ঢাকা মুন্সীগঞ্জে নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান ভোটদানে কেউ বাধা দিলে সেখানেই প্রতিরোধ করুন

স্টাফ রিপোর্টার: ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদানে কেউ কোথাও বাধা দিতে এলে তাদের সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জামায়াত আসতে পারবে না, সেই শোকে বিএনপি নেত্রী নিজেই নির্বাচনে অংশ নেননি। তিনি নির্বাচন বানচালের হুকুম দিয়েছেন। জনগণকে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচন। সেই নির্বাচনে আপনারা সকলে অংশগ্রহণ করবেন। ভোট দেবেন। কেউ যদি বাধা দিতে আসে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। যাতে আপনাদের অধিকারে কেউ বাধা দিতে না পারে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং কলেজমাঠ ও শ্রীনগর স্টেডিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত পৃথক দুটি নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে গতকাল সকালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার শহীদ মিনার চত্বরে আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী কর্মীসভায়ও শেখ হাসিনা নির্বাচন বানচালের চেষ্টাকারীদের প্রতিহত করতে একই রকম আহ্বান জানান। লৌহজং কলেজমাঠে জনসভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী জামায়াতকে সাথে নিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য সব বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি ক্ষমতায় থাকতে মেলা টাকা কামাই করে রেখেছেন। এখন অবরোধ ডেকে ঘরে বসে টিভি দেখেন, মুরগির স্যুপ খান, রোস্ট চিবান। আর গরিব মানুষ ভাতে মরে।

প্রধানমন্ত্রী গত বিএনপি-জামায়াত সরকারের নানা ঘটনা তুলে ধরে বলেন, তারা বাংলাদেশকে জঙ্গি, দুনীর্তিবাজ ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন। কারণ বিএনপি নেত্রীর তো জন্ম বাংলাদেশে নয়। তিনি ভারতের শিলিগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেছেন। তাই বাংলাদেশের প্রতি তার দয়ামায়া নেই। আর জামায়াতের মূল (শেকড়) হচ্ছে পাকিস্তানে, যারা এ দেশে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। তাই তারা বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে একজন সাধারণ লোক যে টাকা কামাই করতো তা দিয়ে ২ থেকে তিন কেজি চাল কেনা যেতো। আর আজকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একজন দিনমজুর যা কামাই করে তা দিয়ে ৮ থেকে ১০ কেজি চাল কিনতে পারে। সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। শ্রমিকদের বেতন আমরা বাড়িয়েছি। কৃষকদের জন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা করেছি। শিক্ষাকে আমরা গুরুত্ব দেই। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭৮ লাখ ৭০ হাজার ১২৯ জন ছাত্রছাত্রী বৃত্তি পাচ্ছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে ৪০ লাখ ছাত্রছাত্রী বৃত্তি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ফান্ড গঠন করেছি। সেই ফান্ড দিয়ে ডিগ্রি পর্যন্ত মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছি। বিদ্যুত পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিলো। সেই বিদ্যুত সমস্যা সমাধান করেছি। ৩ হাজার ২শ মেগাওয়াট বিদ্যুত পেয়েছিলাম। এখন ১০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুত আমরা উত্পাদন করতে সক্ষম হয়েছি। বন্ধ শিল্প কারখানা আমরা চালু করেছি। সরকারি-বেসরকারি মিলে এক কোটির বেশি যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেক ইউনিয়নে ইন্টারনেট সার্ভিস চালু হয়েছে। যে ইন্টারনেট সার্ভিস তথ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। লৌহজং কলেজ মাঠে আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফকির মো. আব্দুল হামিদ। মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলির সমর্থনে বিশাল এই জনসভায় সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী সুকুমার রঞ্জন ঘোষের সমর্থনে শ্রীনগর স্টেডিয়ামে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে সুকুমার রঞ্জন ঘোষ নিজেই সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য রাখেন সিরাজিদিখান উপজেলা চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহম্মেদ, শ্রীনগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সেলিম আহম্মেদ ভূইয়া, শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম সোহরাব হোসেন, গোলাম সরওয়ার কবির প্রমুখ।