ঢাকা মিরপুর থেকে চার যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানী ঢাকার মিরপুরের পৃথক দুটি এলাকা থেকে চার যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে একজন পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। গতকাল রোববার গভীর রাতে প্রায় একই সময়ে মিরপুরের কাজীপাড়া বাইশবাড়ী ও টেকনিক্যাল মোড় এলাকায় ঘটনা দুটি ঘটে। এর মধ্যে একজনের পরিচয় মিললেও তিনজন এখনো অজ্ঞাত। তাদের লাশ মর্গে রয়েছে। পুলিশ দাবি করেছে, দুর্বৃত্তদের পিটুনি ও গুলিতে অপর তিনজন নিহত হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের অবরোধ-হরতালের মধ্যে  তারা নাশকতার চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মিরপুর মডেল থানার এসআই মাসুদ পারভেজ জানান, খবর পেয়ে রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাজীপাড়ার বাইশবাড়ী এলাকার একটি গলিতে তিন যুবককে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদেরকে সাথে সাথে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থলে ৪ লিটার পেট্রোল ও ৪টি ককটেল পাওয়া গেছে। হয়তো তারা নাশকতার চেষ্টা করেছিল। তিনি আরো জানান, নিহত তিন যুবকের শরীরে ১০-১২টি করে গুলির চিহ্ন রয়েছে। উদ্ধারের সময়ও তাদের শরীর রক্তাক্ত ছিলো।

স্থানীয় লোকজনের বরাদ দিয়ে মাসুদ পারভেজ বলেন, তারা রাতে অনেক গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন। তবে ভয়ে কেউ বের হননি। নাশকতার চেষ্টাকালে স্থানীয় জনতার গণপিটুনিতে ওই তিন যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করা হয়েছে।

অপর ঘটনাটি ঘটেছে মিরপুরের টেকনিকেল মোড়ে। পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ওয়াদুদ ব্যাপারী নামে এক যুবক। মিরপুর মডেল থানার ওসি সালাউদ্দিন আহম্মেদ জানান, টিএসসিসহ রাজধানীর একাধিক জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় শ্রমিক দল কর্মী ওয়াদুদকে আটক করা হয়েছিল। শ্রমিক দলের আরেক নেতা রাসেলসহ তার অন্য দুই সহযোগীকে আটকের জন্য রবিবার রাত ১টার দিকে ওয়াদুদকে নিয়ে অভিযানে গেলে টেকনিক্যাল মোড়ে তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ওয়াদুদ আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিত্সকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ওয়াদুদের বাবা আব্দুল আলী ব্যাপারী অভিযোগ করেন, তার ছেলে কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলো না। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত কোন তথ্য নেই। পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে হত্যা করেছে।

সুরতহাল প্রতিবেদন: গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দীপ্তিময়ী জামানের উপস্থিতিতে মিরপুর থানার দুই এসআই ওই চার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। সুরতহাল প্রতিবেদনে নিহতদের শরীরে গুলির ক্ষতচিহ্ন উল্লেখ করা হয়েছে। অপর তিনজনের মধ্যে ২০ বছর বয়সী অজ্ঞাত এক যুবকের শরীরে রয়েছে ২২টি গুলির চিহ্ন। ১৯ বছর বয়সী যুবকের শরীরে ১৯টি গুলি লাগে। এছাড়া অজ্ঞাত অপর ২০ বছর বয়সী যুবকের শরীরে রয়েছে ১৭ গুলির চিহ্ন।