দামুড়হুদার জয়রামপুরে সন্ধ্যারাতে বাড়ির গেটের সামনে থেকে গৃহবধূকে অপহরণ?

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার জয়রামপুর গাতিরপাড়ায় সন্ধ্যারাতে বাড়ির গেটের সামনে থেকে এক সন্তানের জননী কনা (২৬) নামের এক গৃহবধূকে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। চাঁদার টাকা না পেয়ে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অপহৃতের পরিবারের লোকজন দাবি করলেও পুলিশ বলেছে অন্য কথা। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ওই পাড়ার এক যুবককে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে। গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের জয়রামপুর গাতিরপাড়ার রুস্তম আলীর ছেলে কালুর সাথে উপজেলার চিৎলা গ্রামের ইন্নালের মেয়ে কনার আনুমানিক ১২ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে রয়েছে ১০ বছর বয়সী মেয়ে ঈশিতা। গৃহবধূ কনা গতকাল শনিবার বিকেলে পিতার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি জয়রামপুরে আসে। রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বাড়ির পাশেই মোবাইলে কথা বলার জন্য আসে। এরপর থেকে সে নিখোঁজ হয়ে যায়। কনার স্বামী কালুসহ পরিবারের লোকজন পুরোপাড়া তন্নতন্ন করে কোথাও খুঁজে না পেয়ে গ্রামের মসজিদে মাইকিং শুরু করেন। খবর দেয়া হয় পুলিশে। ঘটনা জানার সাথে সাথে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি শিকদার মশিউর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুলিশ ও গ্রামের লোকজন লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে বিভিন্ন আগানবাগান খুঁজেও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীর দেয়া তথ্যের ওপর নির্ভর করে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে একই পাড়ার রেজাউলের ছেলে লিপুকে পুলিশ রাতেই থানায় নিয়ে এসে শুরু করে জিজ্ঞাসাবাদ।

এদিকে অপহৃত গৃহবধূর পরিবারের লোকজন জানান, গত ৯ মে শুক্রবার তাদের বাড়িতে একটি উড়ো চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে লেখা আছে জয়রামপুর গাতিরপাড়া থেকে মোট ২০ জনকে তুলে নেয়া হবে। তোরা যদি জানে বাঁচতে চাস তাহলে কালু, কালুর পিতা রুস্তম, রুস্তমের ভাই শামসুল, আব্দুল্লাহ, নুরুছদ্দিন ও বায়েজিদ এ ৬ জন মিলে মোট ২ লাখ টাকা চাঁদা দিবি। আগামী বুধবার রাত ১২টার পর একই পাড়ার মজিবারের আমবাগানে কালু একা টাকা দিয়ে আসবে। কালুর পরিবার বিষয়টি প্রথমে চেপে থাকলেও পরে হাউলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকনকে জানান। তিনি বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে দামুড়হুদা থানার ওসিকে জানান। পরদিন থেকে শুরু হয় গ্রামপাহারা। গ্রামপাহারা শুরুর প্রথম দিন অর্থাৎ গত সোমবার বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়ে। দুর্বৃত্তরা ওই দিনই আবারও ওই কালুর বাড়ি একটি চিঠি দেয়। তাতে লেখা আছে আমরা তোদের কাছে চাঁদা চেয়েছি তোরা তা বাইরে বলেছিস এবং গ্রামপাহারা শুরু করেছিস। তাতে কোনো লাভ হবে না, বরং আগে ২ লাখ টাকা চেয়েছিলাম এখন দিবি ৩ লাখ টাকা। নইলে কাউকে জানে বাঁচতে দেবো না। ইতি কুড়ুলগাছির সবুজ। গত বুধবার ওই চাঁদার টাকা দাবির শেষ সময় পার হওয়ার পর গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে এ অপহরণের ঘটনা ঘটলো।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি শিকদার মশিউর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার কাছে অপহরণ বলে মনে হচ্ছে না। নেপথ্যে অন্য কিছু থাকতে পারে। প্রতিবেশীদের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ওই পাড়ার এক যুবককে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ রিপোর্ট লেখা অবধি গতরাত আড়াইটা পর্যন্ত ঘটনার কোনো সুরাহা হয়নি।