দামুড়হুদার নতিপোতা ইউনিয়নকে বিভক্ত করে নাটুদাহ নামে নতুন ইউনিয়ন গঠিত

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার নতিপোতা ইউনিয়নকে বিভক্ত করে নাটুদাহ নামে নতুন ইউনিয়ন গঠন করা হয়েছে। গত দুমাস আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হলেও এখনো পর্যন্ত ওই ইউনিয়নে কোনো প্রশাসক নিয়োগ করা হয়নি। জরুরি ভিত্তিতে নতুনভাবে গঠিত ওই ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগ করতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এলাকার জনসাধারণ।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বৃহত্তর এলাকা নিয়ে গঠিত নতিপোতা ইউনিয়নকে বিভক্ত করে দুটি ইউনিয়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট এলাকাবাসী দীর্ঘদিন থেকে জোর দাবি জানিয়ে আসছিলো। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সহযোগিতায় নতিপোতার খলিশাগাড়ি, গোচিয়ারপাড়াকে ১ নং ওয়ার্ড, জগন্নাথপুরকে ২ নং ওয়ার্ড, বোয়ালমারী ও ফকিরপাড়াকে ৩নং ওয়ার্ড, চারুলিয়া পশ্চিমপাড়া ও নাটুদাহকে ৪নং ওয়ার্ড, চারুলিয়া পূর্বপাড়া ও দুলালনগরকে ৫নং ওয়ার্ড, চন্দ্রবাস উত্তরপাড়াকে ৬নং ওয়ার্ড, চন্দ্রবাস দক্ষিণপাড়াকে ৭নং ওয়ার্ড, ছাতিয়ানতলাকে ৮নং ওয়ার্ড এবং কুনিয়াকে ৯নং ওয়ার্ডে পুনর্বিন্যাস করে ‘নাটুদাহ’ নামে নতুন ইউনিয়ন এবং ছুটিপুর, বিলদলকা, মরগাংনীকে ১নং ওয়ার্ড, পোতারপাড়াকে ২নং ওয়ার্ড, ভগীরথপুরকে ৩নং ওয়ার্ড, নতিপোতাকে ৪নং ওয়ার্ড, কালিয়াবকরিকে ৫নং ওয়ার্ড, রুদ্রপুরকে ৬নং ওয়ার্ড, হেমায়েতপুর, বেড়বাড়ি ও করিমপুরকে ৭নং ওয়ার্ড, হোগলডাঙ্গা উত্তরপাড়াকে ৮নং ওয়ার্ড ও হোগলডাঙ্গা দক্ষিণপাড়াকে ৯নং ওয়ার্ড হিসেবে নতিপোতা ইউনিয়ন পুনর্গঠিত করে গত ২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট জেলা প্রশাসক বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক প্রেরিত পত্র প্রাপ্তির পর স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের গত ২০১১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তারিখের ১০৪নং পত্রের নির্দেশক্রমে এবং স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) সংশোধন আইন ২০১০ এর ১১ ধারা মোতাবেক জেলা প্রশাসকের ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর নতিপোতা ইউনিয়নকে বিভক্ত করে নাটুদহ নামে একটি নতুন ইউনিয়ন গঠন ও নতিপোতা ইউনিয়নকে পূনর্গঠন করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে পত্র প্রেরণ করেন। জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরিত প্রেরিত পত্রটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত হয় এবং এ সংক্রান্তে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করা হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে দুমাসেরও বেশি সময় আগে গেজেট প্রকাশ করা হলেও অদ্যাবধি ওই নতুনভাবে গঠিত ইউনিয়নে কোনো প্রশাসক নিয়োগ করা হয়নি।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু দাউদ জানান, দুমাস আগে গেজেট প্রকাশ হলেও কেনো প্রশাসক নিয়োগ করা হচ্ছেনা তা আমার জানা নেই। তবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত ইউনিয়ন পরিষদ নীতিমালা অনুযায়ী স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ১৮নং অনুচ্ছেদে বলা আছে কোনো এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণার পর এর কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সরকারি একজন উপযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করিবে এবং এ আইনের বিধান মোতাবেক নির্বাচিত পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করবেন। তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) এর অধীন নিযুক্ত প্রশাসক ১২০ দিনের অধিক সময়কাল দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। আরো শর্ত থাকে যে, কোনো দৈব-দুর্বিপাকের কারণে এ আইনের বিধান মোতাবেক নির্বাচিত পরিষদ গঠন করা সম্ভব না হলে সরকার উক্ত মেয়াদে অনধিক ৬০ দিন বৃদ্ধি করতে পারবে।

সরকার প্রশাসককে কর্মসম্পাদনে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করতে পারবেন। তবে সদস্য সংখ্যা ৯ জনের অধিক হবেনা। প্রশাসক এবং কমিটির সদস্যবৃন্দ যথাক্রমে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, গেজেট প্রকাশ হয়েছে আমি শুনেছি। তবে এখনও হাতে পাইনি। তাছাড়াও ওই ইউনিয়ন বিভক্তকরণ সংক্রান্তে হাইকোর্টে একটি মামলা রয়েছে। এদিকে এ ইউনিয়নে প্রায় এক যুগ আগে নির্বাচন হলেও বিভিন্ন কারণে আর অনুষ্ঠিত হয়নি নির্বাচন। ফলে দীর্ঘদিন ভোট থেকে বঞ্চিত এলাকার ভোটাররা রয়েছেন অনেকটাই মুখিয়ে। কবে হবে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ?