ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়ার পর যশোরে লাশ মিললো ঝিনাইদহের সেই মাদরাসা শিক্ষকের

 

স্টাফ রিপোর্টার: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার এক মাস ছয় দিন পর ঝিনাইদহের মাদরাসা শিক্ষক আবু হুরাইরা মালিথার (৫৫) লাশ মিলেছে যশোরে। গতকাল সোমবার সকাল ৮টার দিকে যশোরের চৌগাছা সড়কের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে যশোর কতোয়ালি থানা পুলিশ অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি উদ্ধার করে। সোমবার সন্ধ্যায় যশোর হাসপাতালমর্গে লাশটি আবু হুরাইরার বলে তার ভাই আব্দুল খালেক মাস্টার শনাক্ত করেন। কুঠিদুর্গাপুর দাখিল মাদরাসা শিক্ষক আবু হুরাইরা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার অশ্বস্থলী গ্রামের মৃত আশির উদ্দীন মালিথার ছেলে।
যশোর কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন জানান, সোমবার সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে কে বা কারা যশোর আড়াইশ বেডে ভর্তি করে রেখে যায়। সেখানে তার মৃত্যু হয়। তিনি আরও জানান, মৃত ব্যক্তির সারা গা ছুলে গেছে। হয়তো সড়ক  দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। তারপরও মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।

শিক্ষক আবু হুরাইরার বড় ভাই আব্দুল কাদের জানান, গত ২৩ জানুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার শৈলমারী বাজার সংলগ্ন কুঠিদুর্গাপুর দাখিল মাদরাসা থেকে আবু হুরাইরা মালিথকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে শাদা পোশাকের লোকজন তুলে নিয়ে যায়। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। সদর থানায় জিডি করতে গেলে জিডি না নিয়ে পুলিশ তাকে খোঁজ করতে পরামর্শ দেয়। পারিবারিকভাবে জানানো হয় আবু হুরাইরাকে জীবিত পেতে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে টাকাও দেয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আবু হুরাইরাকে হত্যার পর সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে তার স্ত্রী অভিযোগ করেন। কুঠিদুর্গাপুর মাদরাসা সুপার শরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনার দিন সকাল ১০টার দিকে আবু হুরাইরা মাদরাসা ক্লাস নিচ্ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলযোগে কয়েকজন শাদা পোশাকে লোক এসে জানান, তারা বৃহত্তর যশোর থেকে এসেছেন এবং ডিবি পুলিশের লোক। ডিবি পুলিশের পরিচয় শুনে আবু হুরাইরা তাদের সাথে চলে যান।
ডিবি পরিচয়ে শিক্ষক আবু হুরাইরাকে নিয়ে যাওয়ার পর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও তার পরিবারের লোকজন এক মাসেরও বেশি সময় কোথাও তাকে খুঁজে পায়নি। ঝিনাইদহ ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমএ হাসেম খান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ আগেই সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আবু হুরাইরা নামে তারা কাউকে আটক করেননি বা এমন কোন তথ্য পুলিশের কাছে নেই।

উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি কালুহাটি গ্রামের বেলেখাল বাজারে ধর্মান্তরিত সমির নামে এক হোমিও চিকিৎসক খুন হয়। এ ঘটনার পর থেকে গান্না ইউনিয়নের অশ্বস্থলী ও কালুহাটিসহ বিভিন্ন গ্রামে পুলিশ পরিচয় দিয়ে শাদা পোশাকের লোকজনের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে।