দর্শনা বাসস্ট্যান্ড মাস্টারপাড়ায় বিদ্যুত স্পৃষ্ট স্ত্রী ও মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে জীবন দিলেন কৌতুক শিল্পী রুহুল

 

ঞ্চে যে দর্শক হাসাতেন জীবন দিয়ে কাদালেন সবাইকে

দর্শনা অফিস: স্ত্রী ও সন্তানকে বিদ্যুত স্পৃষ্ট থেকে রক্ষা করে নিজেই বিদ্যুত স্পৃষ্টে মারা গেছেন দর্শনা বাসস্ট্যান্ড মাস্টারপাড়ার রুহুল আমীন। শোকের সাগরে ভাসিয়ে গেলেন পরিবার-পরিজন ও ভক্ত-শ্রোতাদের। এলাকার জনপ্রিয় কৌতুক শিল্পী হিসেবে রয়েছে তার ব্যপক পরিচিতি। দিনমজুরের কাজ করেও আনন্দের কমতি ছিলো না রুহুলের। যেখানেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেখানেই রুহুলের উপস্থিতি দর্শক মাতিয়ে তুলতো। মজার মজার কৌতুক ও গান গেয়ে হাসাতেন তিনি। সেই হাস্যোজ্জ্বল রুহুল সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

জানা গেছে, গতকাল শনিবার সকাল ৬টার দিকে রুহুল আমীনের বড় মেয়ে দর্শনা আজমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী মিম প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। এ সময় মিম হাত-মুখ ধুয়ে ভিজে গামছা নেড়ে দিচ্ছিলো ঘরের বারান্দার জিআই তারের তৈরি আড়ায়। জিআই তারের সাথে বিদ্যুতের তারের সংযোগ ঘটে যাওয়ায় বিদ্যুত স্পৃষ্ট হয়ে পড়ে মিম। মিমের চিৎকারে মা পুষ্প এগিয়ে এসে মেয়েকে ছাড়াতে গিয়ে নিজেও বিদ্যুত স্পৃষ্ট হয়ে পড়েন। মা ও মেয়ের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় রুহুল আমীনের। ছুটে যান তাদের বাঁচাতে। তাদের গায়ের সাথে লেগে থাকা তার হাত দিয়ে ছাড়ান। এতে মা ও মেয়ে রক্ষা পেলেও বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে যান রুহুল। রুহুলকে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। দর্শনা বাসস্ট্যান্ড মাস্টারপাড়ার মৃত মওলা মিস্ত্রির ছেলে রুহুল আমীনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গোটা এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। লাশ বাড়িতে নেয়া হলে স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে বাতাস। জোহরবাদ জানাজা শেষে বেদনাবিধুর পরিবেশে দর্শনা বাসস্ট্যান্ড গোরস্তানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।