ডা. মিজানুরের চাকরি মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে সাময়িক বরখাস্ত : চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন হচ্ছেন ডা. আব্দুল আজিজ

 

সরকারি ওষুধ চুরি ও খুলনায় কথিত প্রেমিকা সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের মামলা : বিভাগীয় তদন্তের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. খন্দকার মিজানুর রহমানের চাকরি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করার পাশাপাশি তাকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত পত্রে এ আদেশ দেয়া হয়। চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন হিসেবে রাজশাহী ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল আজিজকে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন হিসেবে বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. খন্দকার মিজানুর রহমান গত বৃহস্পতিবার ট্রেনযোগে খুলনায় গিয়ে খুলনা নগরীরইকবালনগরের করিমাবাদ কলোনির একটি বাসায় তার কথিত প্রেমিকসহ গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় প্রচুর পরিমাণের সরকারি ওষুধ। পরদিন শুক্রবার ডা. খন্দকার মিজানুর রহমান ও তার কথিত প্রেমিকা সাবিনা ইয়াসমিনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। অনৈতিক কাজ ও সরকারি ওষুধ চুরির দুটি মামলায় খুলনা মেট্রোপলিটন হাকিমের আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন। গতকাল রোববার জামিনের আবেদন করা হয়।

অপরদিকে ডা. খন্দকার মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন পদ থেকে তাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ওএসডি করা হয়। একই সাথে তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু প্রক্রিয়ার প্রেক্ষিতে মিজানুর রহমানকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিভাগীয় তদন্তে ওষুধ চুরির বিষয়টিকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে বলে প্রাথমিকভাবে মন্ত্রণালয়সূত্র জানিয়ে বলেছে, ডা. মিজানুর রহমান সিভিল সার্জন হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার যাবতীয় দুর্নীতির বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হতে পারে। ওষুধ চুরির সাথে কারা কীভাবে জড়িত তাও খতিয়ে দেখবে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার জানান, নগরীরইকবালনগরের করিমাবাদ কলোনির একটি বাসায় বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জন এবং ওইনারী অনৈতিক কাজে লিপ্ত হলে তাদের আটক করা হয়।আটক সাবিনা ইয়াসমিন নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দেন। তবে আইনজীবী সমিতির সভাপতিঅ্যাডভোকেট মাসুদ হোসেন রনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই নারী তাদের সমিতির সদস্যবা আইনজীবী নন।সহকারী পুলিশ কমিশনার আরওজানান, আটক ওই নারী অবিবাহিত। ডা. মিজান ও ওই নারীর মোবাইলে পরস্পরেরমধ্যে আপত্তিকর ম্যাসেজ আদান-প্রদানের প্রমাণও পাওয়া গেছে।আটক সিভিল সার্জন ডা. খন্দকার মিজানুর রহমান পুলিশকে বলেন, ওই নারী তাররোগী ছিলেন। আর চিকিৎসাসূত্রেই তাদের মধ্যে প্রেমসর্ম্পক হয়।

অভিযানে বিক্রি নিষিদ্ধ কিছু সরকারি ওষুধও উদ্ধার করে পুলিশ। এর কিছুওষুধ ডা. মিজান নিজের ব্যবহারের জন্য এনেছিলেন। কিছু ওষুধ ওই নারীর বাসাথেকেও উদ্ধার করা হয়েছে।আটকের পর ডা. মিজান ও সাবিনা ইয়াসমিনকে রাতে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করাহয়। শুক্রবার সরকারি ওষুধ বাইরে বিক্রির অভিযোগে ডা. মিজানের বিরুদ্ধে একটিমামলা আর অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে উভয়ের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলাদায়ের করা হয়। সিভিল সার্জন ডা. খন্দকার মিজানুর রহমানের বাড়িখুলনার টুটপাড়ায়। তিনি প্রতি বৃহস্পতিবার ট্রেনযোগে করিমাবাদ কলোনিতে ওইনারীর সাথে সময় কাটাতে খুলনায় যেতেন।