দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় আত্মনির্ভরশীল ট্রাস্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ

গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা : অফিসে ঝুলছে তালা

 

দর্শনা অফিস/কুড়লগাছি প্রতিনিধি: দামুড়হুদার বিভিন্ন স্থানে হরেক নামে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে এনজিও সংস্থ্যা। চমকপ্রদ নামের আড়ালে এনজিও সংস্থাগুলো লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি হচ্ছে লাপাত্তা। এরকমই একটি এনজিও সংস্থার নাম আত্মনির্ভরশীল। উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের হরিশচন্দ্রপুরের হোসেন আলীর ছেলে বহুল আলোচিত হত্যা মামলার আসামি এম আলাউদ্দিন ওরফে মিলন আত্মনির্ভরশীল নামে একটি এনজিও সংস্থা খোলেন। সংস্থার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কি-না তা জানা না গেলেও মাস তিনেক আগে কার্পাসডাঙ্গা জনতা ব্যাংকের নিচে প্রধান কার্যালয় খুলে বসেন। সরলসোজা গ্রাহকদের মোটা অঙ্কের লাভের লোভ দেখিয়ে শুরু করে প্রতারণা। অফিসে লোকবল নিয়োগের নামেও স্থানীয় যুবকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে মিলনের বিরুদ্ধে। প্রতারণার ক্ষেত্রে মিলন একান্ত সহযোগিতা হিসেবে বেছে নেন ওই গ্রামেরই আরেক আলোচিত যুবক জাহাঙ্গীরকে। দুজন মিলে শুরু করেন প্রতারণা। কার্পাসডাঙ্গা, কুড়ুলগাছিসহ আশপাশ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গ্রাহক তৈরি করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, গ্রাহক সাধারণের কাছ থেকে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়াসহ নানা রকমের লোভ লালসা দেখিয়ে টাকা হাতি নেয়া হচ্ছে। আরামডাঙ্গার আহসান আলীকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে ৮ হাজার, পল্টু কাছ থেকে ২০ হাজার ঋণের কথা বলে ৩ হাজার, কার্পাসডাঙ্গার নাসিরকে ৪০ হাজার টাকা ঋণের কথা বলে ৩ হাজার, আলামিনকে ১০ হাজার টাকা দেয়ার কথা বলে ১ হাজার, নাজমুলকে ২০ হাজার টাকার কথা বলে ২ হাজার, বাসারের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা দেয়ার কথা বলে ১ হাজার, কুড়ুলগাছির শরিফুলকে ৫০ হাজার টাকা ঋণের কথা বলে ৭ হাজার এভাবে অসংখ্য গ্রাহককে অল্প সুদে ঋণ দেয়ার লোভ দেখিয়ে প্রায় ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অনেক গ্রাহককেই ইসলামী ব্যাংকের চুয়াডাঙ্গা শাখার ৯৮৫ হিসাব নম্বরের চেকে আত্মনির্ভরশীল ট্রাস্টের পক্ষে জনৈক ব্যক্তির স্বাক্ষরিত বিভিন্ন অঙ্কের টাকা লেখা চেক দেয়া হয়েছে। গ্রাহকরা চেক হাতে নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। রাগে-ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রাহক সাধারণরা। বেশ কয়েকদিন ধরে গ্রাহকরা কার্পাসডাঙ্গাস্থ প্রধান কার্যালয় বন্ধ দেখে খুঁজতে শুরু করে প্রতারকদের। এরই মধ্যে ব্যাংকের ওই হিসাব নম্বরে টাকা না থাকায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রাহকরা। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে গ্রাহকরা কার্পাসডাঙ্গাস্থ প্রধান কার্যালয়ে হাজির হয়ে তালার ওপর তালা ঝুলিয়ে দেন প্রতারিত গ্রাহক সাধারণরা।

এদিকে প্রতারক মিলন ও জাহাঙ্গীরসহ সংস্থার সাথে সংশ্লিষ্টরা দিয়েছেন গা ঢাকা। পত্রিকায় সংবাদ বন্ধের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে পাঁয়তারা চালানো হয়। তবে এলাকাবাসী অভিযুক্ত প্রতারক মিলন ও জাহাঙ্গীরসহ চক্রের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন।