দরজার স্লাব পড়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রিয়া নিহত : দুই শিশুসহ ভাড়াটিয়া দম্পতি আহত

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মাস্টারপাড়ায় খেলার সাথীদের নিয়ে খেলতে গিয়ে বিপত্তি : মহল্লাবাসীর বিরূপ সমালোচনা

স্টাফ রিপোর্টার: ভাড়ায় দেয়া বাড়ির সদর দরজার অরক্ষিত স্লাব পড়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রিয়া নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে বাড়ির ভাড়াটে জুয়েল ও তার স্ত্রীসহ মহল্লার দুই শিশু। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মাস্টারপাড়ায় মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে। আহত দু শিশুর মধ্যে মাহির পা ভেঙেছে। মাথায় ও শরীরে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আব্দুল কাদের। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছান নবাগত চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ। তিনি স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমাবেদনা জানান।
স্থানীয়রা বলেছেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মাস্টারপাড়ার আব্দুল ওহাব মিয়া নিজে বসবাস করেন একইপাড়ার দোতলা বাড়িতে। তার অদূরেই পুরাতন বাড়ি ভাড়ায় দিয়েছেন তিনি। এই বাড়ির সদর দরজার যেনতেনভাবে করা। ১০ ইঞ্চি ইটের গাথুনির ওপর লম্বা চওড়া বিশাল (সাদ) স্লাব বসানো। পাশের পাঁচিল বেয়ে ওই দরজার ছাদের (স্লাবের) ওপর ওঠে মহল্লার কিছু শিশু প্রায়ই খেলা খেলতো। গতকালও বিকেলে খেলা খেলছিলো কয়েকজন। পাশের মসজিদের মিলাদ শুনে জিলাপি নিয়ে বাড়ি মায়ের কাছে রেখে দৌড়ে খেলার সাথীদের সাথে খেলতে শুরু করে রিয়া, কাদের ও মাহিসহ কয়েকজন। এমন সময় বাড়ির মালিক আসছে দেখে তড়িঘড়ি নামতে গিয়ে ছাদ উল্টে পড়ে। নিচে পড়ে মাথা থেতলে যায় রিয়ার। সে মূলত ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। তাকেসহ অন্যদের উদ্ধার করে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। চিকিৎসক রিয়াসহ আহতদের ভর্তি করান। ওয়ার্ডে নেয়ার পর রিয়াকে মৃত বলে ঘোষণা দেন।
রিয়া মাস্টারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। তার পিতা রাজীব চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের খন্দাকার মিস্টির দোকানের কর্মচারী। মাকেও মাঝে মাঝে মহল্লার বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করতে হয়। এ পরিবারের এক ছেলে এক মেয়ে। রিয়া ছিলো বড়। প্রতিবেশীর ভাড়ায় দেয়া অরক্ষিত দরজার সিলাব পড়ে মেয়ের মৃত্যুতে দরিদ্র পিতা-মাতা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। আহত দু শিশুর মধ্যে আব্দুল কাদের মাস্টারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। সে আক্তার বিশ্বাসের ছেলে। মাহি একই মহল্লার মনির হোসেনের সন্তান। বাড়ির ভাড়াটে জুয়েল ও তার স্ত্রী সোনিয়াকেও হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিতে হয়েছে।
বাড়ির সদর দরজার ১০ ইঞ্চির ইটের গাথুনির ওপর অতো বড় স্লাব অরক্ষিতভাবে বসিয়ে রাখার কারণেই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়দের এ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বাড়ির মালিকের মন্তব্য জানার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা শেষপর্যন্ত সম্ভব হয়নি। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী।