তত্ত্বাবধায়কের দাবি থেকে সরে দাঁড়ালেন খালেদা

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন চাই

 

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগ জানে, ক্ষমতা থেকে গেলে তারা আর সহজে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। মানুষ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সেজন্য তারা নির্বাচন দিতে চায় না। অবশেষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবি থেকে সরে এলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। নিজের এতোদিনের অনঢ় দাবিতে সংশোধনী এনে এখন তিনি বললেন ‘আমি বলবো না, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হতে হবে। যে নামেই হোক, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আমরা সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন চাই। গতকাল শনিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন তার গুলশান কার্যালয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে একথা বলেন।

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পর পর দুই মেয়াদে প্রায় পাঁচ বছর ধরে আন্দোলন করে আসছেন খালেদা জিয়া। নিজ দাবিতে অটল থেকে তিনি গতবছরের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনও বর্জন করেন। খালেদা জিয়া বলেন, ‘গত তিনটি সিটি নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে, এমনটি নয়। তত্ত্বাবধায়কের অধীনে না হলেও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে। তাহলে দেশের মানুষ ভোট দেয়ার সুযোগ পাবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জানে, ক্ষমতা থেকে গেলে তারা আর সহজে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। মানুষ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সেজন্য তারা নির্বাচন দিতে চায় না। বিএনপি চেয়ারপারসন অভিযোগ করেন, সরকার একদলীয় শাসন কায়েম করতে চায়। জোর করে ৱ্যাব-পুলিশ দিয়ে বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। জোর করে ক্ষমতায় থাকলে এর পরিণতি ভালো হয় না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য বিএনপিসহ সব দলকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বিএনপিকে শেষ করা যাবে না। বিএনপির ‘রুট’ মানুষের মনে। যতদিন এ ‘রুট’ থাকবে ততদিন বিএনপি টিকে থাকবে।

খালেদা জিয়া আরও অভিযোগ করেন, দেশে রাজনৈতিক কর্মকা্ল সম্পূর্ণ বন্ধ। বিরোধী পক্ষকে মিটিং মিছিল করতে দেওয়া হচ্ছে না। দেশকে কারাগারে পরিণত করা হয়েছে। এতে শুধু বিএনপি বা ২০ দলের নয়, সারা  দেশেরই ক্ষতি হচ্ছে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সদস্যদের উদাহরণ দিয়ে বলেন, এ আইনজীবীরাও নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু যারা দেশের ক্ষমতায়, তারাই অনির্বাচিত। তারা দেশকে শেষ করে দিচ্ছে।

মতবিনিময় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি আবদুল মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।