তিন দিনের হরতালের শেষ দিনে কক্সবাজারে ৩ জন ও মাগুরায় ১ জনসহ নিহত ৫

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: ১৮ দলীয় জোটের টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালের শেষদিন মঙ্গলবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। দেশজুড়ে এ সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত ও চার শতাধিক আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত তিন দিনের হরতালে ১৭ জন নিহত হলেন।

কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় হরতাল শেষে প্রতিবাদ সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে জামায়াত-শিবিরের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জামায়াত-শিবিরের দু কর্মী ও এক টেইলার্সকর্মী নিহত হয়েছেন। তবে জামায়াত দাবি করেছে নিহতের সংখ্যা পাঁচজন। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বড়রিয়া বাজারে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ত্রিমুখি সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারুফ হাসান নামে ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। পুলিশের গুলিতে মারুফ নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলায় আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে ১৮ দলীয় জোট। এছাড়া চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে খালে পড়ে মো. ইসমাইল নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বিএনপির দাবি ইসমাইল তাদের কর্মী। এদিকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে দ্বিতীয় দিনের হরতালের সময় সংঘর্ষে আহত এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে।

জামায়াতের ঢাকা মহানগর সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আযাদ এমপির গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার নিজ গ্রামে হরতাল-পরবর্তী জামায়াতের প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে পুলিশকে নিয়ে উত্তেজিত বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধুরুংবাজার এলাকায় পুলিশ ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হয়েছেন। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জামায়াতকর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পাল্টা গুলি চালায়। এতে ২ জামায়াত কর্মী ও টেইলার্সকর্মীসহ ৩ জন নিহত হন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৫ জন।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, ৬০ ঘণ্টার হরতাল শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্থানীয় জামায়াত ধুরুংবাজারে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সোমবার বাজিতপুর বাজারে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে আহত আওয়ামী লীগ নেতা মো. শের আলী উরফে শের আলী মেম্বার রাত ১১টার দিকে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  সকাল ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে শুরু হয়ে শেখপাড়া বাজার প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে সমাবেশ করে। এ সময় শিবির নেতাকর্মীরা প্রায় দুই ঘণ্টা খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।

লক্ষ্মীপুর পৌর শহরে হরতালে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় যুবদলের পিকেটাররা শাওন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও শাড়ি মহল নামের দুটি প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এছাড়া কচুয়া আলীপুর-রামগঞ্জ সীমান্তবর্তী এলাকায় সড়কে গাছ ফেলে অবরোধ করে রাখার কারণে সংবাদপত্রবাহী মাইক্রোবাস জেলায় পৌঁছতে পারেনি। ঠাকুরগাঁওয়ে সকাল ১১টায় সদর উপজেলার রুহিয়া সড়কের ঢোলারহাটের দোকান খোলাকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ৫০টি দোকানে ভাঙচুর ও পাঁচটিতে আগুন দিয়েছে পিকেটাররা। এ ছাড়া ৫টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা। এতে পথচারীসহ ১৫ জন আহত হন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শহরের রেলগেট এলাকার পূর্ব পাশে একদল হরতাল সমর্থক রেললাইনের ওপর টায়ারে আগুন দিলে পুলিশ এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের টিএ রোড এলাকায় গ্রামীণফোনের কাস্টমার কেয়ারের সামনে ৩/৪টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় পিকেটাররা।