙ্গার গোলাম হোসেনের ছেলে আনারুল (৩৫), নতিপোতা গ্রামের মজদেল পাকার ছেলে মমিন মাস্টার(৪৭) ও নতিপোতা গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে আব্দুল আজিজ (৪৭)। এ মামলার তিন আসামি আনারুল, মমিন মাস্টার ও আব্দুল আজিজ ছাড়া সকলেই আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মিজানুর রহমান মিজান নতিপোতা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ছিলেন। নির্বাচিত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের পট পরিবর্তনের সময় আত্মগোপনে চলে গেলে পরিষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মিজান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান। মিজানুর রহমান খুনের পর তার আসন শূন্য দেখানো হয়নি এবং সেখানে উপনির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়নি। চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের আদেশ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।