ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর মেডিকেলে ভর্তিযুদ্ধেও চুয়াডাঙ্গার শিক্ষার্থীদের অনুপম সাফল্য

আব্দুস সালাম: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর সরকারি মেডিকেলে ভর্তিযুদ্ধেও চুয়াডাঙ্গার শিক্ষার্থীরা সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে। অতীত রেকর্ড ভেঙে এবার চুয়াডাঙ্গার ১৭ জন শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। এর মধ্যে একজন রয়েছে অপেক্ষামান তালিকায়। তাও আবার সুবিধাজনক। তবে মেহেরপুরের শিক্ষার্থীরা মেডিকেলে ভর্তিযুদ্ধে চুয়াডাঙ্গার তুলনায় হতাশ করেছে। মেহেরপুরের দুজন শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জনের খবর পাওয়া গেছে।

২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল গতকাল রোববার প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় প্রথম স্থানে উঠে আসা প্রার্থীর স্কোর ১৮১ দশমিক ৫০। আর সর্বনিম্ন স্কোর ১৫৮ দশমিক ২৫। গত শুক্রবার সারাদেশের ২৩টি পরীক্ষাকেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর এমবিবিএস-বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় ৬৬ হাজার ৯৮৭ জন অংশ নিয়ে পাস করে ২২ হাজার ৭৫৯ জন। পরীক্ষায় পাসের হার ৩৪ শতাংশ। রাজধানীর স্বাস্থ্য অধিদফতরের মিলনায়তনে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক আনুষ্ঠানিকভাবে গতকাল ফল ঘোষণা করেন। সারাদেশের ২৯টি সরকারি মেডিকেল কলেজে মোট ৩ হাজার ৬৯৪টি ও সরকারি ডেন্টাল কলেজ ও ইউনিটে ৫৩২টি আসনের বিপরীতে মোট ৬৯ হাজার ৪৭৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী ভর্তি পরীক্ষায় চুয়াডাঙ্গার ১৭ জন শিক্ষার্থী যোগ্যতা অর্জন করেছে। এর মধ্যে একজন রয়েছে সুবিধাজনক অপেক্ষামান তালিকায়। বাকি ১৬ জন মেধার ভিত্তিতে সরাসরি ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। এর মধ্যে একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজে মেধার ভিত্তিতে সরাসরি ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে সকলকে তাক লাগিয়েছে। সে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা আজিমপুরের ডা. তারিকুল আলম ও ডা. হোসনা জারী তহমিনা আঁখির একমাত্র ছেলে। নাম আহনাফ আদীব অর্ক। মেধা তালিকায় অর্ক হয়েছে ১০২ তম। তার স্কোর ১৭২ দশমিক ২৫।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে চুয়াডাঙ্গা সিঅ্যান্ডবিপাড়ার আব্দুর রহমান ও জুলেখা রহমানের মেয়ে রুকাইয়া খাতুন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন ইলার উদ্দীন ও সামছুন নাহার বেগমের ছেলে সজিব আহমেদ। রংপুর মেডিকেলে কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে দুজন। একজন আলমডঙ্গা ভেদামারী গ্রামের কামাল হোসেন ও মার্জিনা খাতুনের ছেলে সালমান তানভির তিতাস। অপরজন চুয়াডাঙ্গা ফুলবাড়ি গ্রামের সামছুল হক ও মমতাজ বেগমের ছেলে মুজিবুল ইসলাম। খুলনা মেডিকেলে চুয়াডাঙ্গা মাঝেরপাড়ার রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার ইকু ও নাছিমা বেগমের মেয়ে রাইছাতুজ জাহান লুবা ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে যে দুজন ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা হলো চুয়াডাঙ্গা সরোজগঞ্জের আব্দুল মতিন ও জেসমিন আক্তারের ছেলে মুশফিকুর রহমান শোভন এবং ভালাইপুর মোড়ের গিয়াস উদ্দীন ও রাশিদা খাতুনের ছেলে তরিকুল ইসলাম।

পাবনা মেডিকেলে জীবননগর কোর্টপাড়ার আব্দুল ওয়াহেদ বিশ্বাসের মেয়ে ফারহানা ইয়াসমিন ইভা, কুষ্টিয়া মেডিকেলে আলমডাঙ্গা রুইতনপুরের পরিমল কুমার ধর ও শ্যামলী ধরের ছেলে প্রশান্ত কুমর ধর এবং পাঁচকমলাপুরের সানোয়ার হোসেন ও আনজিরা খাতুনের ছেলে রাগবীর হোসেন রয়েল ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। মানিকগঞ্জ মেডিকেলে চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালপাড়ার ডা. তরুণ কান্তি ঘোষ ও কৃষ্ণা বোসের মেয়ে নীলাঞ্জনা ঘোষ, নোয়াখালী মেডিকেলে সিনেমাহলপাড়ার ইছাহাক আলী ও রওশন আরার মেয়ে কামরুন্নাহার মেরিন, পটুয়াখালী মেডিকেলে কানু কুমার বিশ্বাস ও চম্পা রাণী বিশ্বাসের মেয়ে সোনাপতি রাণী বিশ্বাস, রাজশাহী ডেন্টাল কলেজে দর্শনা রাঙ্গিয়ারপোতার তসলিমুর রহমান ও জুবাইদা খাতুনের মেয়ে জাকিয়া আফসারী চাঁপা এবং বরিশাল ডেন্টালে আলমডাঙ্গা মুন্সিগঞ্জ গড়চাপড়ার মিজানুর রহমান ও রুনা লাইলার ছেলে আব্দুল্লাহ-আল-মামুন ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। এছাড়াও সুবিধাজনক অপেক্ষমান তালিকায় রয়েছে চুয়াডাঙ্গা সিনেমাহলপাড়ার বিশ্বনাথ কর্মকার ও প্রতিমা কর্মকারের মেয়ে অদিতি কর্মকার।

এদের মধ্যে রুকাইয়া, সজিব, তিতাস, লুবা ও শোভন পুরাতন ব্যাচের শিক্ষার্থী। বাকি সকলেই ২০১৩-১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী। নীলাঞ্জনা, মেরিন ও চাঁপা ক্যাডেট কলেজ, ইভা জীবননগর ডিগ্রি কলেজ ও মামুন নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী। বাকি ১২ জন শিক্ষার্থী চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মেহেরপুরের যে দুজন শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা হলো দারিয়াপুর শালিকা গ্রামের আব্দুল আওয়াল ও মেরিনা পারভীনের ছেলে আশিকুজ্জামান মুন্ন এবং মল্লিকপাড়ার নজরুল ইসলাম ও শাহানারা খাতুনের ছেলে এসএম তমাল।

উল্লেখ্য, সরকারি মেডেকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তির জন্য জাতীয় মেধার ৮০% এবং জেলা কোটায় ২০% প্রার্থী নির্বাচন করা হয়।