ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের দাবিতে মানববন্ধন

 

 

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের বারোবাজারে ট্রেনের ধাক্কায় বরযত্রী বাসের আহতদের আরো একজনের মৃত্যু

 

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের বারোবাজার রেল ক্রসিঙেট্রেনের সাথে সংঘর্ষে বরযাত্রী বাসের আরো এক যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এ দিয়ে নিহতের সংখ্যা দাড়ালো ১২ জনে। তিনি ছিলেন কলেজ শিক্ষক। অপরদিকে ট্রেন দুর্ঘটনার প্রতিবাদে হতাহতদের পরিবার ও এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। এ সময় তারা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানান। শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামবাসী এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।

গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জেলা শহরের পোস্টঅফিস মোড়ে ঘণ্টাব্যাপি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে ফুলহরি গ্রামের জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সমাজকর্মী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষার্থীরাসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেয়। এ সময় বিভিন্ন দাবি সংবলিত প্লাকার্ড বহন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে স্থানীয় মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ, শিক্ষক শংকর কুমার কুণ্ডু, নয়ন গোপাল, লক্ষণ সাহা, তাপস বাগচী, অনুপ বাগচী, তন্ময় কুমার কুণ্ডু, হাফেজ হাদিউর রহমান, কাউন্সিলর ফারুক হোসেন, আশরাফুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেনসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধন চলাকালে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা দুর্ঘটনার জন্য গেটম্যান না থাকা অনিরাপদ রেল ক্রসিংকে দায়ী করেন। তারা হতাহতের পরিবারের জন্য শোক প্রকাশ করে আর্থিক সহযোগিতা দেয়া ও যাদের দায়িত্ব অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তাদের শাস্তির দাবি জানান। অন্যথায় আরো বৃহত্তর কর্মসূচি দেয়া হবে।

ফুলহরি ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ বিশ্বাস বলেন, দুর্ঘটনায় আহত ৪০ জন ঝিনাইদহ, ঢাকা ও যশোরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য উপযুক্ত অর্থ নেই। দুর্ঘটনায় ২২ জন পঙ্গু হয়েছেন। কলেজ শিক্ষক রিপন কুমার সাহা ও মিঠুন সাহা লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। টাকার অভাবে তাদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে।গত শুক্রবার ঝিনাইদহের বারোবাজার রেল ক্রসিঙে ট্রেনের সাথে বরযাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ১১ জন নিহত ও ৪০ জনের বেশি মানুষ আহত হন। আহতদের অধিকাংশই এখন হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে লড়ছেন।

           অপরদিকে ঝিনাইদহের বারোবাজারে ট্রেন-বাস সংঘর্ষে আহত এক কলেজ শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার ৫ দিন পর গতকাল বুধবার বিকেলে ঢাকার সোহরাওয়ার্দ্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত রিপন সাহা (২৮) ভাটই বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক। তিনি শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামের মৃত্যু কার্তিক চন্দ্র সাহার ছেলে। এ নিয়ে এই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১২ জনে। এদিকে রিপন সাহার মৃত্যুর খবরে শোকে স্তব্ধ ফুলহরি গ্রামের মানুষের কান্না থামছে না।

পয়লা আগস্ট শুক্রবার বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে ৭০ জন বরযাত্রী নিয়ে ওই বাস কালীগঞ্জের সাকো মথুনপুর থেকে শৈলকুপার ফুলহরি গ্রামে যাচ্ছিলো। ভোর সাড়ে ৩টার দিকে বারোবাজার রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় সৈয়দপুর থেকে খুলনাগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেন বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ১১ জন নিহত ও ৪০ জনের বেশি মানুষ আহত হন।