দর্শনা পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলী মুনছুর বাবুর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার

জীবননগর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দুজনের মধ্যে একজনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলী মুনছুর বাবু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অপরদিকে জীবননগর পৌরসভা নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগের অন্যতম বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি এক সভায় এ ঘোষণা দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রিটানিং কর্মকর্তা দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফরিদুর রহমানের কাছে প্রতিনিধির মাধ্যমে দর্শনা পৌর নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী আলী মুনছুর বাবু লিখিতভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন আলী মুনছুর বাবু। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণাও চালিয়ে আসছিলেন। গতকাল তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারপত্রটি হস্তান্তর করেন দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক জাকারিয়া আলম, আওয়মী লীগ নেতা গোলাম ফারুক আরিফ ও যুবলীগ নেতা আজিজুর রহমান বাবু এবং সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.আবু দাউদ। আলী মুনছুর বাবু চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের সহোদর দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বোর্ডের কাছে দর্শনা পৌরসভায় দলীয় মেয়র পদে মনোনয়ন চেয়ে দুইজন আবেদন করেন। তারা হলেন, দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান ও দফতর সম্পাদক আলী মুনছুর বাবু। ১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বাছাই কমিটি মতিয়ার রহমানকে দলীয় মনোনয়ন দেন। ৩ ডিসেম্বর মতিয়ার রহমান দলীয় প্রার্থী হিসেবে এবং আলী মুনছুর বাবু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রিটানিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন । এরপর থেকে দুজনই গণসংযোগ শুরু করেন।
এদিকে গত বুধবার আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার প্রসঙ্গে দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই এবং আলী আজগার টগর এমপির পরামর্শে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে জীবননগর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দু বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে প্রার্থী রফিকুল ইসলাম রফি তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পোষ্টঅফিসপাড়ায় অবস্থিত তার নির্বাচনী কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের এক সমাবেশে এ ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার পাশাপাশি তিনি দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নৌকা প্রতীকে কাজ করার কথাও বলেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি গতকাল জীবননগরের জেলা পরিষদ ডাকবাংলো চত্বরে আয়োজিত এক সভায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করেছেন বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, জীবননগরে পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হতে মেয়র পদে ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। এরা হলেন- পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বর্তমান পৌর কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম রফি। এর মধ্যে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন নাসির উদ্দিন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা না হলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। দলীয় এ ঘোষণা বা আহ্বানে সাড়া দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বর্তমান পৌর কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম রফি গতকাল রাতে নেতাকর্মীদের এক সমাবেশে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সাথে তিনি কর্মী বাহিনী নিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার কথাও বলেন। আজ শুক্রবার তিনি অফিসিয়ালভাবে তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে পারেন, এমন সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে দিকে দলের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রাতদ্বন্দ্বীতা করছেন। প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে গতকাল এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দলের প্রভাবশালীসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের নির্বাচন পরিচালনা করতে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনসহ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে দায়িত্ব বন্ঠন করা হয়েছে।