তামিম চৌধুরীসহ পাঁচজন ভারতে ঢুকেছেন?

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীসহ নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) কমপক্ষে পাঁচ জঙ্গি ভারতে ঢুকে পড়েছেন সন্দেহ করা হচ্ছে। ৱ্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (ৱ্যাব) পক্ষ থেকে ভার​তীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা সর্বশেষ তালিকায় ওই পাঁচজনের নাম রয়েছে।

তামিম ছাড়া অন্য চার জঙ্গি হলেন কুমিল্লার জুন্নন শিকদার, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাজিবুল্লাহ আনসারি, লক্ষ্মীপুরের এটিএম তাজউদ্দিন ও নবীনগরের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকি ওরফে সুজিত দেবনাথ।
গত বুধবার বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ভারত সফরের এক দিন আগে এই নামগুলো প্রকাশ্যে আসে। গত বৃহস্পতিবার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সাথে তার বৈঠকে এ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।

২৬ জুলাই র‍্যাব ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী ৬৮ জনের নিখোঁজ তালিকা প্রকাশ করে। তারা সবাই ২০১১ সাল থেকে নিখোঁজ। এর মধ্যে কমপক্ষে পাঁচজন সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। গুলশান হামলার পর বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত থাকা পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে ভারত রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এবার সন্দেহভাজন কমপক্ষে পাঁচজন জেএমবি সদস্যের তালিকা ভারতের হাতে দিয়েছে; যারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে ঢুকেছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। দুই মাস আগে আসাম পুলিশ চিরং জেলায় একটি জেএমবি আস্তানা গুঁড়িয়ে দেয়। সেখানে স্থানীয় যুবকদের প্রশিক্ষণ দিত জেএমবি। কানাডার নাগরিক তামিম গুলশান হামলায়ও জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়। তামিম চৌধুরী বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্থানীয় জঙ্গিদের ব্যানারে আইএসের সাথে সংযোগ স্থাপনের কাজ করে থাকেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বলা হয়, আইএসে তিনি আবু ইব্রাহিম আল-হানিফ নামে পরিচিত এবং গত জুন মাসে আইএসের প্রচারণামূলক ম্যাগাজিন ‘দাবিক’ এ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সূত্রমতে, তিনি ২০১৩ সালে কানাডা ত্যাগ করেছেন এবং এরপর থেকে তাঁকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। কুমিল্লার বাসিন্দা জুন্নন শিকদার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তেন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ পুলিশ সন্ত্রাসবাদবিরোধী আইনে তাকে গ্রেফতার করে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে পুলিশ ২০১৩ সালে তাকে আবারও গ্রেফতার করে। শিকদার জিহাদি গ্রুপের জন্য সদস্য সংগ্রহ করতেন। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে মালয়েশিয়ায় চলে যান। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা নাজিবুল্লাহ আনসারি মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার জন্য মালয়েশিয়া যান। গত বছর চট্টগ্রাম থানায় তাঁর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। আনসারি তার ভাইকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন যে, তিনি আইএসে যোগ দেয়ার জন্য ইরাক যাচ্ছেন। এটিএম তাজউদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়তেন। ২০১৩ সাল থেকে তিনি নিখোঁজ। লক্ষ্মীপুর সদর থানায় তাঁর নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে একটি জিডি করা হয়। মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকি ধর্মান্তরিত মুসলিম। এর আগে তার নাম ছিলো সুজিত দেবনাথ। তিনি জাপানের এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। গত বছর থেকে তিনি নিখোঁজ। তার বাবা জনার্দন দেবনাথ নবীনগর থানায় এ বিষয়ে জিডি করেন।