দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন

?

সভাপতি পদে টিপু সুলতান সাধারণ সম্পাদক মিকা
দর্শনা অফিস: দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে। গত দুবারের নির্বাচনের কিছুটা ব্যতিক্রম ঘটলো এবার। সভাপতি পদে নতুন মুখ টিপু সুলতান নির্বাচিত হলেও সাধারণ সম্পাদক পদে আবারও নির্বাচিত হয়েছেন মিকা। অন্যান্য পদের ক্ষেত্রেও এবার ঘটেছে পরিবর্তন। দিনভর বাজারের ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে অংশগ্রহণ করেছে। দোকান মালিক সমিতির ৯৯৩ ভোটের মধ্যে ৯৬৪ ভোট পোল হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাররা গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণের নির্ধারিত সময় থাকলেও ভোটারদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে তা ব্যত্যয় ঘটে। ফলে ভোটগ্রহণ শেষ হতে বিকেল ৫টা বেজে যায়। সাড়ে ৫ টা থেকে শুরু হয় ভোট গণনা। দর্শনা ডিএস ফাযিল (ডিগ্রি) মাদরাসা ভোট কেন্দ্রের ৪টি কক্ষে ৪টি বুথে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করেন নির্বাচন পরিচালনা পর্ষদ। এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে টিপু সুলতান (চেয়ার) প্রতীকে ৫৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন (মই) প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬২ ভোট এবং হারুন অর রশিদ (হাতপাখা) প্রতীকে ভোট পেয়েছেন মাত্র ১৭ ভোট। সভাপতি পদে ২১ ভোট বাতিল হয়েছে। সহ-সভাপতি পদে নুরুল ইসলাম নুরু (মোরগ) প্রতীকে ৪৬২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন রতন (কলস) প্রতীকে পেয়েছেন ৪৪৪ ভোট ও নতুন প্রার্থী আ. হান্নান (মাছ) প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ২১ ভোট। এ পদে ৩৯ ভোট বাতিল হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক পদে সাবির হোসেন মিকা (চাঁদতারা) প্রতীকে ৪০৫ ভোট পেয়ে ৩য় বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নবাগত প্রার্থী মনজুর মোর্শেদ (ছাতা) প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬২ ভোট এবং গত দুবারের পরাজিত প্রার্থী সেলিম মেহমুদ লিটন (বাইসাইকেল) প্রতীকে পেয়েছেন ১৮০ ভোট। ১৮ ভোট বাতিল হয়েছে। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে আরিফুর রহমান বাবু (হরিণ) প্রতীকে ২৯০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আক্তারুল জোয়ার্দ্দার (বালতি) প্রতীকে পেয়েছেন ২৩৬ ভোট, মামুন হোসেন (আনারস) প্রতীকে ২২৫ এবং আব্দুল করিম (হাতঘড়ি) প্রতিকে পেয়েছেন ১৯০ ভোট। এ পদে ২৬ ভোট বাতিল হয়েছে। দফতর সম্পাদক পদে সোহাগ হোসেন (হারিকেন) প্রতীকে ৪২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিল্লাল হোসেন (টেবিল) প্রতীকে পেয়েছেন ২৮০ ভোট ও বর্তমান দফতরর সম্পাদক মিজানুর রহমান সরকার (গাড়িরচাকা) প্রতীকে পেয়েছেন ২৩৩ ভোট। এ পদে ২৩ ভোট বাতিল হয়েছে। কোষাধ্যক্ষ পদে বিল্লাল হোসেন (টিউবওয়েল) প্রতীকে ৫৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান ক্যাশিয়ার মোখলেসুর রহমান মৃধা (দেয়ালঘড়ি) প্রতীকে পেয়েছেন ৩৮৫ ভোট। ১৯ ভোট বাতিল হয়েছে। ৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪ নং ওয়ার্ডে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন জামাল উদ্দিন। ১ নং ওয়ার্ডে শরীফ উদ্দিন (পিয়ারা) প্রতীকে ১০২ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাত্তার হোসেন (কাঠাল) প্রতীকে পেয়েছেন ৪৩ ভোট। বাতিল হয়েছে ৩ ভোট। ২ নং ওয়ার্ডে আ. আলীম (সেলাইমেশিন) প্রতীকে ৯১ ভোট পেয়ে ৩য় বারের মতো পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মাসুদুর রহমান (মোবাইল ফোন) প্রতীকে পেয়েছেন ৪৫ ভোট। বাতিল হয়েছে ৩ ভোট। ৩ নং ওয়ার্ডে আব্দুল মিয়া (বৈদ্যুতিক পাখা) প্রতীকে ৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ. মোমিন (টেলিভিশন) প্রতীকে ৩৮ ভোট ও মো. রাজু (মোটর সাইকেল) প্রতীকে পেয়েছেন ২১ ভোট। ২ ভোট বাতিল হয়েছে। ৫ নং ওয়ার্ডে হাসানুজ্জামান হাসান (বই) প্রতীকে ৯৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ওয়াসিম (ফুটবল) প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩ ভোট। বাতিল হয়েছে ২ ভোট। ৬ নং ওয়ার্ডে আজিজুল ইসলাম (আম) প্রতীকে ৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। একমাত্র নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাফিজুর রহমান (বাঘ) প্রতীকে পেয়েছেন ৫০ ভোট। বাতিল হয়েছে ৪ ভোট। ৭ নং ওয়ার্ডে হাবিব শিকদার (জবাফুল) প্রতীকে ১২৩ ভোট পেয়ে ৩য় বারের মতো পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাইদুর রহমান (উড়োজাহাজ) প্রতীকে ২২ ভোট ও এবং মতিয়ার রহমান মতি (ময়ূরপাখি) প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ২ ভোট। বাতিল হয়েছে ৭ ভোট। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই সমর্থক ও কর্মীদের উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে। গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচিত প্রার্থীদের জয়ের মালা পরিয়ে মিছিলে মিছিলে মুখরিত করে তোলে গোটা দর্শনা। এদিকে দর্শনা দোকান মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে বরাবরের মতো নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হাজি আজির বক্স। অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন হাজি আকমত আলী, হাজি জয়নাল আবেদীন, গোলাম ফারুক আরিফ, আশরাফুল আলম উলুম, সাংবাদিক হানিফ মন্ডল ও অ্যাড. আফতাব উদ্দিন।